৭ বছরের মাথায় কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল ১৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভার ছয় দিনের মাথায় অনুষ্ঠিতব্য এই সম্মেলনে আগামী নির্বাচন মাথায় রেখে সঠিক নেতৃত্ব নির্ণয় গুরুত্ব পাচ্ছে বলে দাবি করেছেন নেতৃত্বপ্রত্যাশী ও সাধারণ নেতাকর্মীরা। ফলে সবার নজর এখন ১৩ ডিসেম্বর শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম মাঠে আয়োজিত সম্মেলনস্থলের দিকে। ইতিমধ্যে সম্মেলন সফল করতে সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগ নেতারা।
দলীয় নেতা-কর্মীদের মতে, দীর্ঘ সময়ের পর আয়োজিত এই সম্মেলন ঘিরে নেতৃত্বপ্রত্যাশীরা এখন মাঠে এসে প্রচারণা চালাচ্ছেন। আগের কমিটি বহাল নাকি নতুন নেতৃত্ব আসছে, এ নিয়ে কৌতূহলী সবাই। এতে বদলে যেতে পারে নেতৃত্ব নিয়ে আগে করা সমীকরণ।
গতকাল শনিবার দুপুরে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী জানিয়েছেন, ১৩ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন দলের সাধারণ সম্পাদক, সড়কযোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। অতিথি থাকবেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক সিরাজুল মোস্তফা, আমিনুল ইসলাম আমিন, ব্যরিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াসহ অনেকে। সম্মেলনে মোট ৩৫১ জন কাউন্সিলর থাকবেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান জানান, এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ পরিবর্তনে বিশ্বাসী। এখানে শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
দলীয় নেতা-কর্মীদের দাবি, ৭ ডিসেম্বরের সফল জনসভার কারণে ১৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য জেলা সম্মেলনের সমীকরণ বদলে যেতে পারে। নেতাকর্মীদের মতে, আওয়ামী লীগের সেই জনসভা ছিল কক্সবাজারবাসীর সম্মিলন। জেলায় সাড়ে ৩ লাখ কোটি টাকার উন্নয়নযজ্ঞের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী আরো উন্নয়নের ঘোষণা করেছেন। এখানকার উন্নয়ন আন্তর্জাতিক গুরুত্ব বহন করে। চলমান উন্নয়ন প্রকল্প শেষ হলে বাংলাদেশ হবে দক্ষিণ এশিয়ার বাণিজিক নগর। দ্বীপ উপজেলা মহেশখালী অর্থনৈতিক হাবে পরিণত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে সেটি প্রকাশ পেয়েছে।
দলীয় নেতা-কর্মীদের মতে, প্রধানমন্ত্রীর জনসভা এবং পরবর্তী সময়ে নানাভাবে আওয়ামী লীগের পদপ্রত্যাশীরা নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন। চলমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী ভারমুক্ত হওয়ার চেষ্টায় আছেন। সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানও সভাপতি হতে আগ্রহী, তবে তিনি সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রেখে দিলেও অসন্তুষ্ট নন। সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন আহমদ সিআইপি, চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলমও সভাপতির পদপ্রত্যাশী। সালাহ উদ্দিন ইতিমধ্যে নিজেকে সভাপতি পদে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এমপি জাফরও একইভাবে চালাচ্ছেন প্রচারণা। সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হিসেবে বর্তমান যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রণজিত দাশ বিগত দুই বছর ধরেই জোর প্রচারণায় রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় ঘোড়ায় চড়ে বিপুল সমর্থক নিয়ে উপস্থিত হিয়ে সবার নজর কেড়েছেন তিনি। সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হতে চান আরেক যুগ্ম-সম্পাদক আশেক উল্লাহ রফিক এমপি, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি মো. খোরশেদ আলম, সহসভাপতি রেজাউল করিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান এবং সদস্য রাশেদুল ইসলামও। তাদের মধ্যে দলের দুঃসময়ের কান্ডারি হিসেবে পরিচিতি রয়েছে অ্যাডভোকেট রণজিত দাশ, যুবলীগের সাবেক সভাপতি মো. খোরশেদ আলম ও রাশেদুল ইসলামের।