করের আওতা বাড়াতে রাজধানী ঢাকা ও এর বাইরে দেশের বড় বড় শহরে নতুন করদাতা খুঁজে বের করার উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বড় বড় শহরে যাদের বাড়ি-গাড়ি আছে কিংবা ফ্ল্যাটের মালিক, কিন্তু করের আওতায় নেই, তাদের শনাক্ত করে করের আওতায় আনা হচ্ছে।
এনবিআরের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম গতকাল বুধবার জাতীয় আয়কর দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা জানান। সেগুনবাগিচায় এনবিআরের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কম্পট্রোলার অডিটর জেনারেল-সিএজি মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে ‘প্রত্যক্ষ কর ব্যবস্থাপনা ও কর নেট সম্প্রসারণ :প্রাসঙ্গিক ভাবনা’ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এনবিআরের সদস্য (করনীতি) ড. সামস উদ্দিন আহমেদ। আয়কর আদায় বাড়াতে ডিজিটালাইজেশনের ওপর গুরুত্বারোপ করে সিএজি বলেন, এটি নিশ্চিত করা হলে কর কর্মকর্তাদের অযাচিত হস্তক্ষেপ আর থাকবে না। কর আদায় ব্যবস্থা সহজ করতে হলে ডিজিটালাইজেশনের কোনো বিকল্প নেই। বিদেশি পরামর্শকের পরিবর্তে দেশীয় কর্মকর্তাদের দিয়ে ডিজিটালাইজেশন করার পরামর্শ দেন তিনি।
এনবিআরের চেয়ারম্যান বলেন, ডিজিটাল সংযোগের মাধ্যমে করদাতা শনাক্তকরণে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি ডিপিডিসি, বিআরটিএর সঙ্গে সমঝোতা স্মারক চুক্তি করা হয়েছে। তিতাসসহ আরো কয়েকটি সরকারি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করা হবে। ডোর টু ডোর না গিয়ে ডিজিটাল সংযোগের মাধ্যমে কাজটি করা হচ্ছে, যাতে করদাতাদের মধ্যে কোনো ধরনের ভয়ভীতি সৃষ্টি না হয়। তিনি জানান, সম্ভাব্য করদাতা গাড়ির মালিকদের খুঁজে বের করতে ইতিমধ্যে বিআরটিএর সঙ্গে কাজ শুরু হয়েছে। আর বাড়ি ও ফ্ল্যাটের মালিকদের শনাক্ত করতে ডিপিডিসির কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে। এসব উদ্যোগের ফলে নতুন করদাতা বাড়বে আশা করা যায়। এনবিআরের চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমানে মোট রাজস্বে আয়করের অংশ ৩৪ শতাংশ। আমরা এটাকে ৫০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য স্থির করেছি। এই লক্ষ্য অর্জন করতে হলে করের আওতা বাড়ানোর বিকল্প নেই। এ জন্য ডিজিটালাইজেশনের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
গতানুগতিক প্রক্রিয়ায় কর আহরণ বাড়ানো যাবে না। প্রয়োজন বড় ধরনের সংস্কার। কর-ব্যবস্থাকে যত সহজ করা যাবে, নেট তত বেশি বাড়বে। সেই লক্ষ্যে কাজ করছে এনবিআর। আয়কর আইন খুবই জটিল মন্তব্য করে এনবিআরের চেয়ারম্যান বলেন, এটা সহজ করা কঠিন। তবে সংস্কারের সুযোগ আছে। বিগত সময়ে যেসব সংস্কার হয়েছে, সেগুলো সফল হয়নি। এখন থেকে যেসব সংস্কার করা হবে, সেগুলো কার্যকর হবে। আমরা নিজেরাই নিজেদের মতো করে সংস্কার করব।