মেজর নাসির উদ্দিন আহাম্মেদ (অব.) পিএইচডি
অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটিয়ে মিয়ানমার (পূর্ববর্তী বার্মা) স্বাধীনতা লাভ করলেও বিগত প্রায় ৭৫ বছরে দেশটির কোনো শাসক দেশের প্রায় পৌনে ৭ লাখ বর্গ কিলোমিটার ভূখণ্ড ও প্রায় ২ হাজার কিলোমিটার উপকূলীয় অঞ্চলে কখনই পরিপূর্ণ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা প্রয়োগ বা শাসন করতে পারেননি। দেশটির বিভিন্ন অঞ্চল বিশেষত প্রত্যন্ত বা দুর্গম অঞ্চল ও সীমান্তবর্তী অঞ্চলের উগ্রবাদী দল বা গোষ্ঠী এমনকি একরোখা বিপ্লবী নেতারা রাষ্ট্রীয় শাসনের স্থলে নিজস্ব প্রভাব-প্রতিপত্তি, সমান্তরাল শাসন চালিয়েছেন বছরের পর বছর। এ প্রভাব-প্রতিপত্তির কারণে অনেক এলাকাই ছিটমহলের মতো বিচ্ছিন্ন হওয়ার নজিরও রয়েছে। যেখানে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা রাষ্ট্রীয় সেবার মতো সেবা প্রদান, নিজস্ব আইন জারি, ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ, কর সংগ্রহ ও নিজস্ব সশস্ত্র বাহিনীর মাধ্যমে আঞ্চলিক শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা ও কেন্দ্রের বা রাষ্ট্রীয় বাহিনীর আধিপত্য খর্ব করার মতো কার্যক্রম চালিয়েছে যুগের পর যুগ। বর্তমানে ২০টির বেশি ছোটবড় বিচ্ছিন্নতাবাদী দল সমগ্র মিয়ানমারে নানাভাবে নানা লক্ষ্যে তৎপর রয়েছে বলে মনে করে বেলজিয়ামের ব্রাসেলসভিত্তিক অরাজনৈতিক, অলাভজনক ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ‘থিঙ্কট্যাঙ্ক’ ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ। এসব বিচ্ছিন্নতাবাদী দলের মধ্যে বিভিন্ন কারণে আলোচনার শীর্ষে ছিল ১৯৪৭ সালে অর্থাৎ স্বাধীনতার আগেই প্রতিষ্ঠিত ‘কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন’, ১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘কোচিন ইনডিপেনডেন্ট অর্গানাইজেশন’ প্রভৃতি। তবে ইদানীংকালে আগের সব আলোচনা ছাপিয়ে সংবাদের পাদপ্রান্তে উঠে এসেছে ‘আরাকান আর্মি’র নাম। সমগ্র বিশ্বে বিশেষত বাংলাদেশের গণমাধ্যমে আজ আরাকান আর্মি এক আতঙ্কের নাম হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
মিয়ানমারের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মির প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণ বেশি পরিলক্ষিত হয়। পশ্চিমে বাংলাদেশ ও ভারতের সঙ্গে স্থলসীমার অস্তিত্ব এবং মধ্যভাগে বিশাল সমুদ্রসীমা আরাকান আর্মিকে সহজে বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ, অস্ত্র ও গোলাবারুদ সংগ্রহ ও প্রয়োজনে আত্মগোপনের অভূতপূর্ব সুযোগ সৃষ্টি করেছে। ফলে ২০০৯ সালের ১০ এপ্রিল প্রতিষ্ঠার পর থেকে ক্রমেই শক্তি সঞ্চার করতে থাকে আরাকান আর্মি। অন্যদিকে ১৯৭৪ সালে বার্মিজ রাজা বোদাওপায়া কর্তৃক রাখাইন দখলের পর থেকে ক্রমাগত অত্যাচার ও নিপীড়নের শিকার রাখাইনবাসীর কাছে মুক্তির বাণী নিয়ে উপস্থিত আরাকান আর্মির গ্রহণযোগ্যতাও বাড়তে থাকে দ্রুততার সঙ্গে। ২০০৯ সালে একদল বাস্তুচ্যুত তরুণ কোচিন ইনডিপেনডেন্ট আর্মির সহায়তায় উত্তর মিয়ানমারে দ্রুততার সঙ্গে আরাকান আর্মি নামে সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলতে সক্ষম হয়। পাঁচ বছরের প্রস্তুতি নিয়ে ২০১৪ সালে এই আরাকান আর্মির সশস্ত্র যোদ্ধারা রাখাইন রাজ্যে প্রবেশ করতে থাকে এবং ধারাবাহিকভাবে নিজেদের আধিপত্য ও নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি করতে থাকে। তখন থেকেই কেন্দ্রীয় সরকার ও সরকারি বাহিনীর সঙ্গে ক্রমাগত সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে আরাকান আর্মি। ২০১৮ সালে এ সংঘাত তুঙ্গে ওঠে। তবে ২০২০ সালে হঠাৎ উভয় পক্ষ যুদ্ধবিরতি কার্যকর করে। এ যুদ্ধবিরতির ফলে রাখাইন রাজ্যে কেন্দ্রের শাসন শিথিল হয়ে পড়ে এবং বেশ কিছু ক্ষেত্রে শূন্যতার সৃষ্টি হয়। