গ্রামবাসীর দাবি, রোববার চোরাকারবারিদের ধাওয়া করতে গিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে বিএসএফ এই কৃষককে ধরে নিয়েছিল।
ফেনীর পরশুরাম সীমান্তের কাঁটাতারের ওপাশে এক ব্যক্তির লাশ পড়ে থাকার খবর জানিয়েছে বিজিবি; যাকে তিন দিন আগে বিএসএফ ধরে নিয়ে গেছে বলে স্বজন ও এলাকাবাসীর অভিযোগ।
তবে লাশটি সীমান্তের ওপাশে হওয়ায় এখনও উদ্ধার করা হয়নি বলে পরশুরাম মডেল থানার ওসি মো. সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন।
স্বজন ও স্থানীয়রা এই মরদেহ ফেনীর পরশুরাম পৌর এলাকার উত্তর গুথুমা গ্রামের মফিজুল ইসলামের ছেলে মেজবাহ উদ্দিনের (৪৭) বলে জানালেও বিজিবি কিংবা পুলিশ এখনও তার পরিচয় নিশ্চিত করেনি।
ফেনীর ৪ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুর রহমান জানান, বুধবার দুপুরে পরশুরাম উপজেলার বাঁশপদুয়া সীমান্ত এলাকায় ভারতের অভ্যন্তরে কাঁটাতারের ৬৪ নম্বর মেইন পিলারের ৯-১০ নম্বর পিলারের একশ গজ ভিতরে জঙ্গলে এক ব্যক্তির মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে বিজিবিকে খবর দেয় গ্রামবাসী।
স্থানীয়দের দাবি, মরদেহটি মেজবাহ উদ্দিনের। ৪৭ বছরের মেজবাহ ফেনীর পরশুরাম পৌর এলাকার উত্তর গুথুমা গ্রামের মফিজুল ইসলামের ছেলে। তিনি পেশায় একজন কৃষক।
গ্রামবাসী জানান, রোববার বিকালে বাঁশপদুয়া গ্রামের সীমান্তবর্তী এলাকায় বাংলাদেশের অংশে ধান কাটছিলেন মেজবাহ উদ্দিন। এ সময় ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী-বিএসএফ ওই এলাকায় চোরাকারবারিদের ধাওয়া করতে গিয়ে বাংলাদেশ অংশে প্রবেশ করে। তখন তারা মেজবাহ উদ্দিনকে পেয়ে আটক করে ধরে নিয়ে যায়।
মেজবাহ উদ্দিনের স্ত্রী মরিয়ম ও তার পরিবার বিষয়টি ওই দিন স্থানীয় বিজিবি ও পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত করে।
স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন সুমন জানান, ওই কৃষককে ধরে নেওয়ার ঘটনায় সোমবার বেলা ১১টা, দুপুর ২টা এবং বিকাল সাড়ে ৫টায় পরপর তিনবার বিজিবি ও ভারতীয় বিএসএফ দ্বি-পাক্ষিক পতাকা বৈঠক করে। তবে বিএসএফ কৃষক মেজবাহ উদ্দিনকে ধরে নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে।
কাউন্সিলর সুমন আরও জানান, বুধবার দুপুরে সীমান্তের ওপারে এক ব্যক্তির লাশ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা সেটি কৃষক মেজবাহ উদ্দিনের বলে নিশ্চিত করেন।
মেজবাহ উদ্দিনের স্ত্রী মরিয়ম আক্তার বলেন, রোববার বিকালে বিএসএফ বাংলাদেশে প্রবেশ করে তার স্বামীকে ‘ধরে নিয়ে গুলি করে হত্যা করেছে’। পরে তার লাশ কাঁটাতারের একশ গজ ভিতরে ভারতের অংশে জঙ্গলের মধ্যে ফেলে দেয়।
বিজিবির লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুর রহমান জানান, ভারতীয় সীমান্তের কাঁটাতারের একশ গজের ভিতরে এক ব্যক্তির মরদেহ দেখতে পাওয়া গেলেও লাশের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
পরশুরাম মডেল থানার ওসি মো. সাইফুল ইসলাম জানান, বুধবার দুপুরে সীমান্তের ওপারে একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখে গ্রামবাসী পুলিশকে খবর দেয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। যেহেতু লাশ পড়ে থাকার স্থান ভারতীয় সীমান্তের ওপারে তাই বিজিবি আইনি পক্রিয়ার মাধ্যমে লাশ উদ্ধার করবে।