বছর গড়ালেও হয়নি চার্জগঠন। পুলিশ মামলা তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছে। এর মধ্যে কেউ কেউ জামিন নিয়ে লাপাত্তা রয়েছেন। এটি গত বছরের বহুল আলোচিত মডেল পিয়াসা-মৌ-মিশু সিন্ডিকেট গ্রেফতারের ঘটনায় দায়ের করা ৫ টি মামলার ক্ষেত্রে এমনটি ঘটেছে। এদের মধ্যে গত বছরের ৪ আগষ্ট ভাটারা থানায় শরফুল হাসান ওরফে মিশু হাসানের বিরুদ্ধে দুইটি মামলা দায়ের করে র্যাব। এদের একটি মামলা হলো পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে এবং অপরটি অস্ত্র আইনে দায়ের করা।
গত বছরের ৩ আগস্ট ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ কুড়িল বিশ্বরোড, বারিধারা কূটনৈতিক জোন এবং মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে শরফুল হাসান ওরফে মিশু হাসান, ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ও মডেল মৌকে গ্রেফতার করে। তাদের কাছ থেকে ফেরারি মডেলের একটি গাড়ি ও কয়েক হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করে। সেসময়ে অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (বর্তমানে অতিরিক্ত কমিশনার ডিএমপি) হারুন অর রশিদ গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, মডেল পিয়াসা মৌ সিন্ডিকেট বাসায় পার্টি করে, মদের আসর বসায়। যেখানে উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানদের বাসায় ডেকে ব্লাকমেইল করে অর্থ হাতিয়ে নেয়। পৃথক অভিযানে পিয়াসা ও মৌ’য়ের বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় ৯ বোতল মদ, ৪ প্যাকেট ইয়াবা, সিসা ও বিভিন্ন নেশাজাতদ্রব্য।
অপরদিকে, র্যাবের হাতে ধরা পড়ে মিশু হাসান ও মাসুদুল হাসান জিসান। র্যাব বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মাদক ও ১ টি ফেরারী মডেলের গাড়িসহ তাদেরকে গ্রেফতার করে। তাদের বিরুদ্ধে র্যাব বাদী হয়ে ভাটারা থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনে ২ টি মামলা দায়ের করে। মিশু-জিসান সিন্ডিকেট গাড়ি ও গরুর ফার্মের আড়ালে মাদক ও দামি গাড়ির কারবার করে আসছিল। এছাড়া অস্ত্র ও জালটাকার ব্যবসার সঙ্গেও এই সিন্ডিকেট জড়িত।
মোহাম্মদপুর থানায় ওই বছরের ২ আগষ্ট মাদক আইনে মডেল মরিয়ম আক্তার মৌ, গুলশান ও খিলক্ষেত থানায় মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসার বিরুদ্ধে মোট ৩ টি মামলা দায়ের করে পুলিশ। এছাড়া ভাটারা থানায় মিশু-জিসানের বিরুদ্ধে র্যাব ২ টি মামলা দায়ের করে। এই ৫ টি মামলার তদন্তভার পায় সিআইডি। সিআইডি মামলাগুলো তদন্ত করে গত বছরের ২৫ ও ২৬ সেপ্টেম্বর তাদেরকে আসামি করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি। সর্বশেষ পিয়াসা-মিশু-জিসান সিন্ডিকেট জামিনে কারাগার থেকে বের হয়েছেন। তবে এদের মধ্যে মিশু-জিসান জামিন নিয়ে লাপাত্তা হয়েছেন।
আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, এই পাঁচ মামলার চার্জশিট দেওয়ার বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও চার্জ গঠন হয়নি। এ ব্যাপারে ঢাকার আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল্লাহ আবু বলেন, শিগগির এই মামলাগুলোর চার্জ গঠন হবে।
এ ব্যাপারে মডেল ফারিয়া মাহাবুব পিয়াসা বলেন, আমি জামিনে রয়েছি। আদালতের নির্দেশনা মেনে চলছি।