প্রবাসী আয় ও রপ্তানিতে সব ব্যাংকে ডলারের দর নতুন করে নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন রেমিট্যান্সে প্রতি ডলারের সর্বোচ্চ দর হবে ১০৭ টাকা, আগে যা ছিল ১০৭ টাকা ৫০ পয়সা। তবে রপ্তানির ক্ষেত্রে ডলারের দর ৫০ পয়সা বাড়িয়ে ৯৯ টাকা ৫০ পয়সা করা হয়েছে। গতকাল রবিবার অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ অথরাইজড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) বৈঠকে বসে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রবাসী আয়ে ডলারের এই নতুন দর ১ নভেম্বর থেকে সব ব্যাংকে কার্যকর হবে। তবে রপ্তানি নগদায়ন বিল কার্যকর হবে আজ সোমবার থেকে।
আমদানির ক্ষেত্রে আগের মতোই রেমিট্যান্স আহরণ ও রপ্তানি বিল নগদায়নে ব্যাংকগুলোর গড় খরচের সঙ্গে এক টাকা যোগ করে আমদানিকারকের কাছে ডলার বিক্রি করবে ব্যাংকগুলো। অর্থাৎ স্প্রেড সীমা হবে এক টাকা।
ডলার নিয়ে প্রায় এক মাস পর বৈঠক করল এই দুই সংগঠন। এর আগে সবশেষ ২৬ সেপ্টেম্বর বৈঠকে প্রবাসী আয়ে ডলারপ্রতি ৫০ পয়সা কমিয়ে ১০৭ টাকা ৫০ পয়সা করা হয়। ঐ বৈঠকে প্রবাসী আয় ছাড়া রপ্তানি ও আমদানির ক্ষেত্রে ডলারের দরে কোনো পরিবর্তন করা হয়নি।
সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন বাফেদা চেয়ারম্যান ও সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফজাল করিম। এ সময় এবিবি চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেনসহ এই দুই সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রবাসী আয়ে ডলারের দর ৫০ পয়সা কমানোর কারণ হিসেবে আফজাল করিম বলেন, বর্তমানে ডলারের ওপর চাপ কমে আসায় নতুন দর নির্ধারণ করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে নতুন দর কার্যকর হবে। যেসব ব্যাংকে ডলার কেনা রয়েছে তারা ডলারের দর এই সময়ের মধ্যে সমন্বয় করবে।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এটাই হবে আন্তঃব্যাংক ডলার বিনিময় হার। এতে আমদানিকারকের খরচ কমবে বলে মনে করছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা।
অস্থির ডলার বাজার নিয়ন্ত্রণে ৮ সেপ্টেম্বর এবিবি ও বাফেদার সঙ্গে আলোচনায় বসে বাংলাদেশ ব্যাংক। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় ডলারের একক রেট সংগঠন দুটি নিজেরা আলোচনা করে ঠিক করবে।
ঐ বৈঠকে ডলারের বাজার পর্যবেক্ষণ ও আমদানি-রপ্তানি পরিস্থিতি বুঝতে সময় নেয় ব্যাংক নির্বাহী ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকগুলোর এ দুই সংগঠন।
পরে ১১ সেপ্টেম্বর এবিবি ও বাফেদা বৈঠক করে। তাতে রপ্তানি আয়ে প্রতি ডলারের সর্বোচ্চ দাম ৯৯ টাকা ও প্রবাসী আয়ে ১০৮ টাকা দাম বেঁধে দেওয়া হয়। ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ঐ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়। আর এর মধ্য দিয়ে ডলারের দাম বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর পরিবর্তিত বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে দেশে দেশে মুদ্রার দরপতনের যে সমস্যা দেখা দিয়েছে, তার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। সাত মাসের কম সময়ে দেশের মুদ্রার দর পতন হয়েছে ২৫ শতাংশের বেশি। এই যুদ্ধ শুরুর আগে ডলারের দর ছিল ৮৪ থেকে ৮৫ টাকা।