এই মহাদেশ থেকেই বিশ্বকাপ ফুটবলের পঞ্চম শিরোপা ঘরে তুলেছিল ব্রাজিল। দক্ষিণ কোরিয়া জাপানের যৌথ আয়োজনে সেবার ট্রফি নিয়ে ঘরে ফিরে ছিল ব্রাজিল। ২-০ গোলে জার্মানিকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ব্রাজিল। রবার্তো কার্লোস, কাফু, পলিস্তা, ড্যানিলসন, রুকু জুনিয়র, রোনালদিনহো, রিভালদো, রোনাল্ডোরা ট্রফি উঁচিয়ে ধরেছিলেন। সেটাই ছিল ব্রাজিলের ঘরে শেষ বিশ্বকাপ। এরপর আরো চারটি বিশ্বকাপ গেছে। এবার নিয়ে পাঁচটি বিশ্বকাপের আসর। কাফু, রবার্তো কার্লোসরা যখন বিশ্বকাপ উপহার দেয় তখন নেইমারের বয়স ১০। স্বপ্ন দেখছিলেন কবে তিনি ব্রাজিলের জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চড়াবেন।
২০১৪ বিশ্বকাপে অভিষেক হওয়ার আগেই নেইমার ফুটবল দুনিয়ায় তারকা খ্যাতির চূড়ান্ত পর্যায়ে। ব্রাজিলে ঘরের মাটিতে পেলের হাতে তুলে দিতে চেয়েছিলেন ষষ্ঠ বিশ্বকাপ। কিন্তু ইনজুরিতে পড়ে নেইমার মাঠের বাইরে। ৮ জুলাই ২০১৪, ব্রাজিলের বেলেহরিজোন্তের মিনেইরো স্টেডিয়ামে। সেমিফাইনাল খেলা, প্রতিপক্ষ জার্মানি। সেই ম্যাচে ৭-১ গোলে হেরে গেল ব্রাজিল। সেদিনের হারের পর কান্নার বুক ভাসিয়েছিলেন ব্রাজিলিয়ানরা। এর পর রাশিয়া বিশ্বকাপ ঘুরে আবার এশিয়ায় বিশ্বকাপের মঞ্চ। আবার নেইমারদের ব্রাজিল এশিয়ায়। কাফু, রিভালদো, পলিস্তা, রোনাল্ডোদের পর নেইমারদের ওপর সব দায়িত্ব এশিয়া থেকে ট্রফি নিতে হবে। পেলের হাতে তুলে দিতে হবে ট্রফি। ষষ্ঠ ট্রফি জয়ের স্বপ্ন নিয়ে নেইমাররা এখন কাতারের দোহায়।
শনিবার রাতে দোহায় এসেছে ব্রাজিল। বিমানবন্দরে উপচে পড়া ভিড়। ব্রাজিলের সমর্থকরা নেইমারদের দেখার জন্য নিরাপত্তা বেষ্টনি টপকাতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাতে ব্রাজিলের প্রথম ম্যাচ সার্বিয়ার বিপক্ষে। আছে সুইজারল্যান্ড, ক্যামেরুন। গ্রুপিং বলছে নেইমারদের জন্য নো চিন্তা। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে পরের রাউন্ডে উঠবে। তার পরও কোচ তিতে তার খেলোয়াড়দের জন্য চিন্তা করছেন। খেলোয়াড়রা যেন বিশ্বকাপ নিয়ে চাপে না থাকেন তার জন্য নানা উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। গান রচনা করা হয়েছে ব্রাজিল দলের জন্য। খেলোয়াড়দের উজ্জীবিত করতেই সাম্বা গান বাজবে। জুনিন হো থিবার কণ্ঠে সাম্বা গান বাজবে সারাক্ষণ।
ব্রাজিল উঠেছে সমুদ্র ঘেষা ভবনে। যেখানে প্রত্যেকটা রুম সাজিয়ে তোলা হয়েছে খেলোয়াড়দের শৈশবের ছবি দিয়ে। বিছানার পাশে ছোট টেবিলে রাখা হয়েছে খেলোয়াড়দের শৈশবের ভাস্কর্য এবং ট্রফি। ট্রফি জয় করে ঘরে ফেরার প্রেরণা দেওয়ার প্রতীক এটি। সর্বক্ষণ চোখে পড়বে নিজের শৈশব। জয় করতে হবে ট্রফি। আবেগময় করে তুলতেই নাকি এমনভাবে সাজিয়ে তোলা হয়েছে খেলোয়াড়দের ঘর।