বাংলাদেশে বেকারি মালিকেরা হঠাৎ দেশব্যাপী ধর্মঘটে যাওয়ার পর সারা দেশে রুটি, বিস্কুটের মতো খাদ্যসামগ্রীর সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্রেড এন্ড বিস্কুট ফ্যাক্টরি মালিক সমিতির পক্ষ থেকে একদিনের ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও অনেক এলাকায় দুই বা তার চেয়ে বেশি দিনের ধর্মঘট পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মালিকেরা।
ঢাকার মিরপুরে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিক্রি করে এমন একটি দোকানের মালিকের সাথে কথা বলে জানা গেল, গতকাল তাদের সরবরাহকারী বেকারি থেকে জানানো হয়েছে তারা সাতদিন কোন বেকারি পণ্য সরবরাহ করবে না।
তিনি বলছেন, “আজকে সরবরাহ না হলে কাল থেকেই খুচরা দোকানে টান পড়তে পারে। বিস্কুটে এখনই সমস্যা হবে না কিন্তু পাউরুটির যেহেতু দুই তিন দিন ডেট থাকে তাই পাউরুটি ১দিন পর আর মার্কেটে থাকবেনা।
মঙ্গলবার নতুন সরবরাহ না থাকায় দোকানে যে পাউরুটি বিক্রি হচ্ছে তা আগেরদিনের বা তারও আগে তৈরি।
ঢাকার মহাখালীর আমতলী এলাকার একটি দোকানের মালিক বলছেন তাদেরকে গতকাল জানানো হয়েছে শুধু আজ কোন সরবরাহ হবে না।
“বেকারি মালিকদের ধর্মঘট সাম্প্রতিক সময়ে আমরা দেখিনি। ওনারা জানিয়েছেন যে তারা পণ্যের দাম বাড়াতে চান।”
সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে বাংলাদেশে সাড়ে আট হাজারের মতো বেকারি রয়েছে।
কি কারণে হঠাৎ তারা ধর্মঘট শুরু করেছেন জানতে চাইলে মালিকদের সমিতির সেক্রেটারি জসীম উদ্দিন বলেন,সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় তারা এখন আর পারছেন না, তাদেরকেও এখন পণ্যের দাম বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন, “তেলের দাম যখন লিটারে ষাট টাকা ছিল তখন আমরা যে দামে মাল বিক্রি করেছি, এখন লিটার দুইশ টাকার মতো, এখনও একই দামে বিক্রি করছি।”
“বেকারিতে যেসব কাঁচামাল লাগে তেল, ডালডা ছাড়াও যেমন ময়দা, চিনি সবকিছুর দাম বাড়তি। আমরা আর পেরে উঠছি না। কাছাকাছি সময়ে অনেক বেকারি বন্ধ হয়ে গেছে।”
তবে ঠিক কী কী সুনির্দিষ্ট দাবিতে তারা ধর্মঘট শুরু করেছেন, সেটি তিনি স্পষ্টভাবে বলেননি।
বেকারি পণ্যের মূল্য কিভাবে নির্ধারিত হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন মালিকরা বসে দাম সমন্বয় করেন। সেটি না করে ধর্মঘট কেন সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা সবাইকে আমাদের পরিস্থিতি জানাতে চাই।”
তিনি আরও জানিয়েছেন, ময়দার জন্য যে গম দরকার হয় ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ভারত গম রপ্তানি বন্ধ করার কারণে তার সরবরাহ কমে গেছে।
মিল মালিকেরা তাদের জানিয়েছেন, এক বস্তা গম আগের চেয়ে অনেক বেশি দামে কিনতে হচ্ছে, তাই তারাও ময়দার দাম বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন।
“এখন আমরা কই যাবো বলেন? সাড়ে আট হাজার বেকারির সাথে কত কর্মচারী এবং তাদের ফ্যামিলি জড়িত চিন্তা করেন। তাদেরকেওতো বেতন দিতে হবে।”