আজ কাতার বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স ও আফ্রিকার বিস্ময় মরক্কো। তবে ম্যাচটিতে মূল লড়াইটা হবে আসলে ফ্রান্সের আক্রমণভাগের সঙ্গে মরক্কোর রক্ষণের। দুই দলের আগের পাঁচ ম্যাচের পরিসংখ্যানই এই সাক্ষ্য দিচ্ছে।
কাতারে এ পর্যন্ত পাঁচ ম্যাচে ১১টি গোল করেছে ফ্রান্স। যা কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত দল হিসেবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড। কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ১৪টি গোল করেছে ইংল্যান্ড। যারা কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছে। মানে চার সেমিফাইনালিস্টের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গোল করা দল ফ্রান্স। কিলিয়ান এমবাপ্পে, আতোইন গ্রিজমান, অলিভিয়ের জিরু, উসমানে দেম্বেলেদের সমন্বয়ে গড়া ফরাসি আক্রমণভাগ সত্যিই ভয়ংকর। প্রতিপক্ষের রক্ষণকে দুমড়েমুচড়ে দিয়ে গোল আদায় করতে সিদ্ধহস্ত তারা। আজ সেমিফাইনালেও নিশ্চিত বেশি বেশি গোল করার পরিকল্পনা নিয়েই নামবেন এমবাপ্পেরা।
কিন্তু এই পরিকল্পনা করতে গিয়ে হয়তো ভয়ই পাচ্ছেন এমবাপ্পেরা। তা পাওয়ারই কথা। তাদের আজকের প্রতিপক্ষ মরক্কোর জাল যে এখনো পর্যন্ত খুঁজে পায়নি কোনো দল! এ পর্যন্ত যে পাঁচটি ম্যাচ খেলেছে মরক্কো, তার মধ্যে মাত্র একটা গোল হজম করেছে তারা। সেই গোলটিও আত্মঘাতী। মানে গোলটা মরক্কোরই এক খেলোয়াড়ের গায়ে লেগে। কানাডার বিপক্ষে গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে দলকে বিপদমুক্ত করতে গিয়ে বল নিজেদের জালেই ঢুকিয়ে দেন মরক্কান ডিফেন্ডার নায়েফ আগুয়ের্ড। বেলজিয়াম, ক্রোয়েশিয়া, কানাডা, স্পেন ও সর্বশেষ পর্তুগাল—পাঁচ দলের কেউই মরক্কোর গোলরক্ষক ইয়াসিন বুনুকে পরাস্ত করতে পারেননি! তথ্যটা বিস্ময়করই। মরক্কো যে একের পর এক চমক দেখিয়ে ইতিহাসে প্রথম বারের মতো বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে, তার মূলে এই রক্ষণ সাফল্যই।
আশরাফ হাকিমি, নওশের মাজরাকুই, রোমাইন সাইস, নায়েফ আগুয়ের্ড, তাদের পেছনে শেষ অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে ইয়াসিন বুনু-সবাই মিলে নিজেদের রক্ষণটাকে কঠিন এক দুর্গই বানিয়েছেন। যে দুর্গে এখনো পর্যন্ত ফাটল ধরাতে পারেনি কেউ। আজও নিজেদের এই রক্ষণ অস্ত্র দিয়েই ফরাসিদের ভয়ংকর গতিশীল আক্রমণভাগকে রুখে দিতে চাইবে মরক্কো। আশরাফ হাকিমিরা পারবেন প্রতিপক্ষের ভয়ংকর আক্রমণভাগকেও ভোঁতা করে দিতে? একইভাবে এই প্রশ্নটাও উঠছে, এমবাপ্পেরা পারবেন মরক্কোর রক্ষণ দুর্গ ফুটো করে গোল আদায় করতে? ফরাসি আক্রমণ আর মরক্কোর রক্ষণের এই যুদ্ধে যারা জিতবে ম্যাচেও জয় হবে তাদেরই।