২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়ায় ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর থেকেই এক আলাদা রোমাঞ্চ কাজ করে বাংলাদেশ-ভারত লড়াইয়ে। নিদাহাস কাপ ও এশিয়া কাপের ফাইনালে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের স্মৃতি আজো উজ্বল। তবে দিন শেষে সাফল্যের পাল্লা ভারী ভারতের দিকেই। বাংলাদেশের বিপক্ষে এ পর্যন্ত ১১টি আন্তর্জাতিক টি টোয়েন্টি ম্যাচের ১০টিতেই জিতেছে ভারত। বিশ্বকাপের অন্যতম দাবিদারও। সেই তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে টাইগাররা। তাই ভারতের বিপক্ষে জিতলে অঘটনই হবে বলে মনে করছেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আজ আরেকটি কঠিন লড়াইয়ের আশায় মাঠে নামবে প্রতিবেশী দুই দেশ। সেমিফাইনালের সম্ভাবনা আছে দুই দলের হাতেই। তবে অতদূর ভাবছেন না সাকিব। তার ভাবনায় বিশ্বকাপ শিরোপা নয়, কেবল আজকের ম্যাচটিই কাজ করছে। গতকাল অ্যাডিলেড ওভাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে এমন কথাই শুনিয়েছেন অধিনায়ক, ‘ভারত বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম দাবিদার। ওরা এখানে বিশ্বকাপ জিততে এসেছে। আমরা এখানে বিশ্বকাপ জিততে আসিনি, দাবিদার বলেও কেউ মনে করছে না। আমরা পরিস্থিতি বুঝতে পারছি। ভারতকে যদি আমরা হারিয়ে দিই সেটা অঘটন হবে। নিজেদের সেরাটা খেলার চেষ্টা করব, যাতে অঘটন ঘটাতে পারি। কিন্তু আমরা যদি ভালো খেলি, আমাদের যদি দিন থাকে তাহলে কেন জিততে পারব না? এই বিশ্বকাপে আমরা দেখেছি, আয়ারল্যান্ড ইংল্যান্ডকে হারিয়েছে, পাকিস্তানকে জিম্বাবুয়ে হারিয়েছে। এরকম একটা রেজাল্ট হলে অবশ্যই আমরা খুশি হব।’
ভারতকে ভালো বোলিং শক্তির দল উল্লেখ করে সাকিব বলেন, ‘এই বিশ্বকাপে যদি দেখেন প্রতিটা টিমকেই তারা ১৬০-এর নিচে বেঁধে রেখেছে। (ভারতের সঙ্গে) আমাদেরকে অবশ্যই খুব ভালো ব্যাটিং করতে হবে। ভারতের কয়েক জন বিশ্বমানের বোলার রয়েছে। এদের বিরুদ্ধে ১৬০/১৭০ রান করতে আমাদের অবশ্যই অনেক ভালো ব্যাটিং করতে হবে। আমাদের সেরা ক্রিকেটটাই খেলতে হবে।’ ভারত ম্যাচ সামনে রেখে বাড়তি চাপে নেই উল্লেখ করে সাকিব বলেন, বিশ্বকাপের প্রতিটা ম্যাচই সমান গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটা ম্যাচই খেলতে চাই একই অ্যাপ্রোচ নিয়ে। কোন দেশের সঙ্গে কোন সিচুয়েশনে খেলা হচ্ছে, সেটা চিন্তার বিষয় নয়। শুধু খেলাটা উপভোগ করতে চান। ’
ক্লোজম্যাচ জিতলে টিমের মনোবল চাঙ্গা হয়, সেটা ক্রিকেটের যে কোনো ফরমেটেই হোক না কেন। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে আগের ম্যাচটি তেমনভাবেই দলকে উজ্জীবিত করেছে জানিয়ে সাকিব বলেন, ‘টি-টোয়েন্টি ম্যাচে লড়াই অনেক বেশি হয়। ম্যাচের ফয়সালা সাধারণত শেষের দুই ওভারে হয়ে থাকে। তাই প্রায়ই ক্লোজম্যাচ হয়। আগে ক্লোজ ম্যাচগুলোয় হেরে যেতাম। এখন জেতা শুরু করেছি। সেই অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শিখেছি। আমি বলব, এখানে আমাদের একটু উন্নতি হয়েছে।’
এই বিশ্বকাপে বাংলাদেশ এক জন বোলার কম নিয়ে খেলছে। ভারতের সঙ্গে ম্যাচে এই ঘাটতিটা পূরণের পরিকল্পনা জানতে চাইলে সাকিব বলেন, ‘দেখুন ঘাটতি থাকলে আমরা তো পুরো ২০ ওভার খেলতে পারতাম না। এই বছরের রেকর্ড যেটা বলে যে, মোসাদ্দেক বোধ হয় একটা সিরিজে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে একটা টি টোয়েন্টি ম্যাচে ৫ উইকেটও পেয়েছে। টি টোয়েন্টিতে একটা বোলারের ৫ উইকেট পাওয়া বিরল ব্যাপার। সেখানে তাকে যদি আপনি ‘অকেশনাল বোলার’ মনে করেন, সেটা ভুল।’
বৃষ্টির কারণে ভারতের সঙ্গে খেলার আগের দিন অনুশীলন করতে পারেনি টাইগাররা। এতে কোনো সমস্যা হবে না বলে মনে করেন সাকিব, ‘আপনি যদি বিশ্বকাপ ফুটবল বা ক্রিকেট দেখেন, সেখানে এতো বেশি প্রস্তুতির সুযোগ থাকে না। এর মধ্যেই যতটুকু প্রস্তুতি নেওয়া যায়, মানসিকভাবে চাঙ্গা থাকা যায় সবাই সেই চেষ্টাই করছে।’
দীনেশ কার্তিক ফিট না হলে আজ ভারতের একাদশে দেখা যেতে পারে রিশাভ পান্টকে। বাজে ফর্মের পরও লোকেশ রাহুলের ওপর আস্থা আছে দ্রাবিড়ের। তবে তার দুঃসময়ের ধারাবাহিকতা চলতে থাকুক, এমনটা নিশ্চয়ই চাইবে সাকিব আল হাসানের দল।