মরুর বুকে কাতার বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে জাপানের বিপক্ষে মাঠে নেমেছে চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন জার্মানি। তবে মাঠে নামার আগেই এমন এক কাণ্ড ঘটিয়ে বসলো জার্মানরা, তাতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। খেলা শুরুর আগে ফটোসেশনে হাত দিয়ে মুখ লুকালেন জার্মান একাদশের সবাই। তারা কেন এমন করলেন সেটি নিয়েই এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু আলোচনা।
তবে যতদূর জানা যায়, ফিফার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ স্বরূপই এমন কাণ্ড করেছেন জার্মান ফুটবলাররা। ঘটনার জন্ম বিশ্বকাপের মাঠে নামা দলের ক্যাপ্টেন আর্মব্যান্ড থেকে।
জার্মানি, ইংল্যান্ডসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশ বিশ্বকাপের আগেই ঘোষণা দিয়েছিলো তাদের দলের অধিনায়করা ম্যাচে বিশেষ এক ‘ওয়ান লাভ’ আর্মব্যান্ড পরে মাঠে নামবে। বিশেষ সেই আর্মব্যান্ডের উদ্দেশ্য ছিলো সমকামীদের সমর্থন জানানো। তবে কাতার মুসলিম দেশ হওয়ায় এমন কিছু সমর্থন করেনি তারা। এজন্য ফিফাও বাঁধ সাধে ওই আর্মব্যান্ড ব্যবহারে। ফিফার দেওয়া আর্মব্যান্ড পরেই মাঠে নামতে হবে বলেও জানিয়ে দেয় বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
এমনকি ফিফার নির্দিষ্ট আর্মব্যান্ডের বাইরে অন্য কিছু ব্যবহার করা হলে ম্যাচ শুরুর আগেই হলুদ কার্ড দেখানো হবে বলেও জানায় কর্তৃপক্ষ। ফিফার ঠিক করে দেওয়া আর্মব্যান্ডেও ঐক্য আর সমতার কথাই বলা হয়েছে, এবং প্রতি রাউন্ডে এই আর্মব্যান্ডের বার্তা বদলে যাবে বলেও জানানো হয়। এমন নিয়মের পর ‘ওয়ান লাভ’ আর্মব্যান্ড ব্যবহারের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে জার্মানিসহ অন্য দেশগুলো।
সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসলেও ফিফার প্রতি ক্ষোভটা ঝেড়ে ফেলতে পারেনি জার্মানি। ফিফগার এমন নিয়মের প্রতিবাদ স্বরূপই আজ ফটোসেশনে জার্মানরা হাত দিয়ে মুখ ঢেকে ছবি তোলে।
জার্মান দলের এক বিবৃতিতেও এমন তথ্য নিশ্চিত করে জানানো হয়েছে, ‘জার্মান জাতীয় দল যে বৈচিত্র্য ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার মূল্যবোধ ধারণ করে, সেটির পাশে দাঁড়াতেই আমরা অধিনায়কের আর্মব্যান্ডকে ব্যবহার করতে চেয়েছিলাম। অন্য সব দেশের পাশে দাঁড়িয়ে আমরা আওয়াজ তুলতে চেয়েছিলাম।’
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, ‘আমাদেরকে ইচ্ছেমতো আর্মব্যান্ড পরতে না দিয়ে আমাদের বাকস্বাধীনতায় বাধা দেওয়া হয়েছে। তবে আমরা আমাদের অবস্থানেই অটল আছি।’
বিষয়টা কোনো রাজনৈতিক ব্যাপার ছিলো না বলে জার্মানদের পক্ষ থেকে আরো জানানো হয়। ‘বিষয়টা ছিলো মানবাধিকারের, আর এই বিষয়টা মোটে ছাড় দেওয়ার মতো কোনো বিষয় নয়। বিষয়টা সাধারণ একটা বিষয় হিসেবেই দেখা উচিত ছিলো। তবে এখনো এটিকে সেভাবে দেখা হচ্ছে না। সে কারণেই এই বার্তাটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’