পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া থেকে দেখা যাচ্ছে আকাশচুম্বী শ্বেতশুভ্র পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা। সোমবার (১৭ অক্টোবর) ভোর থেকেই তেঁতুলিয়ার বিভিন্ন স্থান থেকে দেখা যাচ্ছে সাদা মেঘের পাহাড়টি। কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে প্রচুর পর্যটকের সমাগম ঘটছে।
এদিন সকাল থেকেই পর্যটকের সমাগম দেখা যাচ্ছে তেঁতুলিয়ার পর্যটন স্পট ডাকবাংলোর পিকনিক কর্নারে। পর্যটকরা ডাকবাংলো ও মহানন্দা নদীর তীরে দাঁড়িয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে দেখা গেছে। তারা দেখছেন, ছবি তুলছেন ও ভিডিও তুলে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করছেন।
ডাকবাংলো পিকনিক কর্নারে ঘুরতে আসা কলেজ শিক্ষার্থী জাকিয়া, আবির, তন্ময় জানায়, কয়েকদিন ধরে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যাচ্ছিল না দেখছিলাম অনলাইনের মাধ্যমে। গত রোববার রাতে এসে সোমবার ভোরের প্রহরে এসেই দেখতে পেলাম কাঞ্চনজঙ্ঘা। খুব ভালো লাগলো। এখন যে কেউ আসতে পারেন দেখতে।
রাজশাহী থেকে পরিবার নিয়ে আসা নুশরাত জাহান জানান, খুব আনন্দিত হয়েছে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পেয়ে। কয়েকদিন ধরেই ফেসবুকে চোখ রাখছিলাম ও খোঁজ খবর রাখছিলাম দেখা যায় কিনা। আজ সকালে এসেই দেখতে পেয়ে ভাগ্য প্রসন্ন হলো। একই কথা জানান, চাপাই নবাবগঞ্জ থেকে আসা আব্দুল্লাহ আল মামুন।
স্থানীয়রা জানায়, প্রতিবছর সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পঞ্চগড়ের বিভিন্ন এলাকা থেকে খালি চোখে কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ সৌন্দর্য দেখা যায়। ছবির মতো ভেসে উঠা শুভ্র কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ দৃশ্য ছাড়াও দেখা মেলে ভারতের দার্জিলিংয়ের বিভিন্ন পাহাড়ি অঞ্চল।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর থেকে নেপালের দূরত্ব মাত্র ৬১ কিলোমিটার, এভারেস্ট শৃঙ্গের দূরত্ব ৭৫ কিলোমিটার, ভুটানের দূরত্ব ৬৪ কিলোমিটার, চীনের দূরত্ব ২০০ কিলোমিটার, ভারতের দার্জিলিংয়ের দূরত্ব ৫৮ কিলোমিটার, শিলিগুড়ির দূরত্ব ৮ কিলোমিটার আর কাঞ্চনজঙ্ঘার দূরত্ব মাত্র (আকাশ পথে) ১১ কিলোমিটার। এত বেশি কাছে থাকার কারণে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করে কাছ থেকে উপভোগ করা যায় কাঞ্চজঙ্ঘার সৌন্দর্য।
ট্যুরিস্ট পুলিশ পঞ্চগড় জোনের অফিসার ইনচার্জ মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, সারা বছরই পর্যটকের সমাগম ঘটে থাকে এখানে। বিশেষ করে এ সময়টাতে হিমালয়-কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে প্রচুর পর্যটক এসে থাকে। এবারও পর্যটকরা আসছেন, কাঞ্চনজঙ্ঘা ছাড়াও তারা এখানকার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখছেন। তাদের নিরাপত্তা নিয়ে সর্বদাই ট্যুরিস্ট ও থানা পুলিশসহ প্রশাসন তৎপর রয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহাগ চন্দ্র সাহা বলেন, হিমালয়-কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্যটকদের কাছে বহুল কাঙ্ক্ষিত একটি বিষয়। হেমন্ত-শীত ঋতুতে দেখা মেলছে। যারা পাসপোর্ট-ভিসা ছাড়া কাছ থেকে হিমালয়-কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে চান, এ সময়টা তাদের জন্য উপযুক্ত সময়। প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক এই যুগল পর্বতশৃঙ্গ দেখতে পঞ্চগড়ে ভ্রমণ করে থাকেন। এ বছরও অনেককে ফেসবুক-মেসেঞ্জারে যোগাযোগ করতে দেখছি। আমরা পর্যটকদের নিরাপত্তা, অবকাশযাপনকেন্দ্র ও স্যানিটেশনসহ আকর্ষণীয় কিছু অবকাঠামো নির্মাণ করেছি।