ইউক্রেনের লুহানস্ক অঞ্চলের গভর্নর জানিয়েছেন, রুশ বাহিনী এখন সেখানকার আঞ্চলিক রাজধানী সেভেরোদনিয়েস্ক শহরের একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে, তবে ইউক্রেনিয়ান বাহিনী শহরের পূর্ব অংশে এখনো প্রতিরোধ যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে যাতে রুশরা সেদিকে অগ্রসর হতে না পারে।
গভর্নর সেরহি হাইদাই জানিয়েছেন, রাশিয়ার বাহিনী এখন কয়েক দিক থেকে সেখানে আক্রমণ চালাচ্ছে।
তারা এখন শহরে ঢুকে পড়েছে। সেখানকার পরিস্থিতি খুবই খারাপ।”
তিনি আরও বলেন, “ওরা অ্যাম্বুলেন্সের ওপর গুলি চালিয়েছে, আমরা জানিনা ডাক্তারদের ভাগ্যে কী ঘটছে। তাদেরা ফোনে পাচ্ছিনা। একটা হাসপাতাল ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। সেখানকার অবস্থা খুবই খারাপ।”
নগর কর্তৃপক্ষের প্রধান ইউক্রেনের একটি টিভি চ্যানেলকে জানিয়েছেন, সেভেরোদনিয়েস্ক এখন কার্যত দুইভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। শহরের অর্ধেক অংশে রুশরা তাদের নিয়ন্ত্রণ স্থাপন করেছে।
রুশরা যদি সেভেরোদনিয়েস্ক এবং পার্শ্ববর্তী আরেকটি শহর লিসিচানস্ক দখল করতে পারে, তাহলে পুরো লুহানস্ক অঞ্চল তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে।
গভর্নর সেরহি হাইদাই বলেন, রাশিয়ার গোলা হামলার মোকাবেলা করার জন্য তাদের দূর পাল্লার কামান দরকার।
যুদ্ধ সম্পর্কে সর্বশেষ এক পর্যালোচনায় ব্রিটেনের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা বলছে, সেভেরোদনিয়েস্ক দখলে রাশিয়া যে সাফল্য দেখিয়েছে, তার পেছনে আছে এরকম একটি ছোট এলাকায় বিপুল সৈন্য সমাবেশ ঘটানোর কৌশল। তবে এর ফলে রাশিয়া তাদের অধিকৃত অন্যান্য অঞ্চলে ঝুঁকির মধ্যে আছে।
সেভেরোদনিয়েস্কের কর্মকর্তারা বলছেন, তীব্র রুশ গোলাবর্ষণ অব্যাহত থাকায় সেখান থেকে বেসামরিক মানুষদের উদ্ধারের কাজ থেমে গেছে।
গভর্নর সেরহি হাইদাই জানিয়েছেন, এখনো হয়তো ১৫ হাজারের মতো বেসামরিক মানুষ সেখানে আটকে আছে।
ত্রাণ সংস্থা নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিলের সেক্রেটারি জেনারেল ইয়ান এগেল্যান্ড রয়টার্স বার্তা সংস্থাকে বলেছেন, শহরটি যেভাবে ধ্বংস করা হয়েছে, তা দেখে তিনি হতবাক।
“শহরটিতে গোলাগুলির মধ্যে হাজার হাজার মানুষ আটকে আছে। তাদের পানি, খাবার, ওষুধ ও বিদ্যুৎ নেই। যেভাবে ক্রমাগত গোলা বর্ষণ হচ্ছে, তার ফলে বেসামরিক মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে বা মাটির নীচের গিয়ে লুকিয়ে থাকতে বাধ্য হচ্ছে।”
রুশ বাহিনী মারিউপোলের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর এই প্রথম সেখান থেকে একটি মালবাহী জাহাজ ছেড়ে গেছে। রুশ বাহিনী বলছে, এই জাহাজে করে দু হাজার টনের বেশি ইস্পাতের পাত রাশিয়ায় নেয়া হচ্ছে, তবে রাশিয়া এসব সামগ্রীর আইনি মালিক কিনা, সেটা পরিষ্কার নয়।
কয়েক সপ্তাহ ধরে রুশ সৈন্যরা মারিউপোল অবরোধ করে রেখেছিল। প্রচণ্ড লড়াইয়ের পর শহরটি প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। এমাসের শুরুতে শহরটির সর্বশেষ ইউক্রেনীয় যোদ্ধারা আত্মসমর্পণ করে। এদিকে মস্কো জানিয়েছে, আযভাস্টাল কারখানার ভেতরে খুঁজে পাওয়া একশোর বেশি ইউক্রেনিয় সৈন্যের লাশ আজ ইউক্রেনের কাছে হস্তান্তর করা হবে।