৪২ বলে ৪১ রান, হাতে রয়েছে ১০ উইকেট। এমন ম্যাচও কী হারা যায়! যাদের কাছে মনে হচ্ছে এটা তো মামুলি লক্ষ্য, তাদের গতকাল ভুল প্রমাণ করেছে বাংলাদেশ নারী দল। নারী এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেই মামুলি লক্ষ্যই পেরোতে পারেনি টাইগ্রেসরা। থেমে গেছে ৩ রান বাকি থাকতেই। অবিশ্বাস্য হারের পর আজ আরব-আমিরাতের বিপক্ষে ম্যাচটা তাই নিগার-জাহানারাদের জন্য হয়ে দাঁড়িয়েছে বাঁচা মরার লড়াই। সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করতে হলে জয়ের বিকল্প নেই।
এমন হার খেলোয়াড়দেরও বিমর্ষ করে তুলেছে। আউট হওয়ার পর ভেজা চোখে মাঠ ছাড়েন অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি। সংবাদ সম্মেলনে এসে গলা ধরে আসছিল পেসার জাহানারা আলমের। জিতলে শেষ চারে নামটা লিখে ফেলত বাংলাদেশ। কেননা পরের ম্যাচে থাইল্যান্ডকে ৯ উইকেটে হারিয়েছে ভারত। রানরেটে এগিয়ে থাকায় আজ আমিরাতকে নিয়ে চিন্তা করতে হতো না। কিন্তু এখন থাইল্যান্ডের সঙ্গে বাংলাদেশের ভাগ্যও ঝুলে আছে।
৬ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চারে আছে থাইল্যান্ড। এক ম্যাচ কম খেলে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ পয়েন্ট। আজ হারলে ঘরের মাঠে শিরোপা ধরে রাখার মিশনটা অচিরেই শেষ হয়ে যাবে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের। তেমনটা অবশ্য চান না জাহানারা, ‘যদি কোনো কারণে সেমিফাইনালে মিস করি আমাদের দলের থেকে মনে হয় না অন্য কারো খারাপ লাগাটা কাজ করবে।’
দ্বিতীয় ম্যাচে বাদ পড়ার পর গতকাল ফের একাদশে ফিরেছিলেন জাহানারা। চামারি আতাপাত্তুর স্টাম্প উড়িয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শততম উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন ডানহাতি পেসার। কিন্তু অর্জন ছাপিয়ে তার কাছে জয়টাই ছিল গুরুত্বপূর্ণ, ‘আমি নিজেও জানি না আমার একশ উইকেট হয়েছে। একটু ভালো লাগা থাকলেও খারাপ লাগাটা বেশি। কারণ ঘরের খেলা, ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন আমরা। ২০১৪ তে ইঞ্চনে (এশিয়ান গেমস) এরকম একটা ঘটেছিল। ৪২ বলে ৪৩ রান টার্গেট ছিল পাকিস্তানের বিপক্ষে। আমরা সেটা হেরে স্বর্ণ হাতছাড়া করেছিলাম। অবশ্যই, আজকের (গতকাল) ম্যাচটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমরা সবাই হতাশ, এটা বলাই চলে।’
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা শ্রীলঙ্কার ইনিংসে ১৮.১ ওভার যেতেই বৃষ্টির আগমন। তখন পর্যন্ত লঙ্কানদের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৮৩ রান। রুমানা আহমেদ ২টি, ফাহিমা খাতুন ও সানজিদা আক্তার ১ টি উইকেট। বৃষ্টি থামলে ডি এল মেথডে বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৭ ওভারে ৪১ রান। কিন্তু তেড়েফুঁড়ে খেলতে ক্রমাগত উইকেট বিলোতে থাকেন ব্যাটাররা। ৪ উইকেট নেওয়া ইনোকা রানাভিরার ঘূর্ণিতে কেউ দাঁড়াতেও পারেননি। তাই ৭ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে তাই ৩৭ রানের বেশি এগোয়নি বাংলাদেশ। সর্বোচ্চ ১২ রান করেন নিগার। এমন হার ভুলিয়ে দিতে আজ আমিরাতের বিপক্ষে জয়টা বড্ড প্রয়োজন টাইগ্রেসদের।