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে আরাকান আর্মি সমগ্র রাখাইন রাজ্যে তাদের প্রভাব আরও বৃদ্ধি করে। ২০২০ সালের ১১ এপ্রিল আরাকান আর্মির ১১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এ বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল টোওয়ান ম্রাট নাইয়িং ‘ওয়ে অব রাখিতা’ শিরোনামে এক রূপকল্প প্রকাশ করেন। এ রূপকল্পমতে আরাকান আর্মির মূল্য উদ্দেশ্য এমন একটি স্বাধীন আরাকান রাজ্য প্রতিষ্ঠা, যা ১৮২৪ সাল পর্যন্ত বিদ্যমান ছিল এবং মিয়ানমারের পশ্চিমাংশে একটি বড় অংশ শাসন করত।
এরই মধ্যে গত বছর ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সামরিক জান্তা ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসিকে হটিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে এবং নোবেলজয়ী স্টেট কাউন্সেলর ও এনএলডি নেত্রী অং সান সু চিকে বন্দি করে। এই সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী নজরবিহীন আন্দোলন ও বিক্ষোভ গড়ে ওঠে। এ আন্দোলন কমানোর কৌশল এবং জান্তাবিরোধী সর্বাত্মক শক্তিকে হ্রাস ও বিভক্ত করার কৌশল হিসেবে সামরিক জান্তা আরাকান আর্মির সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন করে মার্চে তাদের তৈরি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের তালিকা থেকে আরাকান আর্মিকে বাদ দেয়। অন্যদিকে ২০২০ সালের জাতীয় নির্বাচন থেকে রাখাইন রাজ্যকে নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা অবনতির অজুহাতে দূরে রাখা হয়। এতে রাখাইন রাজ্যে কেন্দ্রের প্রভাব আরও কমে যায়। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে রাখাইন আর্মির রাজনৈতিক শাখা ‘দি ইউনাইটেড লিগ অব আরাকানস’ (ইউএলএ) রীতিমতো বেতনভুক বিচারক ও বিচারিক কাজ পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ করে রাজ্যের একটি বিরাট অংশে বিচারব্যবস্থা কায়েম করে। অন্যদিকে স্বাস্থ্যব্যবস্থা বিশেষত কভিড-১৯ মোকাবিলায় রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মির তৎপরতা ছিল নজরে পড়ার মতো। ফলে প্রশাসন, অর্থব্যবস্থা, বাণিজ্য এক কথায় রাজ্যের সবকিছুর ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে আরাকান আর্মি। এ ক্ষেত্রে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে হত্যা, খুন, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের প্রেক্ষাপটে নিজের ভিটামাটি ছেড়ে বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেওয়া ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলমানের প্রসঙ্গটিও আলোচনায় এসেছে। ২০১৬ সালের শেষ দিকেই মূলত মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অত্যাচারে টিকতে না পেয়ে রোহিঙ্গা মুসলমানরা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে শুরু করে। তবে ২৫ আগস্ট, ২০১৭ সালে এ মাত্রা চরমে ওঠে। তৎকালীন মিয়ানমার সরকারের মতে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও অন্যান্য বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের সদস্যরূপে রোহিঙ্গা মুসলমানরা মিয়ানমার সেনাবাহিনী, সীমান্তরক্ষী, পুলিশ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও বৌদ্ধদের আক্রমণ করছে এবং নির্বিচার হত্যা করছে। এরই মধ্যে ২৫ আগস্ট, ২০১৭ তারিখে ভোরে ৩০টি সেনা, সীমান্ত ও পুলিশ চৌকিতে একযোগে আক্রমণ ঘটে। এরই প্রতিক্রিয়ায় আরসা তথা রোহিঙ্গা মুসলমানদের দিকে এ অভিযোগের আঙুল তুলে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সেনারা শুরু করে ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যা। যার খেসারত দিচ্ছে বাংলাদেশও। এমন ক্রান্তিকালে রাখাইনে থাকা আরাকান আর্মির কোনো সহায়তা পায়নি রোহিঙ্গারা। বরং অনেকের মতে, মুসলমান রোহিঙ্গা বিতাড়নের পক্ষে নীরব সম্মতি ছিল আরাকান আর্মির।
তবে আজ দৃশ্যপট পাল্টেছে। বর্তমানে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে নিয়েই সাবধানে এগিয়ে যেতে চায় আরাকান আর্মি। ওয়াশিংটনভিত্তিক কারেন অ্যাফেয়ার্স ম্যাগাজিন ‘দ্য ডিপ্লোমেট’ ৩১ আগস্ট, ২০২২ আরাকান রাজ্যের ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক কেয়াও হাসান হেলাইংয়ের লেখা এক দীর্ঘ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনমতে, সাম্প্রতিক সময়ে আরাকান আর্মি রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সংযুক্ত করার পথে হাঁটছে। তাঁর মতে, রাখাইন রাজ্যে জাতিসত্তার দিক থেকে রাখাইন মুসলমানরা দ্বিতীয় অবস্থানে। যাদের সংখ্যা প্রায় ৩২ লাখ। আরাকান আর্মির সামরিক প্রধান জেনারেল নাইং সম্প্রতি গণমাধ্যমে দেওয়া বিবৃতিতে স্পষ্টতই বলেছেন, ধীরে ধীরে মুসলমান রোহিঙ্গাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এবং দক্ষতা বৃদ্ধি করে তাদের প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বা পুলিশি কার্যক্রম ও বিচারিক কাজে সম্পৃক্ত করা হবে। আপাতদৃষ্টিতে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে এখনো অবস্থান করা মুসলমান রোহিঙ্গারা এবং বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মুসলমানদের একটি বড় অংশ আরাকান আর্মির এ মনোভাবকে সাধুবাদ জানিয়েছে। কারণ আগে অং সান সু চির এনএলডি সরকার বা সামরিক জান্তারা রাখাইনের মুসলমান রোহিঙ্গাদের নিয়ে এমনটা কখনো ভাবেনি। রোহিঙ্গা মুসলমান অধ্যুষিত বেশ কিছু এলাকায় ইতোমধ্যে ‘লিয়াজোঁ অফিস’ খোলা হয়েছে, যেখানে দলে দলে কিশোর, তরুণ ও যুবক রোহিঙ্গা মুসলমান স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে নাম লেখাচ্ছে। আরাকান আর্মি প্রবর্তিত বিচারব্যবস্থাকেও তারা ভালোভাবে মেনে নিয়েছে।
এ মুহূর্তে বাংলাদেশকে সম্পূর্ণ বিচক্ষণতার সঙ্গে এ পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, যত শক্তিশালীই হোক না কেন, মিয়ানমার তথা দেশের আইনে আরাকান আর্মি একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী, উগ্র ও জঙ্গি সংগঠন। দেশের ও আন্তর্জাতিক আইনে কোনোভাবেই বাংলাদেশ এমন সংগঠনের সঙ্গে প্রকাশ্যে বা দাফতরিকভাবে যোগাযোগ রাখতে পারে না, আর মিয়ানমার কেন্দ্রীয় সরকার সব সময়ই রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিরুদ্ধে