আওয়ামী লীগের নেতৃত্বধীন ১৪ দলের নেতারা বলেছেন, তাদের জোট ঐক্যবদ্ধ আছে এবং থাকবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব জোটগতভাবেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতকে মোকাবিলা করা হবে। নির্বাচনে জিতে আবারও তারা সরকার গঠন করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। গতকাল সোমবার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক সমাবেশে ১৪ দলীয় জোটের নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৪ দল ঐক্যবদ্ধ আছে। দেশ বাঁচাতে হলে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। শেখ হাসিনাকে আবারও ক্ষমতায় বসাতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সবাইকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি। স্বাধীনতাবিরোধীরা হুমকি দিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ঐক্যবদ্ধ থাকলে কেউ হারাতে পারবে না। বিজয়ের বন্ধনে আবদ্ধ থাকব আমরা। শেখ হাসিনা একজন ব্যক্তি নন, তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতিনিধি। তিনি হেরে গেলে বাংলাদেশ হেরে যাবে। বিএনপির উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা গত ১৩ বছরে ১৩ মিনিট আন্দোলন করতে পারেনি, তারা এখন কী আন্দোলন করবে? তাদের আন্দোলনের স্বপ্ন কর্পূরের মতো উবে যাবে।
সভাপতির বক্তব্যে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, আমার দল ১৪ দলীয় জোটে আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আগামী নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে অংশ নেব। এই নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি বিজয়ী হবে এবং সরকার গঠন করবে। দেশের সংকটকে পুঁজি করে স্বাধীনতাবিরোধীরা নির্বাচনকে বানচাল করতে চায়। তাদের মোকাবিলা করা হবে। স্বাধীনতাবিরোধীরা নির্বাচন বানচাল করে দেশের ক্ষমতা দখল করতে চায় উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, সেটি হতে দেওয়া হবে না। আমরা দেশকে তালেবান বানাতে দেব না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশকে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় এগিয়ে নিতে হবে। এই লড়াইয়ে তার পাশে থাকবে জাসদ। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ঐক্যবদ্ধ থাকলে আমরা বিজয়ী হব।
সমাবেশে জাসদের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বাণী পাঠ করে শোনান দলটির সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার। তিনি বলেন, আমরা শেখ হাসিনাকে তার বাণীর জন্য কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। ১৪ দল ঐক্যবদ্ধ থাকলে বিএনপি-জামায়াত চক্র আমরা মোকাবিলা করতে পারব। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারব।
জাতীয় পার্টির (জেপি) সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ঐক্য ধরে রাখতে হবে। বিএনপি-জামায়াত দেশকে আবার উলটো পথে নিয়ে যেতে চায়। সুতরাং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করতে আমাদের একতাবদ্ধ থাকতে হবে। আমাদের ঐক্য অটুট আছে। আওয়ামী লীগকে কাউয়া সামলাতে হবে।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, বিএনপি-জামায়াতকে ক্ষমতা থেকে কীভাবে নামাতে হয়, সেই অভিজ্ঞতা আমাদের আছে। এখন তারা সমাবেশ করে সরকার উত্খাতের হুমকি দিচ্ছে। আমরা তাদের দেখে নিতে চাই। ১৪ দলকে ধরে রাখতে হবে, ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। দেশের উন্নয়নের ধরাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে। বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে আমাদের কাজ করতে হবে।
জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর সভাপতিত্বে সভায় বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) ইসমাইল হোসেন, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ড. শাহাদাত হোসেন, বাসদের আহ্বায়ক রেজাউর রশিদ খান, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের ডা. অসিত বরণ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।