আসন্ন শীতে ব্রিটেন ব্ল্যাক আউটের কবলে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে জনসাধারণ যেন শীতের সময় তাদের গৃহস্থালি গ্যাস, বিদ্যুতের ব্যবহার কম করেন, সেজন্য একটি পাবলিক ইনফরমেশন ক্যাম্পেইন চালুর বিষয়ে মন্ত্রীরা আলোচনা করছেন বলেও জানা গেছে। দেশটির বাণিজ্য বিভাগ, জ্বালানি কোম্পানি এবং নেটওয়ার্ক অপারেটর ন্যাশনাল গ্রিডের মধ্যে এ বিষয়ে পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা চলছে। এর মধ্যে রয়েছে পরিবারগুলোর থার্মোস্ট্যাটগুলো বন্ধ করা এবং রাতের বেলা ও যখন গ্যাস, বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকে তখন ডিশওয়াশার-ওয়াশিং মেশিন ব্যবহার করতে উত্সাহিত করা।
কর্মকর্তারা ন্যাশনাল গ্রিডের মাধ্যমে পরিচালিত একটি সার্ভিসের ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করেছেন যা ভোক্তাদের বিদ্যুৎ চলে গেলে একটি টেক্সট, ফোন কল বা ইমেলের মাধ্যমে সতর্ক করতে ব্যবহৃত হয়। বিদ্যুৎ ব্যবহার কমানো নিয়ে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সেবাটি কীভাবে ব্যবহার করা যায় তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যখন কোনো ত্রুটি বা বিভ্রাট শনাক্ত হয়, তখন এই সিস্টেমটি গ্রাহকদের অবহিত করে এবং নিশ্চিত করে যে কখন বিদ্যুৎ পুনরায় সরবরাহ হবে। এ আলোচনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলেছে, জনসাধারণের বাড়িতে গ্যাস, বিদ্যুতের সরবরাহ কোনো অবস্থাতেই ব্যাহত না হয়, এ বিষয়ে সরকারি কর্মকর্তারা এবং শিল্পকারখানার নির্বাহীরা ব্ল্যাকআউট এড়াতে বদ্ধপরিকর। তাই একটি পাবলিক ইনফরমেশন ক্যাম্পেইন অর্থাৎ জনগণকে উত্সাহিত করার মাধ্যমে শীতকালে জ্বালানি শক্তি সরবরাহের ওপর চাপ কমাতে সহায়তা করবে। মন্ত্রীরা এখন পর্যন্ত ভোক্তাদের তাদের জ্বালানির ব্যবহার কমানোর আহ্বান প্রত্যাখ্যান করলেও, তারা বলছেন গ্যাস ও বিদ্যুতের ব্যবহার ‘যে কারও ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত’। এনার্জি নিয়ন্ত্রক সংস্থা অফগেম বলেছে, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আসন্ন শীতে গ্যাসের ঘাটতির একটি ‘উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি’ রয়েছে। কারণ শীতের আগেই ইউরোপে গ্যাসের মজুদ উল্লেখ্যযোগ্যভাবে কমে গেছে।
সরকারি বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ব্রিটেনে গ্যাসের ঘাটতি থাকলে এবং শীতে আবহাওয়া গুরুতর হলে জানুয়ারিতে চার দিনের জন্য বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হতে পারে। যদিও ইউরোপীয় দেশগুলো গ্যাস স্টোরেজ সুবিধা পূরণ করতে এবং ব্যবহার কমানোয় বেশ অগ্রগতি করেছে, তবে আগামী বছরের মধ্যে সরবরাহ এবং উচ্চ মূল্য নিয়ে উদ্বেগ রয়েই গেছে। গত সপ্তাহে, বাল্টিক সাগরের নীচে নর্ড স্ট্রিম রাশিয়ান গ্যাস পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর সঙ্গে মস্কোরই হাত রয়েছে বলে অভিযোগ ইইউর। ইউরোপীয় সরকারপ্রধানরা জার্মানির কিছু অংশে গরম পানির ব্যবহার নিষিদ্ধ এবং গরম পোশাক পরাসহ খরচ কমাতে ভোক্তাদের কাছে বার্তা পাঠানোর চেষ্টা করছে ফ্রান্স।
বাণিজ্যমন্ত্রী জ্যাকব রিস-মগ, দীর্ঘমেয়াদি সরবরাহ চুক্তির জন্য দুটি গ্যাস রপ্তানিকারক দেশ, কাতার এবং নরওয়ের সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে আলোচনা করছেন। এর ফলে যুক্তরাজ্যকে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বিপুল পরিমাণে গ্যাস কিনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করবে। এদিকে আগামী শীতে তাদের কয়লাভিত্তিক কার্যক্রমকে স্ট্যান্ডবাই রাখার জন্য ড্র্যাক্স এবং ইডিএফসহ পাওয়ার জেনারেটরগুলোর সঙ্গে সরকার চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।