বিশ্বের সেরা চলচ্চিত্র হিসেবে স্বীকৃতি পেল সত্যজিৎ রায় নির্মিত আইকনিক সিনেমা ‘পথের পাঁচালী’। ২১ অক্টোবর কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের নির্মিত বিশ্ব বিখ্যাত এই ছবি “ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ ফিল্ম ক্রিটিকস” এর পক্ষ থেকে সর্বকালের সেরা ভারতীয় চলচ্চিত্র হিসাবে স্বীকৃতি পেল৷ বাঙালিদের গর্বের যেন অন্ত শেষ নেই।
বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) বিশেষ এই তালিকা প্রকাশ করেছে ফিপরেস্কি-ইন্ডিয়া বিভাগ। সংগঠনটির ৩০ জন সদস্যের ভোটে তালিকাটি প্রস্তুত করা হয়েছে। এতে স্থান পেয়েছে দশটি সিনেমা। এর মধ্যে পাঁচটি হিন্দি, তিনটি বাংলা, একটি মালায়লাম ও একটি কন্নড় ভাষার সিনেমা। জনপ্রিয় ইন্ডাস্ট্রি তামিল ও তেলেগুর কোনও সিনেমা তালিকায় স্থান পায়নি।
১৯৫৫ সালের এই ফিল্মটি ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসের শীর্ষ দশটি চলচ্চিত্রের মধ্যে এক নম্বর স্লট পেয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব ফিল্ম ক্রিটিকস (ফিপরেস্কি)-ইন্ডিয়া দ্বারা জারি করা একটি প্রেস রিলিজ অনুসারে, এই উদ্যোগটি গোপনে পরিচালিত করা হয়েছিল। পথের পাঁচালী” ছবিতে অভিনয় করেছিলেন, সুবীর ব্যানার্জী, কানু ব্যানার্জী, করুণা ব্যানার্জি, উমা দাশগুপ্ত, পিনাকী সেনগুপ্ত এবং চুনিবালা দেবী।
১৯৫৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রযোজিত ও সত্যজিৎ রায় পরিচালিত এই চলচ্চিত্র আজও বাঙালির মনে-প্রাণে আইকনিক। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস পথের পাঁচালী অবলম্বনে নির্মিত এই ছবিটি সত্যজিৎ রায় পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র। পথের পাঁচালীতে মুখ্য চরিত্র অপুর শৈশবকে কেন্দ্র করে বিংশ শতাব্দীর বিশের দশকের বাংলার একটি প্রত্যন্ত গ্রামের জীবনধারা এই ছবিতে চিত্রায়িত করা হয়েছিল। তবে এই চলচ্চিত্র নির্মাণের যাত্রা একেবারেই সুদৃঢ় ছিল না। জানা যায়, প্রয়োজনীয় অর্থের সমস্যা থাকায় এই ছবির নির্মাণকার্য ব্যাহত হয় এবং দীর্ঘ তিন বছর পরে তা সম্পূর্ণ হয়।
১৯৫৫ সালের ৩রা মে নিউইয়র্ক শহরের মিউজিয়াম অফ মডার্ণ আর্টের একটি প্রদর্শনীতে চলচ্চিত্রটি প্রথম মুক্তি পায়। এবং সেই বছরই কলকাতায় মুক্তি পায় এই ছবি। দর্শক ও সমালোচকরা চলচ্চিত্রটির দারুণ প্রশংসা করেছিলেন। স্বাধীন ভারতে নির্মিত পথের পাঁচালী ছিল প্রথম চলচ্চিত্র যা আন্তর্জাতিক মনোযোগ টানতে সক্ষম হয়েছিল। এটি ১৯৫৫ সালে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ১৯৫৬ কান চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠ মানবিক দলিল পুরস্কারসহ বহু পুরস্কার লাভ করে, যার ফলে সত্যজিৎ রায়কে ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতাদের মধ্যে একজন বলে গণ্য করা হয়