বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রাথমিক চিন্তাভাবনা শুরু হয় খালেদা জিয়ার আমলে। ১৯৯৪-৯৫ সালে সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন তিনি (খালেদা জিয়া)।
সেতু নির্মাণ নিয়ে সে সময় বিশ্বব্যাংক ও জাপানের সঙ্গে আলোচনা হয়। আলোচনার প্রেক্ষিতে সেতুটির নির্মাণ ব্যয় স্থির করা হয় ৮ হাজার কোটি টাকা। মঙ্গলবার বিকালে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপি কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি একথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, পৃথিবীর কোনো সেতু এত ব্যয়বহুল বলে বিএনপির জানা নেই। পদ্মা সেতুর প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছিল ৮ থেকে সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা। পরে তা বাড়িয়ে ৩০ হাজার কোটি টাকা দেখানো হয়েছে। তা হলে এত টাকা কোথায় গেল? তিনি অভিযোগ করেন, ভারতের আসাম রাজ্যে লোহিত নদীর উপর নির্মিত ভূপেন হাজারিকা সেতু নির্মাণ হয়েছে মাত্র ৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে।
তিনি বলেন, পদ্ম সেতু নির্মাণে যে ব্যয় হয়েছে তা দিয়ে আরও তিনটি পদ্মা সেতু বানানো যেত। সরকার জনগণের জন্য উন্নয়ন করছে না। পদ্মা সেতু করেছে নিজেদের পকেট ভরতে ও টাকা পাচার করতে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে মানুষ দুবেলা ঠিকভাবে খেতে পারছে না। বাচ্চাদের জন্য প্রোট্রিন জোগাড় করবে, সেটাও করতে পারছে না।
পদ্মা সেতু উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আপনারা যাবেন কিনা সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এ প্রশ্ন ওবায়দুল কাদের সাহেবকে জিজ্ঞাসা করেন। তার নেত্রী (শেখ হাসিনা) খালেদা জিয়াকে পদ্মা সেতু থেকে টুস করে ফেলে দিতে বলেছেন। আপনি তাকে হত্যার হুমকি দেবেন আর তিনি সেখানে যাবেন-এটা মনে করার কারণ নেই। যে সেতু থেকে খালেদা জিয়াকে ফেলে দিয়ে হত্যার হুমকি দেন প্রধানমন্ত্রী। সেই অনুষ্ঠানে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
কুমিল্লার সিটি নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, একজন সংসদ-সদস্যকে নির্বাচনি এলাকা থেকে বের করতে পারেনি নির্বাচন কমিশন। তাকে নির্বাচনি আইন মানাতে ব্যর্থ হয়েছে। এ থেকে বোঝা যায়, নির্বাচন কমিশন কতটা অসহায়। আর এই কমিশনের অধীনে আগামী সংসদ নির্বাচন কতটা স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ হবে আপনারাই বলেন।
মহানবি হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে বিজেপির মুখপাত্র নূপুর শর্মাসহ দুই নেতার অবমাননাকর মন্তব্য প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, বিএনপি এর নিন্দা জানায়। বিষয়টি নিয়ে সরকারের উচিত ছিল নিন্দা জানানো। এ ধরনের বক্তব্য আমাদের ধর্মপ্রাণ মানুষের আবেগ ও ধর্মীয় অনুভূতিকে আঘাত করেছে তা সরকারের বলা উচিত ছিল।
সভায় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমিন, জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মামুন উর রশিদ, মহিলা দলের নেত্রী ফোরাতুন নেহার প্যারিস, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সুলতানুল ফেরদৌস নম্র চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা নুর করিম, শ্রমিক নেতা দানেশ আলী, আব্দুল জব্বার প্রমুখ বক্তব্য দেন।