ইরানের কুখ্যাত ইভিন কারাগারে শনিবার ঘটে যাওয়া বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৮ বন্দী মারা গেছে। সোমবার দেশটির বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ এই তথ্য জানিয়েছে। এর আগে তাদের ওয়েবসাইটে বলা হয়, বন্দীরা ধোঁয়ায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যায়। এছাড়া ৬১ জন বন্দী আহত হয়েছে।
ইভিন কারাগারে শত শত রাজনৈতিক বন্দী আছে, এর পাশাপাশি সাধারণ অপরাধীদেরও সেখানে রাখা হয়। কারাগারের ভেতরের একটি সূত্র বলছে, হতাহতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
কর্তৃপক্ষ বলছে, কারাগারের ভেতর একটি ওয়ার্কশপে দুদল বন্দীর মধ্যে মারামারির পর সেখানে আগুন লাগে। অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, কারাগার থেকে আগুন আর ধোঁয়া উড়ছে। সেই সঙ্গে শোনা যায় বন্দুকের গুলি আর বিস্ফোরণের শব্দ।
রাজনৈতিক বন্দী, সাংবাদিক ও বিদেশি নাগরিকদের আটকে রাখার কারণে তেহরানে এই কারাগারের বিশেষ পরিচিতি রয়েছে। কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তবে ভিডিও ফুটেজ দেখে মনে হচ্ছে, আগুন এখনো জ্বলছে।
ইরানে যখন বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলছে, তার মধ্যেই এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলো। তবে রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমে আভাস দেওয়া হয় যে এসব বিক্ষোভের সাথে ইভিন কারাগারের ঘটনার কোন সম্পর্ক নেই। একজন কর্মকর্তা এর জন্য অপরাধীদের দায়ী করেছেন।
কারাগারের ভেতর থেকে তেহরানের গভর্নর রাষ্ট্রীয় টিভিকে জানান, কারাগারের যে অংশে ছিঁচকে অপরাধীরা থাকে সেখানে দাঙ্গা লেগেছে।
ইরাকের সরকারবিরোধী পর্যবেক্ষক গ্রুপ ১৫০০ তাসভিরের সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে কারাগারের ভেতর থেকে ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক’ শ্লোগান শোনা যাচ্ছে- যে শ্লোগান সাম্প্রতিক বিক্ষোভকারীরা নিয়মিত ব্যবহার করছেন।
সামাজিক মাধ্যমে কিছু সাংবাদিক- কর্তৃপক্ষ ইচ্ছে করে এই আগুন লাগিয়েছে বলে অভিযোগ করেন। বলা হয়, আগুন লাগার আগে ইরানের প্রয়াত সাবেক প্রেসিডেন্ট রাফসানজানির ছেলে মেহদি হাশেমি রাফসানজানিকে ‘আগাম সাময়িক মুক্তি দিয়ে’ বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়।