কুমিল্লায় ১০ বছরের এক শিশু গৃহকর্মীকে মারধর ও নির্যাতনে অভিযোগে এক অধ্যক্ষের স্ত্রীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় বুধবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে গৃহকর্মীর মামা মো. ইব্রাহীম বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করলে বিকেলে তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
ভুক্তভোগী সুমাইয়া আক্তার কুমিল্লা নগরীর শুভপুর গ্রামের লিটন মিয়ার মেয়ে। সে প্রায় চার বছর ধরে অধ্যক্ষের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করে আসছে।
গ্রেপ্তার তাহমিনা তুহিন কুমিল্লার শহরতলীর ধর্মপুর এলাকার বাসিন্দা এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আবু তাহেরের স্ত্রী।
ভুক্তভোগী শিশুর অভিযোগ, কাজে দেরি হলেই অধ্যক্ষ আবু তাহেরের স্ত্রী তাহমিনা তুহিন ও মেয়ে ফাহমিদা তিমু তাকে বেত দিয়ে ও নানাভাবে মারধর করতেন। কখনো কাজে ভুল হলে বা যেনতেন কারণে তাকে খাবার না দিয়ে নির্যাতন করা হতো। আশ্রয় হারানোর ভয়ে নির্যাতন সহ্য করতো সে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী নিবাসের একাধিক ছাত্রীরা জানায়, কয়েক দিন ধরেই এসআরটি প্যালেস থেকে চিৎকার-চেঁচামেচির আওয়াজ পাচ্ছিল। মঙ্গলবারও আওয়াজ আসে। পরে ঝলসে যাওয়া পা নিয়ে হোস্টেলে এসে আশ্রয় চায় সুমাইয়া। আমরা তাকে আশ্রয় দেই। পরে তাহমিনা তুহিন এসে শিশুটিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে, তবে স্থানীয়দের বাধায় নিতে পারেননি। পরে ছাত্রীরা জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে ৯৯৯ কল করে বিষয়টি পুলিশকে জানায়। এরপর শিশুটিকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নিয়ে ভর্তি করে পুলিশ।
অভিযোগ অস্বীকার করে গৃহকর্তা সাবেক অধ্যক্ষ আবু তাহের বলেন, ঘটনার দিন আমি বাইরে ছিলাম। আমার স্ত্রী জানিয়েছেন- তিনি সুমাইয়াকে মারধর করেননি। সে পা পিছলে পড়ে গিয়ে অসাবধানতাবশত গরম পানি লাগে।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আহাম্মদ সনজুর মোরশেদ বলেন, গরম পানি দিয়ে গৃহকর্মীর শরীর ঝলসে দেওয়ার অভিযোগে ভুক্তভোগীর মামা দায়ের করা মামলায় অধ্যক্ষের স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিকেলে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।