চট্টগ্রাম নগরের ইপিজেড এলাকা থেকে পাঁচ বছরের শিশু আলীনা ইসলাম আয়াতের মাথা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) সকালে আকমল আলী রোড এলাকার স্লুইচগেটের কাছে মাথার বিচ্ছিন্ন অংশ পাওয়া যায়। পিবিআই চট্টগ্রাম নগরীর পরিদর্শক ইলিয়াস খান ইত্তেফাককে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, মামলায় গ্রেফতার আবির আলীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী কয়েকদিন ধরে পুলিশ টুকরা করা দেহখণ্ড উদ্ধারে খোঁজ চালাচ্ছিল। পিবিআইয়ের একটি দল ঘটনাস্থলে গেলে স্থানীয় জেলেরা একটি খণ্ডিত মাথা দেখতে পাওয়ার কথা জানান। পরে মাথার খণ্ডিত অংশ উদ্ধার করা হয়। নিহতের পরিবার নিশ্চিত করেছে মাথাটি আয়াতের।
এর আগে, বুধবার (৩০ নভেম্বর) নগরীর ইপিজেড থানার আকমল আলী রোডের শেষ মাথায় নালার স্লুইচগেট এলাকা থেকে আয়াতের শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন দুই পায়ের অংশ পাওয়া যায় বলে সাংবাদিকদের জানান পিবিআই চট্টগ্রাম নগরীর পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানা।
গত ১৫ নভেম্বর বিকালে বাসা থেকে বের হয়ে মক্তবে পড়তে যাওয়ার সময় নগরীর ইপিজেড এলাকার নয়ারহাট বিদ্যুৎ অফিসের সামনে থেকে নিখোঁজ হয় ৫ বছরের শিশু আলিনা ইসলাম আয়াত। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা সোহেল রানা ইপিজেড থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। ঘটনা তদন্তে নেমে আয়াতদের বাসার সাবেক ভাড়াটিয়া আবিরের সম্পৃক্ততা পায় পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে গত ২৪ নভেম্বর আবিরকে গ্রেফতার করা হয়।
পিবিআই জানায়, আয়াতকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করাই ছিল আবিরের লক্ষ্য। কিন্তু ঘটনার দিন নিজের মোবাইলের সিম কাজ না করায় সে আয়াতের পরিবারকে টাকার জন্য ফোন করতে পারছিল না। এক পর্যায়ে শিশুটি কান্নাকাটি শুরু করলে আবির তাকে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলে। সেই লাশ পরদিন সকালে ৬ টুকরা করে সাগর ও খালে ভাসিয়ে দেয় আবির।
আয়াত অপহরণ ও হত্যায় সম্পৃক্ততার অভিযোগে গ্রেফতার আবির আলীকে দ্বিতীয় দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আয়াতের খণ্ডিত লাশের সন্ধানে গত কয়েকদিন নগরীর আউটার রিং রোডের বে-টার্মিনাল এলাকা এবং আকমল আলী খালের মোহনায় অভিযান চালায় পিবিআই। অভিযানে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি বটি, আয়াতের পায়ের স্যান্ডেল, একটি এন্টিকাটার ও আবিরের হাতের লেখা একটি ডায়েরি উদ্ধার করার কথা জানায় পুলিশ।