কী কুক্ষণে যে কথাটা বলেছিলেন! ‘হু ইজ কে কে?’—এই একটা বাক্যই যে এত দিন ধরে তাঁকে তাড়া করে ফিরবে, কে জানত! আর এমনই কাকতাল, রূপঙ্কর বাগচী যেদিন ফেসবুকে কথাটা বললেন, সেদিনই মারা গেলেন কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ ওরফে কে কে। এরপর আর যায় কোথায়! সংগীতানুষ্ঠান, সিনেমা, গান থেকে সমানে এই জনপ্রিয় গায়কের বাদ পড়া, তাঁর স্ত্রীকে হত্যার হুমকি দেওয়া। এরপর সেই বিতর্কিত ভিডিও বার্তা মুছে দিয়েছেন, সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এরপরও যে ওই ঘটনা পিছু ছাড়ছে না রূপঙ্করের। প্রচণ্ড মানসিক যন্ত্রণা তাঁকে কুরে কুরে খাচ্ছে। শুধু তাঁকে কেন, তাঁর স্ত্রী আর কন্যাকেও এখন ভোগ করতে হচ্ছে এই মানসিক যন্ত্রণা। সর্বত্র তাঁর নিন্দা তাঁকে একদণ্ড স্বস্তি দিরূপঙ্করের স্ত্রী চৈতালি বাগচী বলেন, ‘চারদিকে ধিক্কার, একদম ঘুমাতে পারছি না। ভাবছি, কেন এমন হলো?’ মায়ের সঙ্গে এই মানসিক যন্ত্রণার ভাগীদার হয়েছে তাঁর কন্যাও।তে পারছে না।গতকাল দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আবারও নিজেরও ভুল স্বীকার করেছেন রূপঙ্কর, ‘ভিডিওতে কে কের নাম নেওয়া সত্যিই আমার ভুল হয়েছে। আমি নিজেই তো কেকের গানের ভক্ত। সব সময় ওর গান শুনি। জীবনের এই পর্যায়ে এসে এই ধাক্কা আমাকে বাঁচতে শেখাবে।’
যদিও কলকাতায় আসার পর কৃষ্ণকুমার কুন্নাথকে নিয়ে রূপঙ্করের বিতর্কিত মন্তব্য গোটা সংগীতজগৎকেও নাড়া দিয়েছে। কবীর সুমন, নচিকেতা চক্রবর্তীর মতো অনেক শিল্পী তাঁর পাশে দাঁড়ালেও স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের মতো তারকারা রূপঙ্করকে ধুয়ে দিতে ছাড়েননি। শুধু কি তা–ই, ওই ঘটনার জেপশ্চিমবঙ্গের এক প্রযোজক তাঁর চলচ্চিত্র থেকে রূপঙ্করের গান বাদ দিয়েছেন। আরেকটি নামী কেক কোম্পানিও তাদের প্রচারণা সংগীত থেকে বাদ দিয়েছে রূপঙ্করের গান। শুধু তা–ই নয়, দক্ষিণ কলকাতার নামী এক রেস্তোরাঁ তাদের প্লেলিস্ট থেকে রূপঙ্করের গান বাদ দিয়েছে। ওই রেস্তোরাঁয় সব সময়ই গান বাজত। বিশেষ করে বাংলা গানের শিল্পীদের।
তবে এত বয়কটের মধ্যেই প্রযোজক রানা সরকার রূপঙ্করের পাশে দাঁড়িয়েছেন, ‘আমরা ছবি থেকে ওর গান বাদ দিচ্ছি না। ভুল করতেই পারেন যে কেউ। রূপঙ্কর তো ক্ষমা চেয়েছেন।’রে কাজও হারাচ্ছে
অন্যদিকে আবার টিভি চ্যানেল স্টার জলসার রিয়েলিটি শো ‘ইস্মার্ট জোড়ি’ থেকে রূপঙ্কর দম্পতিকে সরিয়ে দেওয়ারও দাবি তুলেছেন কেউ কেউ।
সব মিলিয়ে দিনযাপনই কঠিন হয়ে গেছে রূপঙ্করের জন্য। তিনি বলেন, ‘কে কের নাম নেওয়াই আমার কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। কে কের মৃত্যুর পর আমার মধ্যে যে অনুতাপ তৈরি হয়েছে, তা থেকে এখন মুক্তি চাই।’