গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসারণ হ্রাসে বিশ্বের দেশগুলোর সরকারের দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী উষ্ণায়ন কমানোয় একেবারেই যথেষ্ট অগ্রগতি না হওয়ায় এ শতাব্দীতে তাপমাত্রা গড়ে ২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যাওয়ার মুখোমুখি হয়েছে বিশ্ব। জাতিসংঘের নতুন একটি গবেষণা প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
তাপমাত্রায় জলবায়ু পরিবর্তনের যে প্রভাব পড়েছে সেটি খতিয়ে দেখে গবেষণায় বলা হয়েছে, বর্তমানে বিশ্বের দেশগুলো যে জলবায়ু নীতি অনুসরণ করছে তাতে এ শতাব্দীতে উষ্ণায়ন ঐ পরিমাণ বেড়ে যাবে। এ বছর ৬ থেকে ১৮ নভেম্বরে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে মিশরের শার্ম আল-শেখ এ অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ২৭তম জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন (কপ২৭ বা কনফারেন্স অব পার্টিজ-২৭)। সম্মেলনে বিশ্ব উষ্ণায়ন প্রাক-শিল্প স্তরের তুলনায় ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামিয়ে এনে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে বজায় রাখার সম্মিলিত প্রতিশ্রুতিতে পৌঁছার চেষ্টা চলবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উষ্ণায়ন ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার হয়ে গেলে গোটা বিশ্ব জুড়ে মানুষের ওপর এর বিপজ্জনক প্রভাব পড়বে। কিন্তু বিশ্ব এ মুহূর্তে তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে বজায় রাখার মতো অবস্থায় নেই। গত বছরের প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘটনাগুলোর পর এ বাস্তবতা আরো প্রকট হয়েছে।
গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, গতবছরের কপ-২৬ জলবায়ু সম্মেলনের পর থেকে বিশ্বের দেশগুলোর সরকারের কার্বন নিঃসারন কমানোর পরিকল্পনায় দুঃখজনকভাবে পর্যাপ্ত অগ্রগতি হয়নি। এ পরিস্থিতিতে জরুরিভিত্তিতে সমাজে রূপান্তর ঘটানো গেলেই কেবল বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব। বৃহস্পতিবার এই বার্ষিক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি (ইউএনইপি)। এতে বলা হয়েছে, তাপমাত্রার বেঁধে দেওয়া সীমা (১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এখন ভেস্তে যাওয়ার মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েছে।
গত জলবায়ু সম্মেলনে দেওয়া প্রতিশ্রুতি মোতাবেক নতুন করে কার্বন নিঃসারন কমানোর যে চেষ্টা শুরু হয়েছে তাতে ২০৩০ সাল নাগাদ বিশ্বে গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসারণ কমবে ১ শতাংশেরও কম। অথচ বিজ্ঞানীরা বলছেন, তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমিত রাখতে হলে গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসারণ ৪৫ শতাংশ কমা দরকার। তাই বর্তমানে বিভিন্ন দেশের সরকারের যে জলবায়ু পরিকল্পনা আছে তাতে আরো গতি সঞ্চার না করা গেলে এ শতাব্দীর শেষ নাগাদই তাপমাত্রা ২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যেতে পারে, যা গত বছরের আনুমানিক হিসাবের চেয়ে ০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।