শেষ ওভারে রোমাঞ্চ ছড়িয়ে সুপার টুয়েলভের রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়ে বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু করল ভারত। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে উপস্থিত প্রায় লাখ দর্শক তখন দারুণ উৎকণ্ঠায়। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি ভারতই জিতে নেয়। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৬ রান। কোহলি-বীরত্বে সেটাই তুলে নেয় ভারত, মহারণে ভারত শেষ হাসি হাসে চার উইকেটের ব্যবধানে।
পাকিস্তানের দেয়া টার্গেটে খেলতে নেমে জয়ের জন্য শেষ বল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে ভারতকে। তবে ভারতের জয়ের নায়ক ছিলেন বিরাট কোহলি। তিনি শেষ পর্যন্ত দলকে জয় এনে দিয়ে মাঠ ছাড়েন। কোহলি খেলেন ৫৩ বলে ৮২ রানের ইনিংস। তাকে যোগ্য সহায়তা দেন হার্দিক পান্ডিয়া। তিনি জয় থেকে ১৬ রান দূরে থাকতে নওয়াজের বলে বিদায় নেন।
নাটকীয় উত্তেজনাপূর্ণ এই ম্যাচে আগে ব্যাট করে ইফতেখার ও শান মাসুদের ফিফটিতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৫৯ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তান। অর্থাৎ জয়ের জন্য ভারতের দরকার পড়ে ১৬০ রান।
সেই লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৩১ রানেই ৪ উইকেট খুইয়ে বসে ভারত। পাকিস্তানি বোলার-ফিল্ডারদের সামনে একে একে সাজঘরে ফেরেন লোকেশ রাহুল (৪), রোহিত শর্মা (৪), সূর্যকুমার যাদব ১৫ ও অক্সার প্যাটেল (২)।
এরপরই ক্রিজে এসে কোহলির সঙ্গে জুটি বাঁধেন হার্দিক পান্ডিয়া। বিপর্যয় সামলে নিয়ে পাকিস্তানি বোলাদের চার-ছক্কা মেরে তুনোধুনো করে ৭৮ বলে ১১৩ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের নাগালে নিয়ে যান দুজনে। এরই মাঝে নিজের ৩৪তম ফিফটি পূরণ করেন বিরাট।
যাতে জয়ের জন্য শেষ ওভারে ১৬ রান দরকার পড়ে ভারতের। কিন্তু নাটকীয় ওই শেষ ওভারের প্রথম বলেই আউট হয়ে ফেরেন ৩৭ বলে ৪০ করা হার্দিক। তবুও দমে যায়নি ভারত।
মোহাম্মদ নওয়াজের করা ওই ওভারের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে ১ ও ২ রান নিলে শেষ তিন বলে ১৩ রান দরকার পড়ে দলটির। এ অবস্থায় ফুলটস ডেলিভারি দিলে ছক্কা হাঁকান কোহলি। তবে বলটি ওভার ফুলটস হলে নো-বল কল করেন আম্পায়ার। যার ফলে ৩ বলে ১৩ থেকে ভারতের প্রয়োজন দাঁড়ায় ৩ বলে ৬ রান।
এমন অবস্থায় ওয়াইড বল দেন নওয়াজ। পরের বলে বোল্ড হলেও ফ্রি হিটের কারণে দৌড়ে ৩ রান নেন বল স্ট্যাম্পে লেগে সীমানার কাছে গেলে। পরের বলে স্ট্যাম্পিং আউট হন দিনেশ কার্তিক। ফলে শেষ বলে দরকার পড়ে ২ রানের। কিন্তু আবারও ওয়াইড দিলে ১ বলে ১ রানের সমীকরণটি সহজেই মিলিয়ে ফেলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন।
আর শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচটি ভারত জিতে নেয় ৪ উইকেটে। ম্যাচ জয়ের নায়ক বিরাট কোহলি অপরাজিত থাকেন ৮২ রানের ইনিংস খেলে। তার ৫৩ বলের এই ম্যাচজয়ী ইনিংসে ছিল ছয়টি চারের সঙ্গে চারটি ছক্কার মার।
এর আগে পাকিস্তানের হয়ে ফিফটি হাঁকান ইফতেখার আহমেদ ও শান মাসুদ। প্রথম জন ৩৪ বলে ৫১ করে আউট হলেও দ্বিতীয়জন ৫টি বাউন্ডারির সাহয্যে ৪২ বলে নট-আউট থাকেন ৫২ রান করে।
ভারতের হয়ে ৩টি করে উইকেট নেন হার্দিক পান্ডিয়া ও আর্শদ্বিপ সিং।