খুবই সাধারণ পেশার নিম্নবিত্ত মানুষ এক দিন হঠাৎ জানতে পারলেন, কোনো এক জাদুবলে তারা এখন বিভিন্ন সংস্থার ডিরেক্টর!
তাদের পেশা ছিল রান্নাবান্না, বাগানে কাজ করা অর্থাৎ মালি, পিয়ন আবার কেউ গাড়িচালক। তবে তারা এখন বিভিন্ন সংস্থার ডিরেক্টর বা পরিচালক সেটা শুধু কাগজে-কলমে। এমন আকস্মিক ‘ভাগ্যোন্নতি’র পিছনের রহস্য তারাও জানেন না।
ভারতের কলকাতায় এসএসসি বা স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) অভিযান শুরু করার পরে শোরগোল পড়ে যায়।
তখনই সেই নিম্ন আয়ের মানুষ সাংবাদিক এবং সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকে জানতে পারেন যে তারা বিভিন্ন সংস্থার পরিচালক। তাদের কথা তুলে ধরে স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির মামলার চার্জশিটে এমনই দাবি করেছে ইডি।
সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে পেশ করা সেই চার্জশিটে বহু ব্যক্তির বয়ান তুলে ধরা হয়েছে। এই মামলায় অভিযুক্ত কলকাতার প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তার বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়।
চার্জশিটে কল্যাণ ধর নামে এক ব্যক্তির বয়ান তুলে ধরেছে ইডি। ইডি-র দাবি, বয়ানে কল্যাণ জানিয়েছেন, তাঁর শ্যালিকা অর্পিতা তাঁকে গাড়ির চালক হিসাবে নিযুক্ত করেছিলেন। কিন্তু অর্পিতার সঙ্গে তাঁকেও যে ‘ইচ্ছে এন্টারটেনমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড’, ‘সেন্ট্রি ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেড’ এবং ‘সিম্বায়োসিস মার্চেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড’-এর ডিরেক্টর বানানো হয়েছে, তা তিনি জানতেন না। অর্পিতার নির্দেশে না পড়েই নানা কাগজ পত্রে সই করেছেন তিনি। চার্জশিটে ইডির জানিয়েছে, ‘অপা ইউটিলিটি সার্ভিস’ সম্পর্কেও তাঁর কিছু জানা নেই বলে জানিয়েছেন কল্যাণ।
ইডির করা চার্জশিটে বিভিন্ন ব্যক্তির নাম রয়েছে। চার্জশিট অনুযায়ী সেই সব লোকের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের বয়ান রেকর্ড করেছেন তদন্তকারীরা। চার্জশিটে ইডির আরও উল্লেখ করেছেন, অনেককে বিভিন্ন সংস্থার পরিচালক বানানো হয়েছে তাদের না জানিয়ে। না-পড়েই বিভিন্ন নথিতে সই করতেন অনেকে। বিভিন্ন নথির পাশাপাশি সাদা কাগজেও সই করতে বলা হত। তবে ওই সংস্থার অফিসে কোনও দিন যাননি কেউ কেউ।
নফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) চার্জশিটের পাতায় উঠে এসেছে পার্থ-অর্পিতার সম্পর্কের নানা দিক।