মরক্কোর ইউসুফ-এন-নাসেরি। বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে পর্তুগালের বিপক্ষে একমাত্র গোলটি করে মরক্কোকে যিনি স্বপ্নের দুয়ারে নিয়ে গেছেন, সেই স্ট্রাইকার নাসেরি। সেমিফাইনালে তোলার মহানায়ক। এই ফুটবলারকে বলা হয় মরক্কোর রোনালদো। মরক্কোর বিপক্ষে পর্তুগালের রোনালদো ৫১ মিনিটে নেমে গোলকিপারকে একটা শট করতে পেরেছিলেন। মাত্র একটা শট। তার পরফরম্যান্স দিয়ে রোনালদোকে চেনা যাচ্ছিল না। সেই ম্যাচে আসল রোনালদো হয়ে উঠলেন নাসেরি।
মরক্কোর ফুটবল দর্শকরা নাকি রোনালদের চেয়েও ভালো ফুটবলার মনে করেন। পর্তুগালকে হারিয়ে সেটাই শুনিয়ে গেলেন দর্শক। প্রতিপক্ষের গোলপোস্টের সামনে রোনালদো যেভাবে লাফিয়ে ওঠেন সেভাবেই লাফিয়ে উঠে গোল করার ক্ষমতা রাখেন নাসেরি। পর্তুগালের বিপক্ষে যে গোলটা করেছেন নাসেরি, সেই ছবিটা ভালো করে দেখলে আর কিছু বলা লাগবে না। আল থুমামা স্টেডিয়ামে নাসেরির গোলটি ছিল ২ দশমিক ৭৮ মিটার উচ্চতা থেকে। বাতাসে ভেসে থাকা বলটা ক্লিয়ার করার জন্য গোলপোস্ট ছেড়ে আসা পর্তুগালের গোলকিপার এবং ডিফেন্ডারের সামনে বাজপাখির মতো উড়ে গিয়ে মাথা ছোঁয়ান নাসেরি। আর এ গোলেই পর্তুগালের কফিনে পেরেক ঠুকে দেন তিনি।
রোনালদোর উচ্চতা নিয়ে ফুটবল দুনিয়ায় প্রশংসার শেষ নেই। ২০১২-১৩ মৌসুমে ইউরোপীয়ান লিগে রিয়াল মাদ্রিদের জার্সি গায়ে ২ দশমিক ৯৩ মিটার উচ্চতায় লাফিয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের জালে রোনালদো গোল করেছিলেন। রোনালদোর স্পটজাম্প ফুটবল দুনিয়ায় সমাদৃত। রোনালদোর সেই রেকর্ড ভেঙেছেন মরক্কোর নাসেরি, রোনালদো তখন বেঞ্চে বসা। টুইটারে রোনালদোর ৫টা গোলের ছবি ভাসছে। সেখানে কবে কোথায় কার বিপক্ষে রোনালদো লাফিয়ে উঠে গোল করেছিলেন। সেগুলো কত কত মিটার উচ্চতায় লাফিয়েছেন তা দেখানো হচ্ছে। একই সঙ্গে নাসেরির লাফিয়ে ওঠার ছবিটাও দেওয়া হয়েছে। এগিয়ে গেছেন নাসেরি। নাসেরি স্প্যানিশ ফুটবল লিগের খেলোয়াড়। সেভিয়া দলে খেলেন। পাঁচ বছরের জন্য চুক্তিবদ্ধ। রাশিয়া বিশ্বকাপেও খেলেছিলেন এই স্ট্রাইকার। স্পেনের বিপক্ষে পিছিয়ে থাকা ম্যাচে বদলি খেলতে নেমে নাসেরি গোল করেছিলেন। জয়ের পথে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু সেই ম্যাচটি ২-২ গোলে ড্র হয়েছিল। নাসেরি তখনো ফুটবল দুনিয়ায় আলোচনায় ছিলেন না। তার অক্লান্ত পরিশ্রম আজ এখানে নিয়ে এসেছে। মরক্কোর সাংবাদিকরা জানালেন নাসেরির স্প্রিন্ট স্পিড, হাইজাম্প, গুড ফিনিশিং, ডিসিপ্লিন অনুকরণীয়। কঠিন পরিশ্রম তাকে এতদূর এনে দিয়েছে। সব সময় শৃঙ্খলার মধ্যে থাকার চেষ্টা করেন। ফুটবলকে ভালোবেসে ইংল্যান্ড গিয়েছিলেন। সেখানে ঠান্ডায় টিকতে পারেননি। দেশে ফিরে চলে গিয়েছেন স্পেনে।