অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। একটি ছবির সাফল্যে নিজের ক্যারিয়ারের অঙ্কে আমূল বদলে ফেলেছেন। ভাবনার জায়গায় বাঁধন হয়তো আগের জায়গাতেই আছেন। কিন্তু সর্বক্ষেত্রে তার গ্রহণযোগ্যতা বেড়ে গেছে তুমুলভাবে। কীভাবে এসব উপভোগ করছেন? কথা বললেন ইত্তেফাকের সাথে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তারিফ সৈয়দ।
অনেকেরই প্রশ্ন এই যে, সিনেমার জন্য সাফল্য আসলেও বাঁধনের হাতে সিনেমা কম। ক্যারিয়ারের এই বৃহস্পতি সময়ে এ ধরনের মন্তব্যের সাথে কী আপনি একমত?
আমি তো নিজেই বলেছি, আমার কাজ কমে যেতে পারে। আর আমি কিন্তু উচ্চাভিলাশী নই। আমার চাওয়া পাওয়া ভীষণ সীমিত। তবে ভালো কাজ করতে চাই। আমি সব ডিরেক্টরের উদ্দেশ্যেই বলতে চাই যে একটি পূর্ণ রোমান্টিক ফিল্ম আমি করতে চাই। এমন না যে আমি ভালোবাসার গল্পে অভিনয় করিনি। প্রচুর নাটক করেছি। কিন্তু সেভাবে যেন ভাবাই হচ্ছে না আমাকে। গল্পগুলোই মনের মতো পাচ্ছি না। তাই আমি বারবার করেই বলতে চাই, একটি পরিপূর্ণ রোমান্টিক ছবিতে কাজ করতে চাই আমি।
চলচ্চিত্রের এ সময়ের নির্মাতাদের সাথে যোগাযোগ কেমন? স্ক্রিপ্ট নিয়ে বসা হয় নিশ্চয়ই…
এসেছে অফার বেশ কিছু। এখন আমরা কী করি, ইন্টারভিউতে বলি, আমার ৪টি ছবির কথা চলছে। আরো ৫টি ছবি নিয়ে বসেছি। এসব মিথ্যা কথা আমি বলতে চাই না। আমার প্রশ্ন ইন্ডাস্ট্রি কী সেই জায়গায় গিয়েছে আমাদের? যাইনি তো! তাই এসব মিথ্যে বড় বড় কথা বলে ফেইক হতে চাই না। চরকী’র একটি কাজ করলাম, ওরা ভীষণ যত্ন নিয়ে কাজটি করেছে। খুবই এনজয় করেছি। দেখা যাক।
আপনি উপমহাদেশের সব ধরনের প্রডাকশনে কাজ করেছেন। ঢালিউড, বলিউড, টলিউড। বলা হয় প্রফেশনালিজমের ক্ষেত্রে আমরা অনেকটা পিছিয়ে। এই অভিযোগটি কতটা সঠিক?
আমার মত ভিন্ন। আমার তো টলিউডে কাজ করতে গিয়ে কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা হয়েছিল। খুব পার্থক্য মনে হয়নি। বরং কিছু সমস্যা ফেস করেছি। আর বলিউড প্রডাকশনে কাজ করার ক্ষেত্রে আমি বলবো ওদের বাজেট, বাজার সবই তো বিশাল। তাই তুলনা করাটা অপ্রাসঙ্গিক। ওরা সারাদিনে ৩/৪ টা সিকোয়েন্স করে। প্রি-প্রোডাকশনে সব আলাদা আলাদা টিম। যে হয়তো আমার হেয়ারটা রেডি করছে, ও মেকাপ, লাইট নিয়ে ভাবছেই না। আমরা এত সঙ্কটের ভেতরেও দারুণ কাজ দেখাই। কারণ আমাদের দেশে প্রচুর মেধাবী নির্মাতা। আর আমি আগেই বলেছি বাজেট আমার দৃষ্টিতে কোনো আলোচনা হতে পারে না। মূল বিষয় হলো গল্প। আমি কোন গল্পটা কীভাবে দেখাতে চাইছি। এর বড় উদাহরণ আমার ‘রেহানা মরিয়ম নূর’।
সাম্প্রতিক কোন কাজটা খুব নজর কাড়লো? সমসাময়িকদের কাজ দেখা হয়?
আমি নিয়মিত সময় পেলেই সবার কাজ দেখি এবং ভালো লাগলে সাথে সাথে ফোন করে জানাই। নূহাশের ‘মশাড়ি’ দেখলাম। আমি দেখেছি আমেরিকায়। আমার নিজেরও ছবি সেই ফেস্টিভ্যালে চলছিল। ব্যাক টু ব্যাক মশাড়ি দেখাবে। আমার তখন লাগেজ নিয়ে হোটেলে চেক ইন করার কথা। কিন্তু শিডিউলে দেখলাম তখনই মশাড়ি দেখানো হবে। আমি জাস্ট বসে গেলাম এবং সিনেমা হলে ভয়ে চিত্কার চেঁচামেচি করেছিলাম। ফোন করে জানিয়েছি নূহাশকে। ও তখন কাছাকাছি কোনো স্টেটে ছিল।
সর্বশেষ প্রশ্ন, বিয়ে, সংসার এসবে আগ্রহ বা ইচ্ছে হারিয়ে ফেলেছেন?
কে বললো হারিয়েছি। তবে এখন একদম ইচ্ছে নেই। জাস্ট কাজটা নিয়ে থাকতে চাই। আর প্রচুর সলো ট্রাভেল করতে চাই। আমার মেয়েরও ১৮ হলে ওকে একা বাইরে ঘুরতে পাঠিয়ে দেবো। একা না ঘুরলে এই পৃথিবীর সন্তান বলে নিজেকে চেনা যায় না। তখন মনে হয় এই পৃথিবীতে আমার অনেক কিছু করার আছে!