বাড়ি নিরাপদ আশ্রয়স্থান। সাধারণ মানুষ থেকে বড় বড় তারকা সবাই নিজের বাড়ির ব্যাপারে একটু আবেগপ্রবণ। তাই তারকাদের বাড়ি সাজানোয় দেখা যায় তাদের পছন্দ আর রুচির পরিচয়। সব তারকাই নিজের সবচেয়ে ভালোবাসার বিষয়গুলোকে হাইলাইট করে বাড়ি সাজাতে চেষ্টা করে। এছাড়াও আধুনিক সুবিধা, তারকাখ্যাতি এড়ানোর জন্য নিরাপত্তা, নিজের কাজের জন্য উপযুক্ত স্থান, আরামদায়ক শোবার ঘর সকলেরই চাহিদার প্রথম তালিকায় থাকে। তারকাদের বাড়িও এর ব্যতয় হয় না। যেহেতু এখন ফুটবল জ্বরে ভুগছে সারাদেশ, তাই ফুটবল তারকাদের বাড়ির আদ্যপ্রান্ত জানতে অনেকেরই আগ্রহের শেষ নেই। তারকাদের বাড়ি ও তার সাজসজ্জা নিয়ে আজকের আয়োজন। লিখেছেন শারমিন রহমান।
মেসি
ফুটবলের বিষয় আলাপ হচ্ছে আর ফুটবলের রাজপুত্র মেসির কথা হবে না তা তো অসম্ভব। ফুটবলই যার ধ্যান জ্ঞান তার বাড়ির আকৃতিও দেখতে ফুটবলের মতো। দ্বিতল এ বাড়ির বিশেষত্ব হচ্ছে এর অর্ধেক জুড়ে ফুটবল মাঠের অনুরূপ উঠান এবং বাকি অর্ধেক সুইমিং পুল। ক্যাম্প ন্যু থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই বিলাসবহুল বাড়ি থেকে মনোমুগ্ধকর ব্যাল্টিক সাগরের দৃশ্য দেখা যায়। গোলাকার এই বাড়ির একপাশ দিয়ে কাতালানীয় পাহাড় আর অন্য পাশে ভূমধ্যসাগরের অপরূপ দৃশ্য দেখা যায়। এছাড়া শিশুদের খেলার জন্য বড় মাঠ, ইডোর জিম এবং ট্রনিং গ্রাউন্ডও রয়েছে। পুরো বসার ঘর তার স্বভাবমতো হালকা হলুদ আর বাদামী রংয়ের ওপর ফ্লোরাল প্যাটার্নের দেয়ালে সাজানো। বাসার ঘরে শিশুদের জন্য নেপিং কর্নার আছে। বিনোদনের জন্য বড় একটা হোম থিয়েটার রয়েছে। তার বাড়ির ডিজাইন করেছে গ্যারিডো। বাড়ি সাজাতে এই তারকার খরচ হয়েছে প্রায় ৭.৮ মিলিয়ন ইউরো।
নেইমার
নেইমার একটা বাড়ি করবেন আর সেটা বিলাসবহুল হবে না, স্বপ্নপুরী হবে না— তা কি হয়? বাড়ি না বলে সেটিকে বিশালাকার প্রাসাদ বলাই ভালো! আবার বলা যেতে পারে এ যেন সপ্তমাশ্চর্যের একটি! নেইমারের এই বাড়ি কিন্তু বেশি দিনের নয়। তৈরি হয়েছে বছর চারেক আগে। নেইমারের এই বিশালকার প্রাসাদে কী নেই বলুন! ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোর মূল শহর থেকে কিছুটা বাইরে পোরতোবেলোয় ৬ হাজার ২৬৫ বর্গমিটারের এই ম্যানশন। কী সুন্দরভাবে সাজানো গোছানো এই ম্যানশন। যেন স্বপ্নপুরী। ছয়টি স্যুট আছে ব্রাজিলীয় এই তারকার এই বাড়িতে। আরো বিস্ময়ে মুগ্ধ হতে হবে কেন জানেন? সমুদ্র সৈকত থেকে বাড়ি পর্যন্ত রয়েছে লম্বা এক সেতু! সেতু থেকে সৈকতে আসার পথটিও এককথায় নয়নাভিরাম! হেলিকপ্টারে করে প্যালেসে যাবেন? আছে হেলিপ্যাডও! এই বাড়িতে এক নয়নাভিরাম পরিবেশের মধ্যে রয়েছে একটি টেনিস কোর্ট আর সুইমিংপুল।
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো
সম্প্রতি পর্তুগালে নতুন বাড়ি কিনেছেন এই ফুটবলার। ফুটবল থেকে অবসর নিয়ে পার্তুগালে থিতু হওয়ার ইচ্ছে আছে তার। ৪.৮ মিলিয়ন খরচ করে তৈরি তার এ বাড়িতে পাঁচটি বেডরুম, একটি ইন-স্যুট, বিশাল বাগান আর একটি বড় খেলার মাঠ রয়েছে। যেহেতু রোনালদো ফিটনেসকে প্রাধান্য দেয় তার বাড়িতে একটি ইনডোর সুইমিং পুল আর একটি আউটডোর সুইমিং পুল আছে। এছাড়াও সিনেমা রুম, জিম, স্টিমিং রুম রয়েছে; যেখানে রোনালদো তার ফিটনেস ট্রেনিং নিতে পারেন। তার এই বিলাসবহুল বাড়ির ডিজাইনার স্থপতি জুয়াকিন টরিস।
কিলিয়ান এমবাপ্পে
২০১৮ বিশ্বকাপের পর তরুণ এই খেলোয়ার তারকা বনে গেছেন। এছাড়া প্যারিস সেন্ট জার্মেই ক্লাবে নাম লিখিয়ে তিনি পুরোদস্তুর প্যারিসের বাসিন্দা হয়ে গেছেন। সুতরাং প্যারিসে একটি স্থায়ী বাড়ি তো তার থাকতেই হবে। এই বাড়িতে সুইমিং পুলসহ অন্যান্য সুবিধা রয়েছে। এছাড়া বাড়ির দুটি বাইরের অংশ আছে। তার বাড়ির ছাদ থেকে আইফেল টাওয়ারের ৩৬০ ভিউ পাওয়া যায়। এছাড়া সেম্পস ডি মার্স পার্কের শান্ত, সবুজ মনোরোম দৃশ্যও দেখা যায়। এমবাপ্পের বাড়িটি প্রাস ডি প্রিন্সেস স্টেডিয়াম থেকে কয়েক মিনিটের দূরত্বে অবস্থিত।
মেম্ফিস ডিপাই
ডাচ এই উইংগার ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে না পারলেও ইংল্যান্ডের উত্তর-পশ্চিমে একটি বাড়ি করেছেন। তার এই ব্যয়বহুল বাড়িতে ছয়টি বেডরুম সহ সব ধরনের বিলাসিতার ব্যবস্থা রয়েছে। তার বাড়ির মূল আকর্ষণ বাড়ির মধ্যভাগে একটা সুইমিং পুল রয়েছে এবং এর চারপাশে গাড়ির রানওয়ে। ডিপাই গাড়ি খুব পছন্দ করেন। তাই প্রায়ই এই রানওয়েতে ড্রাইভিং করতে দেখা যায় তাকে। এছাড়া তার বাড়িতে সিনেমা রুম, ককটেল বার, জিমও রয়েছে। বাড়িটির আরেকটি আকর্ষণ হচ্ছে এর চারপাশে গ্রাম্য পরিবেশ, যা ডাচ এই তারকার পছন্দ।