একটি নতুন গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, প্রশান্ত মহাসাগর হারিয়ে যাবে এবং আমেরিকা এশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হবে! প্রশান্ত মহাসাগর যে গতিতে সংকুচিত হচ্ছে, তাতে আগামী ২০ থেকে ৩০ কোটি বছরের মধ্যে পৃথিবী আবার ‘সুপারকন্টিনেন্ট’ বা অতি মহাদেশ পেতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন এই বিজ্ঞানীরা।
অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন ইউনিভার্সিটি এবং চীনের পিকিং ইউনিভার্সিটির গবেষকরা সুপারকম্পিউটারের মাধ্যমে পৃথিবীর টেকটোনিক প্লেটের বিবর্তন বিশ্লেষণ করে একটি মডেল তৈরি করেছেন, সেখান থেকেই ভবিষ্যতের পৃথিবীর সম্ভাব্য ভূগঠনের একটি চিত্র তারা তুলে ধরেছেন। তাদের ঐ গবেষণার ফলাফল গত ২৮ সেপ্টেম্বর ন্যাশনাল সায়েন্স রিভিউ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ।
ভূতাত্ত্বিক মতবাদ অনুসারে ভূত্বক প্রধানত সাতটি বড় ও কয়েকটি ক্ষুদ্র গতিশীল কঠিন প্লেট দিয়ে গঠিত, যেগুলো গুরু্ললের আংশিক তরল ও উষ্ণ ম্যাগমার ওপর ভাসছে। সবসময় অবস্থান পরিবর্তনের মধ্য থাকা এসব প্লেট একটির সঙ্গে আরেকটি ধাক্কা খেলে ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির উদিগরণের মতো ঘটনা ঘটে। ‘কন্টিনেন্টাল ড্রিফট’ নামের এই তত্ত্ব অনুযায়ী, বহুকাল আগে সবগুলো মহাদেশ পরস্পর যুক্ত ছিল। এদের একসঙ্গে প্যানজিয়া বা সুপারকন্টিনেন্ট বলা হতো। কালের আবর্তে টেকটোনিক প্লেটগুলো দূরে সরে গিয়ে আলাদা আলাদা মহাদেশে বিভক্ত হয়।
কার্টিন ইউনিভার্সিটি ও পিকিং ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীদের গবেষণা সত্যি হলে ২০ থেকে ৩০ কোটি বছরের মধ্যে আবারও পৃথিবীর সব ভূভাগ পরস্পরের সঙ্গে জুড়ে গিয়ে ‘সুপারকন্টিনেন্ট’ গড়তে পারে। তখন আমেরিকা এশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাবে বলে এর নাম দেওয়া হচ্ছে অ্যামেশিয়া। গবেষক দলটির কম্পিউটার মডেল বলছে, পৃথিবীর গঠনের সময় থেকে বিলিয়ন বিলিয়ন বছর ধরে পৃথিবীর শীতল বা ঠাণ্ডা হওয়ার প্রক্রিয়ায় সমুদ্রের তলদেশের টেকটোনিক প্লেটের পুরুত্ব ও শক্তি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হ্রাস পেয়েছে। আটলান্টিক কিংবা ভারত মহাসাগর সঙ্কুচিত হলে সুপারকন্টিনেন্ট গঠনের প্রাকৃতিক এই প্রক্রিয়া বিলম্বিত হবে। বিজ্ঞানীদের দাবি, প্রতি বছর কয়েক সেন্টিমিটার করে কমছে প্রশান্ত মহাসাগর। ডাইনোসর যুগে এই সংকোচন শুরু হয়। নতুন গবেষণা মডেল বলছে, এখন প্রশান্ত মহাসাগরের যে বিস্তার, আগামী ৩০ কোটি বছরের কম সময়ে তা উধাও হয়ে যাবে।