টেস্ট ক্রিকেটে দক্ষিণ আফ্রিকাকে তৃতীয়বারের মত হোয়াইটওয়াশ করার লক্ষ্য নিয়ে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে খেলতে নামবে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। প্রথম দুই টেস্ট জিতে ইতোমধ্যে সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে অজিরা। জয়ের ধারা অব্যাহত রেখে ২০০৬ সালের পর আবারও প্রোটিয়াদের হোয়াইটওয়াশ করার লক্ষ্য অস্ট্রেলিয়ার। অন্য দিকে প্রথম দুই ম্যাচের ব্যর্থতা ভুলে শেষ ম্যাচ সান্তনার জয়ে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা এড়াতে চায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
আগামী বুধবার বাংলাদেশ সময় ভোর ৫টা ৩০ মিনিটে শুরু ব্রিসবেনের গ্যাবায় সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্টে মুখোমুখি হবে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা। নতুন বছরে দুই দলই প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামছে গ্যাবায়।
ব্রিসবেনে সিরিজের প্রথম টেস্টে রাজত্ব করেছে দুই দলের বোলাররা। দু’দিনেরও কম সময়ে শেষ হওয়া ম্যাচ ৬ উইকেটের জয়ে সিরিজ এগিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া।
মেলবোর্নে বক্সিং ডে টেস্টে দাপট অব্যাহত ছিলো অস্ট্রেলিয়ার। ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারের ডাবল সেঞ্চুরি আর বোলারদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স অস্ট্রেলিয়ার সিরিজ জয় নিশ্চিত করে। ইনিংস ও ১৮২ রানে ম্যাচ জিতে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিজেদের করে নেয় অজিরা।
২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকার সুবাদে আবারো দক্ষিণ আফ্রিকাকে হোয়াইটওয়াশের সুযোগ অস্ট্রেলিয়ার সামনে। এর আগে টেস্ট ইতিহাসে দক্ষিণ আফ্রিকাকে তিন বার হোয়াইটওয়াশ করে অজিরা। এরমধ্যে একবার পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ও দু’বার তিন ম্যাচের সিরিজে।
১৯৩১ সালে নিজেদের মাঠে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে, ২০০১ সালে নিজেদের মাঠে তিন ম্যাচের সিরিজে এবং ২০০৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে তিন ম্যাচের সিরিজে প্রোটিয়াদের হোয়াইটওয়াশ করেছিলো অস্ট্রেলিয়া।
১৬ বছর পর আবারও দক্ষিণ আফ্রিকাকে হোয়াইটওয়াশের সুযোগ কাজে লাগাতে চায় অস্ট্রেলিয়া। অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স বলেন, ‘আমাদের প্রধান লক্ষ্য ছিলো টেস্ট সিরিজ জয়। এবার আমাদের লক্ষ্য দক্ষিণ আফ্রিকাকে হোয়াইটওয়াশ করা। এমন সুযোগ সচরাচর আসে না। শতভাগ সাফল্য নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ শেষ করতে চাই আমরা। পুরো দলই দারুণ ছন্দে আছে। আশা করছি দলের খেলোয়াড়রা শেষ ম্যাচে জ্বলে উঠতে পারবে।’
অন্যদিকে, প্রথম দুই ম্যাচে ব্যাটিং-বোলিং কোন ক্ষেত্রেই ভালো করতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশেষভাবে দলের ব্যাটাররা। এখন পর্যন্ত মাত্র দু’জন ব্যাটার সিরিজে ১’শর বেশি রান করেছেন। চার ইনিংসে কাইল ভেরেনি ১৪৯ ও টেম্বা বাভুমা ১৩৩ রান করেছেন। বোলিংয়ে দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন পেসার কাগিসো রাবাদা। ৩ ইনিংসে সিরিজের সর্বোচ্চ ১০ উইকেট নিয়েছেন তিনি।
শেষ টেস্টে জয় পেতে হলে ব্যাটারদের জ্বলে উঠতে হবে বলে মনে করেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ডিন এলগার। তিনি বলেন, ‘টেস্ট ম্যাচে ব্যাটারদের দায়িত্ব থাকে অনেক বেশি। বড় ইনিংস খেলতে না পারলে বোলারদের উপর চাপ বাড়ে। সিরিজে আমাদের কোন ব্যাটারের সেঞ্চুরি নেই। বড় কোন জুটিও নেই। ব্যাটারদের আরও বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে। হোয়াইটওয়াশ এড়াতে হলে অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে ভালো ক্রিকেট খেলাটাই মূখ্য বিষয়।’
মেলবোর্নে বক্সিং ডে টেস্টে আঙুলের ইনজুরিতে পড়ায় শেষ ম্যাচ খেলতে পারবেন না অস্ট্রেলিয়া অলরাউন্ডার ক্যামেরুন গ্রিন এবং পেসার মিচেল স্টার্ক। তাদের পরিবর্তে দলে নেওয়া হয়েছে স্পিন অলরাউন্ডার অ্যাস্টন অ্যাগার ও ব্যাটসম্যান ম্যাট রেনশকে। ২০১৭ সালে অ্যাগার ও ২০১৮ সালে সর্বশেষ টেস্ট খেলেছেন রেনশ।
সিরিজের শেষ টেস্টে মিডল-অর্ডার ব্যাটার থিউনিস ডি ব্রুইনকে পাচ্ছে না দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথমবারের মত সন্তানের বাবা হচ্ছেন তিনি। ইতোমধ্যে দেশে ফিরে গেছেন ব্রুইন।
টেস্ট এখন পর্যন্ত ১০০ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা। অস্ট্রেলিয়ার জয় ৫৪টি। ২৬ জয় দক্ষিণ আফ্রিকার। ২০টি টেস্ট ড্র হয়েছে।