কাতার বিশ্বকাপে নক আউট পর্বে অস্ট্রেলিয়াকে ২-১ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে পা রেখেছে টুর্নামেন্টের হট ফেভারিট আর্জেন্টিনা। শনিবার (৩ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় রাত ১ টায় আহমেদ বিন আলী স্টেডিয়াম মাঠে নেমে এই দু’দল। মেসির দেওয়া এক মাত্র গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা। বিরতি থেকে ফিরে আবারও গোলের দেখা পায় আর্জেন্টিনা। অস্ট্রেলিয়া এক গোল শোধ দিলেও শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আর্জেন্টিনা।
ম্যাচের প্রথম আক্রমণ করে অস্ট্রেলিয়া। শুরুতেই আর্জেন্টিনার দূর্গে হানা দেয় তারা। তবে তা ক্লিয়ার করে দেন আর্জেন্টিনার ডিফেন্স। এরপর নিচ থেকে বল দেয়া নেওয়া করে আক্রমণ তৈরির চেষ্টা করে আর্জেন্টিনা। ম্যাচের ১০ মিনিটে আক্রমণে উঠে আর্জেন্টিনা। তবে নিকোলাস ওতামেন্দির বাড়ানো বল নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেনি এলেক্সিস ম্যাকএলিস্টার।
নিজেদের মধ্যে বল দেওয়া নেওয়া করে সাজানো আক্রমণে যায় আর্জেন্টিনা। অন্যদিকে কাউন্টার অ্যাটাক নির্ভর ফুটবল খেলতে থাকে অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচের ১৫ মিনিটে মার্কোস আকুনাকে ফাউল করার কারণে জ্যাকসন ইরভিনকে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। ম্যাচের ১৭ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে গোলমুখে শট করেন পাপু গোমেজ। তবে তা চলে যায় ক্রসবারের অনেক ওপর দিয়ে।
ম্যাচের ১৮ মিনিটে বাম দিক থেকে সাজানো আক্রমণে যায় অস্ট্রেলিয়া। তবে তা ক্লিয়ার করে দেন ডিফেন্ডাররা। ম্যাচের ২৩ মিনিটে সাজানো আক্রমণে যায় অস্ট্রেলিয়া। কোন বিপদ ঘটাতে না পারলেও কর্নার আদায় করে নেয় তারা। তবে কর্নার থেকে সুবিধা করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া।
ম্যাচের ২৭ মিনিটে আবারও কর্নার পায় অস্ট্রেলিয়া। কর্নার থেকে ভেসে আসা বলে হ্যারি সুটার লাফিয়ে হেড করলেও তা জালে জড়াতে পারেনি। ম্যাচের ৩১ মিনিটে ফ্রি কিক পায় সকারুরা। তবে সেই ফ্রি কিক কাজে লাগাতে পারেনি তারা। ম্যাচের ৩৪ মিনিটে ডান দিকে গোমেজকে ফাউল করার কারণে ফ্রি কিক পায় আর্জেন্টিনা। ফ্রি কিক কাজে লাগাতে না পারলেও ফ্রি কিক থেকে আসা বল নিয়ে সাজানো আক্রমণ থেকে ডি বক্সে বল পান মেসি। সেখান থেকে প্লেসিং শটে বল জালে জড়ান তিনি। তার গোলে ম্যাচে প্রথমবারের মতো লিড পায় আর্জেন্টিনা।
ম্যাচে লিড নিয়ে আরও আক্রমণের ধার বাড়িয়ে দেয় আর্জেন্টিনা। গোল শোধের লক্ষ্যে পাল্টা আক্রমনেও যায় অস্ট্রেলিয়া। তবে গোল করতে ব্যর্থ হয় তারা। শেষ পর্যন্ত আর কোন গোল না হলে মেসির দেওয়া গোলে এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধ শেষ করে আর্জেন্টিনা।
বিরতি থেকে ফিরেই আক্রমণে যায় আর্জেন্টিনা। ম্যাচের ৫০ মিনিটে সাজানো আক্রমণে যায় তারা। ডি বক্সের বাইরে থেকে শট করে মেসি। তবে তা নিজের গ্লোভসে নেন অস্ট্রেলিয়ার গোলরক্ষক ম্যাট রায়ান। ম্যাচের ৫২ মিনিটে ডিফেন্ডারদের ভুলে বিপদের সম্ভাবনা দেখা দেয়। তবে জায়গা ছেড়ে বেড়িয়ে এসে বিপদ মুক্ত করেন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ।
ম্যাচের ৫৭ মিনিটে আবারও গোলের দেখা আর্জেন্টিনা। অস্ট্রেলিয়ার গোলরক্ষকের ভুলে বল পেয়ে গোল করে আর্জেন্টিনার লিড বাড়িয়ে দেন জুলিয়ান আলভারেজ। তার গোলে ২-০ গোলে এগিয়ে যায় আলবিসেলেস্তারা। পিছিয়ে পড়ে গোল শোধের চেষ্টা করে অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচের ৬২ মিনিটে বাম দিক থেকে ফ্রি কিক পায় অস্ট্রেলিয়া। তবে তা কাজে লাগাতে পারেনি তারা।
ম্যাচের ৬৫ মিনিটে একক প্রচেষ্টায় বল নিয়ে ডি বক্সে ঢুকে পড়ে মেসি। তবে গোল করতে পারেননি তিনি। ম্যাচের ৬৬ মিনিটে বাম দিক থেকে ক্রস বাড়ান আকুনা। তবে ডি বক্সে পা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হলে লিড বারানো হয় না আর্জেন্টিনার। এরপর মেসি ড বক্সের বাইরে থেকে শট করলেও তা চলে যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে।
এরপর খেলার গতি কিছুটা কমিয়ে আনে আর্জেন্টিনা। তবে ম্যাচের ৭৬ মিনিটে গোলের দেখা পায় অস্ট্রেলিয়া। ডি বক্সের বাইরে থেকে শটে বল আর্জেন্টিনার জালে জড়ান ক্রেগ গুডউইন। তার গোলে ব্যবধান কমায় সকারুরা। ম্যাচের ৮০ মিনিটে একক প্রচেষ্টায় বল নিয়ে যায় আজিজ বেহিচ। তবে ক্লিয়ার করে দেন আর্জেন্টিনার ডিফেন্ডার।
ম্যাচের ৮৯ মিনিটে সুযোগ তৈরী করেও গোল করতে ব্যর্থ হয় অস্ট্রেলিয়া।ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে গোলের সহজ সুযোগ নষ্ট করেন লাওতারো মার্টিনেজ। এরপর মেসি ডি বক্সের বাইরে থেকে শট করলেও তা চলে যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে। শেষ দিকে গাড়ং কুওলের নেওয়া শট অসাধারণ সেভে দলকে রক্ষা করেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ।
গোল শোধের লক্ষ্যে কিছু আক্রমণ চালালেও গোল করতে ব্যর্থ হয় সকারুরা। শেষ পর্যন্ত আর কোন গোল না হলে ২-১ গোলের জয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে পা রাখে আর্জেন্টিনা। অন্যদিকে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেয় অস্ট্রেলিয়া।