ইরানের নীতি পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থায় মারা যান ২২ বছরের কুর্দি তরুণী মাশা আমিনি। তাঁর মৃত্যুতে দেশটিতে বিক্ষোভের আগুন জ্বলে উঠে। মারাও যান অনেকেই। এবার ইরানের পুলিশের বিরুদ্ধে মাশা আমিনিকে গ্রেপ্তারের অভিযোগে গ্রেপ্তার এবং হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেছে।
মাশা আমিনির পরিবারের আইনজীবী স্থানীয় সময় আজ বুধবার মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মামলার আইনজীবী সালেহ নেকবখত বলেছেন, ‘তাঁর (মাশা আমিনি) পরিবার তাঁদের মেয়েকে যেসব পুলিশ কর্মকর্তা গ্রেপ্তার করেছিল এবং যে কর্মকর্তা গ্রেপ্তারের পর তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।’
এদিকে, মাশা আমিনির মৃত্যুর পর দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভে এখনো পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে নরওয়েভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর)।
ইরান হিউম্যান রাইটসের পরিচালক মোহাম্মদ আমিরি–মোগাদ্দাম এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমরা এই ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সিদ্ধান্তমূলক এবং ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদকারীদের হত্যা ও নির্যাতন বন্ধের লক্ষ্যে বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘ভিডিও ফুটেজ এবং আমাদের কাছে আসা মৃত্যু সনদগুলো থেকে দেখা গেছে যে, মিছিলে সরাসরি বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছে।’
গত ১৩ সেপ্টেম্বর পোশাকবিধি না মানার অভিযোগে মাশা আমিনিকে তেহরান থেকে গ্রেপ্তার করেছিল ইরানের নীতি পুলিশ (মোরালিটি পুলিশ)। তিন দিন পর শুক্রবার হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। অভিযোগ উঠেছে, পুলিশের নির্যাতনের কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এরপর শুরু হয় বিক্ষোভ।
ইরান হিউম্যান রাইটস বলেছে, ইরানের অন্তত ৮০টি শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, রাজধানী তেহরানের আশপাশের শহরগুলোতে বিপুলসংখ্যক মানুষ জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করছেন। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সংঘর্ষ হয়েছে। এর আগে সরকার-সমর্থকেরাও সমাবেশ করেছে। ইরান সরকার বিক্ষোভকারীদের জমায়েত ঠেকাতে তেহরানে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দিয়েছে।