ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় অংশগ্রহণকারী স্টল ও প্যাভিলিয়নের মালিক-কর্মচারীরা আবাসন সংকটে পড়েছেন। বাণিজ্যমেলার আশেপাশে বসতবাড়ি কম থাকায় চাহিদামতো বাসা ভাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। আবার কোথাও পাওয়া গেলেও বাড়ির মালিকরা আকাশচুম্বী ভাড়া চাচ্ছেন। ফলে অনেকেই মেলা শেষে বাধ্য হয়ে রাতে ঢাকায় ফিরছেন।
রাজধানীর পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। এর আগে আগারগাঁওয়ে শেরে বাংলা নগরে মাঠে এই মেলা অনুষ্ঠিত হতো। এখন পূর্বাচলে হওয়ায় মেলায় অংশগ্রহণকারী স্টল ও প্যাভিলিয়নের মালিক-কর্মচারীদের আবাসন সমস্যা হচ্ছে। কারণ, এখনো পূর্বাচল উপশহর গড়ে ওঠেনি। ফলে বাণিজ্য মেলার সময় আশেপাশে এলাকায় বাড়ি ভাড়ার জন্য বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি হয়। বাণিজ্য মেলার পার্শ্ববর্তী গ্রাম গুতিয়াবো, পিতলগঞ্জ, মধুখালী, হারিন্দা, বেইলারটেক, বাঘবেড়, দক্ষিণবাগ, কেয়ারিয়া, গোয়ালপাড়া, ইউসুফগঞ্জ, শিমুলিয়া, ফুলবাড়িয়া, কালনী, হিরনালসহ আশপাশের এলাকায় মেলার স্টল মালিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চড়া মূল্যে ভাড়ায় থাকতে হচ্ছে। সুযোগ পেয়ে বাড়ির মালিকরাও বেশি ভাড়া আদায় করছেন। মেলার আগে যে ফ্ল্যাটের ভাড়া ছিল ছয় থেকে আট হাজার টাকার মধ্যে। সেই ফ্ল্যাট এখন ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকায় ভাড়া হচ্ছে। তাও পরিচিত ব্যক্তির সুপারিশ ছাড়া বাসা ভাড়া মিলছে না। স্টল ও প্যাভিলিয়নের বরাদ্দপত্র নিয়ে নিশ্চিত হয়েই বাড়ির মালিকরা ফ্ল্যাট বাসা ভাড়া দিচ্ছেন।
তবে পূর্বাচল উপশহরের বরাদ্দকৃত প্লটে ঘরবাড়ি নির্মাণ হয়ে গেলে এ সংকট থাকবে না বলে মনে করছেন মেলার মি. বাইট রেস্টুরেন্টের মালিক ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ খোকন। ফুড বাংলো রেস্টুরেন্টের মালিক নজরুল ইসলাম বলেন, ঢাকা থেকে ভোরে মেলায় আসা ও রাতে বাসায় ফিরে যাওয়া কষ্ট সাধ্য ব্যাপার। তাই তুলনামূলকভাবে ভাড়া একটু বেশি হলেও শিমুলিয়া এলাকায় অনেকেই বাসা ভাড়া নিয়েছেন। ভিশন ইলেকট্রনিকসের বিক্রয় প্রতিনিধি শরীফ ভুঁইয়া বলেন, পূর্বাচলের আশপাশের রাস্তায় সড়কবাতি না থাকায় রাতে চলাচলে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। অনেকেই চলাচলে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আখতার ফার্নিচারের ব্যবস্থাপক জামাল উদ্দিন বলেন, গুতিয়াবো এলাকায় দুই কক্ষের একটি ফ্ল্যাট বাসা তিনি ৩৫ হাজার টাকায় ভাড়া নিয়েছেন। ঢাকার আগারগাঁয়ে এমন ফ্ল্যাট ২০ হাজার টাকায় পাওয়া যেত। তিনি বলেন, এ বছর স্টল ও প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ মূল্য অনেক বাড়ানো হয়েছে। বেড়েছে কর্মচারীদের বেতনও। সব খরচের পর মেলা করে আর্থিকভাবে কতটা লাভবান হওয়া যাবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
পিতলগঞ্জ এলাকার বাড়ির মালিক ওসমান গণি ভুঁইয়া খোকন বলেন, পূর্বাচল উপশহরের প্লটে ঘরবাড়ি নির্মাণ হলে আবাসন সংকট থাকবে না। এছাড়া সারা বছর আমাদের ফ্ল্যাট খালি থাকে। সারা বছরের বাড়ির খরচ মেটানোর জন্যই মেলার সময় বাড়ি ভাড়া কিছুটা বেশি নেওয়া হয়। বাড়ি ভাড়া বেশি নিলেও ভাড়াটিয়াদের সব সুযোগ সুবিধা ও নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য আমরা চেষ্টা করি। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সচিব ইখতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, ৩০০ ফুট সড়ক নামে পরিচিত ঢাকা-কুড়িল-কাঞ্চন সড়ক নির্মাণকাজ শেষ করা হয়েছে। এ সড়কে চলাচল এখন আরামদায়ক। পূর্বাচল উপশহরের অভ্যন্তরীণ সড়কও চলাচলের উপযোগী।