বছর ঘুরে আবার এসেছে সনাতন ধর্মের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। ষষ্ঠী থেকে দশমী- এই পাঁচটি দিনের প্রতিদিনই নিজেকে সাজানো যাবে মনভরে। পাঁচ দিনব্যাপী উৎসবে যারা যোগ দিতে চাচ্ছেন, প্রতিটা দিনেই ভিন্ন ভিন্ন সাজে নিজেকে দেখার সুযোগ থাকে এই পূজার উৎসবে। তাই প্রত্যেক সাজে ঘুরেফিরে সেই একই রূপে না থেকে নিজেকে সাজাতে পারেন ভিন্ন ভিন্ন ধাঁচে।
দেশি কিংবা পাশ্চাত্য ঢংয়ে, পোশাকের রঙে, প্রসাধনে, সবকিছুতে ভিন্নতার ছোঁয়া থাকা চাই পূজার প্রতিটি দিন।
তবে সাজের ক্ষেত্রে স্বাচ্ছন্দ্য, রুচি এবং ব্যক্তিত্বের সঙ্গে মিলিয়ে পোশাক বেছে নিতে হবে। শাড়ি পরার দারুণ এক উপলক্ষও বটে দূর্গা পূজার সময়টা। পূজার উৎসবে শাড়িতে নারীর পাঁচ দিনের সাজ নিয়েই আজকের এই আয়োজন।
ষষ্টীর স্নিগ্ধ রূপ
ষষ্ঠী পূজার দিনে হালকা প্রসাধনীতে ছিমছাম সাজ মানিয়ে যাবে বেশ। পোশাকেও হালকা রঙের ভেতরে তাঁতের শাড়ি বেশ ভালো মানিয়ে যাবে। শরতের ঝকঝকে আকাশে আর কাশফুলের এই নরম আমেজে উজ্জ্বল কিন্তু মিষ্টি রঙের রাঙাতে পারেন নিজেকে। তবে বৃষ্টির কথা মাথায় রেখে নরম সুতি বা জর্জেট পরতে পারেন। শরতের বাতাসে হালকা মেজাজের সাজের সাথে খোলা চুলের দারুণ মানাবে। সাথে গলায় সাদা মুক্তোর মালা, চুলে বেলি বা চাঁপাফুল আর হাতে এলোমেলো চুড়ির দল, কপালে ছোট্টে একটি কালো টিপ এনে দিতে পারে নতুন মাত্রা।
সপ্তমীর ঝলমলে সাজ
আগের দিনটা হালকা রঙা সাজের আমেজ এবার বদলে নিন সপ্তমীর ঝলমলে সাজে। লাল, বাসন্তী, সবুজ, টিয়া, হলুদ বা কমলা যেকোন উজ্জ্বল একটি রঙের কাজ করা পাড়ওয়ালা এক রঙা শাড়ি আর প্রিন্টের ব্লাউজে চমৎকার মানিয়ে যাবে আপনাকে। আগের দিন চুল ছাড়া থাকলে সপ্তমীতে চুল খোপা করে ফুল গুজে দিতে পারেন। বড় ঝোলা দুল বা ঝুমকো পরলে ব্যালেন্সের জন্য গলা খালি রাখতে পারেন, আর হাতে পরতে পারেন শাড়ির সাথে মিলিয়ে চুড়ি।
অষ্টমীর মিষ্টি সাজ
অষ্টমীতে যে রঙের শাড়িই পরুন না কেন, উৎসব উৎসব ভাব ছাড়া ঠাকুর দেখতে যাওয়া কী চলে? অষ্টমীতে গাঢ় রংয়ের শাড়ি ও পোশাক বেছে নেওয়া উচিত। লাল, মেরুন, তসর, সিল্ক, কাতান অথবা সাদার-লাল পাড় শাড়ি পরতে পারা যেতে পারে এদিনে। আঁচলে ভারি কাজ আছে এ রকম লাল পাড়ের শাড়ি এক প্যাঁচ করে পরলে ভালো দেখাবে। তবে উৎসব মানেই যে জমকালো পোশাক পরতে হব তা নয়। হ্যান্ডলুমের মোলায়েম ধাঁচের শাড়িও পরতে পারেন। সঙ্গে অবশ্যই মানানসই গয়না যেন থাকে। চুল পরিপাটি করে বেঁধে রাখতে পারেন কিংবা খোলা। গয়না, চুলে ঝুমকো দেয়া কাঁটা এবং নাকফুল বা নথ আরো নজরকাড়া করবে আপনার সাজ।
নবমীর উচ্ছ্বল রূপ
নবমীর দিনে যেহেতু অনেক নিমন্ত্রণ থাকে, এদিনের সাজটা হতে হবে জমকালো সাজ যাতে উৎসবের ভাবটুকু ফুটে ওঠে ষোলোআনা। অনেক দিনের তুলে রাখা গোলাপি জামদানিটা কিংবা গাড় সবুজ রঙের সিল্কের শাড়িটা কিংবা নীল রঙের ভারি কাতানটি পরে ফেলুন এবারেই। জমকালো শাড়িতে প্রসাধনতাও ভারী হোক, সাথে ভারী গয়না সাজে নিয়ে আসবে আভিজাত্য। চুলটা টেনে টাইট করে একটি খোপা করতে পারেন, গুজে দিতে পারেন কিছু জারবেরা।
দশমীর বিদায়ী সাজ
দেবী বিদায়ের মাধ্যমেই ৫ দিনব্যাপী উৎসবের সমাপনী আয়োজন হয় দশমীতে। সাজের ক্ষেত্রে এই দিনে লাল পেড়ে সাদা শাড়ির সাথে জরির পাড়, এক রঙা ব্লাউজ আদর্শ হতে পারে। বিসর্জনের দিনের সাজে হালকা সোনার গয়না বেশ মানানসই। চোখে ভারী কাজল, কপালে লাল টিপ আর খোলা চুলে দেবী হয়ে উঠবেন। এভাবেই নানা বর্ণে, ঢঙে, গড়িমায় এবং প্রসাধনে নিজেকে রাঙিয়ে তুলতে পারেন ৫ দিনব্যাপী উৎসবে।