দেশের মুল্যস্ফীতি ও মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তথ্য প্রকাশে আরো হালনাগাদ উপাত্ত ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। বর্তমানে যে মূল্যস্ফীতির তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে সেটি ১৫ বছর আগের ভিত্তিবছর ধরে করা হচ্ছে। মুল্যস্ফীতি তথ্যও সময়মতো প্রকাশ করা হচ্ছে না। গত আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসের মূল্যস্ফীতির তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে। তাছাড়া জিডিপির তথ্য এক বছর পর পর বাজেটের আগে প্রকাশ করা হচ্ছে। অর্থনীতির চলমান অবস্থা বিশ্লেষণে ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে জিডিপির তথ্য প্রকাশ করতেও তাগিদ দিয়েছে সংস্থাটি।
আইএমএফ প্রতিনিধিদল গতকাল মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সঙ্গে বৈঠক করেছে।
বিবিএসএর সংশ্লিস্ট সূত্রে জানা যায়, এখন জিডিপি প্রবৃদ্ধি পরিমাপ করা হয় ২০০৫-০৬ অর্থবছরকে ভিত্তি ধরে। এটি পরিবর্তন করে ২০১৫-১৬ অর্থবছর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল ২০১৭ সালে। কিন্তু গত পাঁচ বছরেও ভিত্তি বছর পরিবর্তন করতে পারেনি সংস্থাটি। এর ফলে পরিসংখ্যানগত তথ্য নিয়ে নানা জটিলতা তৈরি হচ্ছে। বিশ্লেষকরাও পরিসংখ্যান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বর্তমানে বিবিএস বছর শেষে জিডিপির একটা সাময়িক এবং পূর্ববর্তী বছরের পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রকাশ করে। এ পদ্ধতি বাতিল করে প্রবৃদ্ধির তথ্য ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে প্রকাশ করার পরামর্শ দিয়েছে আইএমএফ।
উল্লেখ্য, গত আগস্ট মাসের মূল্যস্ফীতির তথ্য দুই মাসেও প্রকাশ করা হয়। এ বিষয়ে আইএমএফ জানতে চেয়েছে। বৈঠকে বিবিএস কমর্তারা জানিয়েছেন, তথ্য প্রকাশ করতে কয়েক ধাপে অনুমোদন প্রয়োজন হয়। এবার অনুমোদনে দেরি হয়েছে। তবে এবার মূল্যস্ফীতি গত ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এই দুই মাসে গড় মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, আইএমএফ এর এশীয় ও প্যাসিফিক বিভাগের প্রধান রাহুল আনন্দের নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধিদল গত ২৬ অক্টোবর থেকে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে বৈঠক করছে। তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল বিবিএস কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে। আইএমএফের কাছে গত জুলাইয়ে ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ চেয়েছে বাংলাদেশ। ঋণ নিয়ে আলোচনা করতেই সংস্থার দলটি এখন ঢাকায়। প্রতিনিধিদল অর্থমন্ত্রণালয়, বাণিজ্যমন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআর, জ্বালানি বিভাগসহ বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করে যাচ্ছে।