ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া ও খেরসন অঞ্চলকে ‘স্বাধীন’ ঘোষণা করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে তিনি এ দুটি অঞ্চলের স্বাধীনতার ডিক্রিতে স্বাক্ষর করেছেন। পুতিন তাঁর ডিক্রিতে বলেছেন, আমি রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব এবং স্বাধীনতার স্বীকৃতির আদেশ দিচ্ছি।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনের আরও দুটি অঞ্চল দেনেৎস্ক ও লুহাস্ককে স্বাধীন ঘোষণা করে একই ধরনের ডিক্রিতে স্বাক্ষর করেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট। আজ শুক্রবার বিকলে তিনটায় দেনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিজিয়া ও খেরসন—এই চারটি অঞ্চল আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ার যুক্ত হতে যাচ্ছে। এ উপলক্ষে ক্রেমলিনে একটি জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়া ক্রেমলিন ওয়াল থেকে একটু দূরে রেড স্কয়ারে একটি কনসার্টেরও আয়োজন করা হয়েছে।এদিকে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস নিউইয়র্ক সিটিতে সাংবাদিকদের বলেছেন, ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল এভাবে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করা হবে জাতিসংঘের সনদ লঙ্ঘন করার শামিল এবং এর কোনো আইনি মূল্য নেই। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে আজ শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র ও আলবেনিয়া যৌথভাবে একটি খসড়া নিন্দা প্রস্তাব উত্থাপন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বৃহস্পতিবার রাতেই কঠোর ভাষায় বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র কখনোই ইউক্রেনের ভূখণ্ডে রাশিয়ার দাবিকে স্বীকৃতি দেবে না।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেশকভ জানিয়েছেন, আনুষ্ঠিকভাবে ঘোষণা দেওয়ার জন্য আজ শুক্রবার গ্র্যান্ড ক্রেমলিন প্রাসাদের সেন্ট জর্জ হলে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘সেখানেই নতুন অঞ্চলগুলোর রাশিয়ায় যোগদানের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে।’ পেশকভ আরও বলেন, ‘যে চারটি অঞ্চলে গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং ভোটে যারা রাশিয়ার পক্ষে যোগ দিতে রায় দিয়েছিল। তাদের সঙ্গেই চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে।’
রাশিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে—দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন এবং জাপোরিঝিয়াকে তাদের সঙ্গ সংযুক্ত করার ঘোষণা দিতে তৎপর হলেও ইউক্রেন এবং পশ্চিমা বিশ্ব এই গণভোটকে প্রত্যাখ্যান করেছে। প্রতিক্রিয়ায় পশ্চিমা বিশ্ব বলেছে, মানুষকে বন্দুকের মুখে দাঁড় করিয়ে ভোট নেওয়া হয়েছে। এই অঞ্চলগুলোর মোট আয়তন ইউক্রেনের আয়তনের প্রায় ১৫ শতাংশ। সেই হিসেবে ৬ লাখ বর্গকিলোমিটারের দেশটির প্রায় ৯০ হাজার বর্গকিলোমিটার রাশিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত হতে যাচ্ছে।