অজুহাত ও সুযোগ খুঁজতে থাকে। তারা তালিকা গ্রহণ, সংশোধন ও নতুন তালিকা তৈরি করা সত্ত্বেও অদ্যাবধি একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত নেয়নি। এ মুহূর্তে আরাকান আর্মির সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগের যে-কোনো প্রমাণ আন্তর্জাতিক সংস্থা ও আদালতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একটি বড় অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে। আরাকান আর্মি বাংলাদেশ, ভারত ও মিয়ানমারের সীমান্তে বেশ দাপটের সঙ্গে অবস্থান করছে। এ তিনটি দেশেই আরাকান আর্মি অন্য দেশের ইন্ধনে যে-কোনো অপতৎপরতা চালাতে পারে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে। সুতরাং আরাকান আর্মির সঙ্গে বাংলাদেশের আচরণ অতিমাত্রায় পরিপক্ব হওয়ার দাবি রাখে। আরাকান আর্মির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অজুহাতে রাখাইনে অবস্থানরত অবশিষ্ট মুসলমানদের ওপর আবারও নিপীড়ন চালাতে পারে মিয়ানমারের সামরিক জান্তারা। ফলে বাংলাদেশমুখী হতে পারে আরেক দফা রোহিঙ্গা মুসলমান শরণার্থী। রাজধানীতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পর পরাশক্তির ইশারায় নতুন করে আরাকান আর্মির ওপর ব্যাপক সামরিক অভিযান চালাতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার। তখনো মুসলমান ও অমুসলমান রাখাইনবাসী বাংলাদেশ সীমান্তমুখী হবে। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত নেওয়ার লোভনীয় অঙ্গীকার দিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সদস্য সংগ্রহ ও প্রশিক্ষণ পরিচালনার প্রয়াস চালানো অস্বাভাবিক নয়। মুসলিম বিশ্ব বা যে-কোনো পরাশক্তি রোহিঙ্গা মুসলমান ও আরাকান আর্মিকে সহায়তার নামে বাংলাদেশের কোনো ব্যক্তি, সংস্থা বা গোষ্ঠীকে ব্যবহার করার প্রস্তাব দিতে পারে। মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা বর্তমান বিশ্বের বহুদেশের মোট জনসংখ্যার চেয়ে বেশি। প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে যদি ৩ লাখ রোহিঙ্গা যুদ্ধ করার মতো কিশোর, তরুণ বা যুবক হয় তবে তারা বন্দিদশা থেকে মুক্তির নেশায় একদিন অস্ত্র হাতে তুলে নেবে না, এ কথা বলা যায় না। আর এ অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা যাদের স্বার্থ রক্ষা করবে, তারা এ সুযোগ কাজে লাগাতে সচেষ্ট থাকবে এটাই স্বাভাবিক। আজ থেকে পাঁচ বছর আগে যে শিশু মায়ের কোলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এসেছিল, সে এখন তরুণ বা যুবক। প্রতি বছর প্রায় অর্ধলাখ নতুন শিশু রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জন্ম নিচ্ছে বলে ধারণা সেভ দ্য চিলড্রেন, ইউনিসেফসহ বিভিন্ন সংস্থার। কেউ কেউ রোহিঙ্গাদের দীর্ঘ মেয়াদে ফিলিস্তিন হওয়ার আশঙ্কাও করছেন। এ অবস্থায় আরাকান আর্মিকে নিয়ে বাংলাদেশ আলাদা করে ভাববে, প্রয়োজনে আলাদাভাবে গবেষণা করবে এবং তাদের বিষয়ে গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়াবে এটাই প্রত্যাশা। মনে রাখতে হবে, তিন দেশের মধ্যে দুর্গম ও অনুন্নত এলাকায় থাকা একটি সশস্ত্র দল কোনো না কোনো নিকট বা দূরবর্তী দেশের সাহায্য ও সমর্থন ছাড়া সামরিক ও প্রশাসনিকভাবে এতদূর এগিয়ে গেছে, তা ভাবার সুযোগ নেই। সুতরাং বাংলাদেশকে পা ফেলতে হবে অতি সতর্কতার সঙ্গে।