গত সপ্তাহেই পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে ইতিহাস গড়েন দেশটির ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান। তিনি সাতটি আসনের উপনির্বাচনে দাঁড়িয়ে ছয়টি আসনেই জয় পান। এমন রেকর্ড গড়ার রেশ কাটতে না কাটতেই বড়সড় ধাক্কা খেলেন পিটিআই চেয়ারম্যান।
শুক্রবার (২১ অক্টোবর) পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি) ইমরান খানের বিরুদ্ধে দায়ের করা তোশাখানা মামলার রায় দিয়েছে। (ইসিপি) আজ এক সর্বসম্মত রায়ে পাকিস্তানের ক্ষমতাচ্যুত ইমরান খানকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। সেই সঙ্গে পিটিআই চেয়ারম্যান এখন থেকে আর জাতীয় পরিষদের সদস্য নন বলে রায়ে বলা হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় উপহার তোশাখানায় জমা না দিয়ে বিক্রির অভিযোগে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএলএন) এক সদস্য গত আগস্টে ইমরান খানের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করেছিলেন।
পাকিস্তানের প্রভাবশালী পত্রিকা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের এই রায়ের ফলে পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী দেশের মজলিস-ই-শুরার (পার্লামেন্ট) পাশাপাশি প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনেও ইমরান খানের ভোট করার সুযোগ আর থাকলো না।
এখন ইমরান খানের বিরুদ্ধে পিটিআই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে ইসিপি-এর রায়ে বলা হয়েছে। এদিকে পাকিস্তানে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী আযম নাজির তারার বলেছেন, ইমরান খানকে পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন পাঁচ বছরের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করেছে।
ইমরান খানের এই রায়ের বিরুদ্ধে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইমরানের দল পিটিআই। পিটিআই নেতা ফাওয়াদ হোসেইন চৌধুরী ইসিপি-এর এই রায়কে ধুয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এটি একটি লজ্জাজনক সিদ্ধান্ত। তারা ২২ কোটি জনগণের মুখে চপেটাঘাত করেছে। এই রায়ের বিরুদ্ধে আদালতে যাবেন বলে দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। এছাড়া ইমরানের সমর্থকেরা বিক্ষোভ জানাতে বিভিন্ন শহরের রাস্তায় নেমেছে।
এখন প্রশ্ন উঠেছে এই রায়ের পর ইমরান কতটা বিপদে? পাকিস্তানের এক আইনজীবী আসাদ রহিম খান বলেছেন, এই একটি অর্থহীন রায়। এ ছাড়া দেশটির রাজনৈতিক বিশ্লেষক মোশাররফ জাইদি ইমরানকে অযোগ্যতা করার রায়কে ‘একটি রসিকতা’ বলে অভিহিত করেছেন।
সাবেক ইসিপি সচিব কানওয়ার দিলশাদ এটিকে ইমরানের জন্য একটি মৃদু শাস্তি বলে অভিহিত করেছেন। এ ছাড়া ইমরানের বিরুদ্ধে এই নিষেধাজ্ঞা আজীবনের জন্য নাকি সীমিত সময়ের- তা তাৎক্ষণিকভাবে এই রায়ে স্পষ্ট হয়নি। রায়ের প্রতিক্রিয়ায় ইমরান খান বলছেন, এ বিষয়টি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
এখন সময়েই অপেক্ষা এই রায়ের মাধ্যমে ইমরানকে কতটা বশে আনে যায়। গত বছর এপ্রিল মাসে পার্লামেন্টে এক অনাস্থা ভোটে হেরে যাবার পর ইমরান খান ক্ষমতাচ্যুত হন।