কাতারের মাটিতে বিশ্ব ফুটবলের মহারণ বসতে বাকি আর মাত্র ১২ দিন। এর মধ্যেই সকল প্রস্তুতি শেষ করেছে কাতারের কর্তৃপক্ষ আর বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা।
‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’র মহারণে দলগুলো কাতারজুড়ে যে ৮টি স্টেডিয়ামে বিশ্ব শ্রেষ্টত্বের লড়াইয়ে নামবে প্রস্তুত হয়ে গেছে সেগুলোও। ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যয়বহুল বিশ্বকাপের স্টেডিয়ামগুলো তৈরিতেই খরচ হয়েছে সিংহভাগ অর্থ।
তৈরি কাতার, তৈরি স্টেডিয়াম, ৩২টি দলও নিজেদের গুছিয়ে নেওয়ার শেষ সময়ের কাজে ব্যস্ত। অপেক্ষা শুধু বিশ্বকাপের স্টেডিয়ামের সবুজ ঘাসে বল পায়ে কিক-অফের। তার আগে চলুন জেনে নেওয়া যাক ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যয়বহুল বিশ্বকাপের স্টেডিয়ামগুলো সম্পর্কে।
কাতার বিশ্বকাপের ৮ স্টেডিয়াম নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদনের আজ সপ্তম পর্বে থাকছে আল-বায়াত স্টেডিয়াম নিয়ে বিস্তারিত।
আল-বায়াত স্টেডিয়াম, আল-খোর (৬০ হাজার) :
কাতারের রাজধানী দোহা থেকে ৩৫ কি.মি. উত্তরের আল খোর শহরে অবস্থিত আল-বায়াত স্টেডিয়ামেই স্বাগতিক কাতার বনাম ইকুয়েডরের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে উদ্বোধন হবে বিশ্বকাপের। লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামের পর কাতার বিশ্বকাপে সবেচেয়ে বেশি নজর থাকবে এই আল-বায়াত স্টেডিয়ামের দিকেই।
কাতারের বড় ভেন্যুগুলোর একটি এই আল-বায়াত স্টেডিয়াম। ৬০ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতার এই স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী ম্যাচ আর একটি সেমিফাইনালসহ সর্বমোট ৯টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে নির্মিত এই স্টেডিয়ামটি ২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর ফিফা আরব কাপের ম্যাচ দিয়ে উদ্বোধন করা হয়।
আল-বায়াত স্টেডিয়ামটি নির্মিত হয়েছে বেদুঈনদের তাবুর আদলে। স্টেডিয়াম জুড়ে বিশাল তাঁবুর কাঠামোটি বায়েত আল শা’আর-এর নামে নামকরণ করা হয়েছে। এই তাবুর নকশা কাতার এবং উপসাগরীয় অঞ্চলের বেদুঈনদের ব্যবহৃত ঐতিহাসিক তাঁবুগুলোর প্রতিনিধিত্ব করে। বিশ্বকাপের পর স্টেডিয়ামটির তাবুর আকৃতির ছাদ সড়িয়ে ফেলার পরিকল্পনাও রয়েছে।
রাজধানী দোহা থেকে বিশ্বকাপের অন্য সব ভেন্যুগুলোর চেয়ে এই স্টেডিয়ামে যাতায়াতের ব্যবস্থা সবচেয়ে কষ্টকর বলে বিবেচিত হয়েছে। তবে দোহা থেকে আল-খোরে যাতায়াতের জন্য মেট্রোরেলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সবুজায়ন এবং স্থায়িত্বের দৃষ্টান্তের সঙ্গে আল-বায়াতের নকশায় প্রতিফলিত হয়েছে কাতারের ঐতিহ্য। ভেন্যুটির আশেপাশের পার্ক, হ্রদ আর সুরক্ষিত গ্রিন বেল্ট ভূমি স্টেডিয়াম থেকে সমুদ্র পর্যন্ত বিস্তৃত।
বিশ্বকাপের পর স্টেডিয়ামটির তাবু আকৃতির ছাদ খুলে ফেলে উপরের অংশটি একটি পাঁচ তারকা হোটেলে রূপান্তরিত হবে। এছাড়া এর পাশে তৈরি করা হবে একটি শপিং সেন্টার, জিম, মাল্টিপারপাস হল আর ফুড কোর্ট।