ইরানে হিজাব আইন ও পুলিশ হেফাজতে তরুণীর মৃত্যুর প্রতিবাদে জোরালো হচ্ছে বিক্ষোভ। আন্দোলনকারীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছে দেশটির চলচ্চিত্র কর্মীসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা। তারপরও বিক্ষোভ দমনে আরও কঠোর অবস্থানে নিরাপত্তাবাহিনী। বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকার বিরোধী এই বিক্ষোভের ফলে আইনের কিছু সংস্কার আসলেও ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরানের নীতি কাঠামোয় কোনো পরিবর্তন আসবে না।
১৯৭৯ সালে ইসলামী বিপ্লবের মধ্য দিয়ে ইরানে ক্ষমতায় আসে আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। চালু করেন কঠোর শরিয়া আইন। গেল ৪ দশকে অনেকেই এ আইনের প্রতিবাদ জানালেও বড় ধরনের বিক্ষোভ এই প্রথম।
বিশ্লেষকরা জানান, বহু বছরের দানা বাধা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে পুলিশি হেফাজতে ২২ বছরের তরুণী মাসা আমিনির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে। রাজপথে নামে নারীরা। পুলিশের সামনেই হিজাব পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানান তারা। নারীদের সঙ্গে প্রথমবারের মতো এ আন্দোলনে যোগ দেন পুরুষরাও।
পুলিশের গুলিও থামাতে পারেনি আন্দোলন। বরং খামেনি সরকারের পতনের দাবি ছড়িয়ে পড়ছে ইরানজুড়ে।
আন্দোলনকারীদের দাবির প্রতি সমর্থন জানাচ্ছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা। জাতিসংঘের নারী বিষয়ক সংস্থা- ইউএন ওমেন বিবৃতিতে বিক্ষোভকারীদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে। মানবাধিকার কাউন্সিলও নিপীড়ন বন্ধ ও ইন্টারনেট সেবা চালুর আহ্বান জানিয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়েছেন দেশটির চলচ্চিত্র কর্মীরা।
এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে চলমান বিক্ষোভে কি ক্ষমতাসীনরা হটবে? বিশ্লেষকরা বলছেন, এভাবে বিক্ষোভ চলতে থাকলে কিছু সংস্কার হতে পারে। তবে এই আন্দোলন ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরানকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারবে না।
তাদের মতে, মাসা আমিনির প্রজন্ম ইরানকে সেক্যুলার দেখতে চায়। যেখানে রাষ্ট্র তার নাগরিকের অধিকারকে সুরক্ষা দেবে।