ডলারসংকট সমাধানে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকার। এ লক্ষ্যে রেমিট্যান্সের ডলারের দর নির্ধারণ করে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ অথরাইজড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা)। খোলাবাজারে দামের পার্থক্যের কারণে বৈধ পথে অর্থ পাঠাতে আগ্রহ হারায় প্রবাসীরা। ফলে বরাবরের মতো অক্টোবরেও রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে গেছে। তবে অক্টোবরে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন সৌদি আরবের প্রবাসীরা। দেশটি থেকে এ সময় প্রবাসী আয় আসে ৩০ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
রেমিট্যান্স পাঠানোয় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রবাসীরা। দেশটি থেকে অক্টোবরে রেমিট্যান্স আসে ২৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। এছাড়া তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে আরব আমিরাত। দেশটি থেকে এ সময় ১৭ কোটি ৬ লাখ টাকা প্রবাসী আয় এসেছে।
অক্টোবরে যুক্তরাজ্য থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ১১ কোটি ০৪ লাখ টাকা, কুয়েত থেকে ১৩ কোটি ২৪ লাখ, কাতার থেকে ১৪ কোটি ১৮ লাখ, মালয়েশিয়া থেকে ৭ কোটি ৫ লাখ, ইতালি থেকে ৮ কোটি ৭১ লাখ, ওমান থেকে ৪ কোটি ৯৬ লাখ এবং বাহরাইন থেকে ৫ কোটি ৪ লাখ টাকা রেমিট্যান্স আসে।
দেশে ব্যাপক ডলারসংকটের প্রভাবে কমছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। এসব অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই রেমিট্যান্সে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখা দিয়েছে। অক্টোবরে গত আট মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
অক্টোবর মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১৫২ কোটি ৫৪ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১০৪ টাকা হিসেবে) এর পরিমাণ ১৫ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা। এর আগের ২০২১-২২ অর্থবছরের অক্টোবরে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৬৪ কোটি ৬৮ লাখ ডলার। সে হিসেবে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে এবার ১২ কোটি ১৪ লাখ ডলার কম এসেছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ১৫৩ কোটি ৯৫ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। গত অর্থবছরের একই মাসের চেয়ে তা ১ কোটি ৪১ লাখ ডলার কম।
চলতি বছরের এপ্রিল থেকে দেশে ডলারের সংকট দেখা দেয়। এরপর ব্যাংকগুলো বেশি দাম দিয়ে ডলার সংগ্রহ শুরু করে। ফলে চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) ২০০ কোটি ডলারের বেশি প্রবাসী আয় এসেছিল। প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্সের ওপর আড়াই শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। এরপরেও রেমিট্যান্সের প্রবাহ কোনোভাবেই বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না।
এর আগে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ব্যাংকের মাধ্যমে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল। এটি তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম। আগের ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।