নারী ফুটবলের এলিট ক্যাম্প থেকে বাদ পড়া চার ফুটবলারের মধ্যে দুই জন হচ্ছেন আনুচিং মগিনি এবং সাজেদা খাতুন। ক্যাম্প ছেড়ে চলে যাওয়ার পর প্রথমে আনুচিং মগিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানিয়েছেন, তিনি আর ফুটবল খেলবেন না। দুই দিনের মধ্যে এবার সাজেদা খাতুনও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানিয়েছেন, তিনিও আর ফুটবল খেলবেন না।
এসব কথা নারী ফুটবল কোচ গোলাম রাব্বানী ছোটনের কান পর্যন্ত গেছে। ছোটন খুব অবাক হচ্ছেন এসব কথা শুনে। সংবাদ মাধ্যমের কাছে নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছেন ছোটন। ছোটনের পরিষ্কার কথা, ক্যাম্প থেকে বাদ পড়ার ঘটনা নতুন নয়। সারা বছরই এই প্রক্রিয়া চলমান। যারা ভালো খেলবেন তারা থাকবেন। পারফরম্যান্স ভালো না হলে বিদায় নিশ্চিত। আগেও অনেক ফুটবলার বিদায় নিয়েছেন আবার ফিরেছেনও।
ছোটন বলেন, ‘এখানে আবেগ বলে কিছু নেই। বাদ পড়লে আমি আর ফুটবলই খেলব না। কেন এ কথা। এটা তো হঠকারী সিদ্ধান্ত।’ ছোটন আরও বলেন, ‘সাজেদার উচিত আরো দ্বিগুণ উদ্যমে নিজেকে তৈরি করা।’
ছোটন জানালেন, আনুচিং মগিনি এবং সাজেদাকে এক বছর ধরে বলা হচ্ছে তোমরা উন্নতি কর। কিন্তু সেটা নাকি হয়নি। ছোটন বলেন, ‘স্ট্রাইকিং পজিশনে সাবিনা, কৃষ্ণা, স্বপ্না, তহুরা, জুনিয়র শামসুন নাহার রয়েছেন। এদেরকে বাদ দিয়ে কীভাবে আনুচিংকে রাখব। আকলিমা লিগে ২৫ গোল করেছেন। তাকে বাদ দেব কীভাবে। উন্নতির জন্য লম্বা সময় দেওয়া হয়েছিল। হয়নি?’
তাহলে তাদের সাফের দলে রাখা হয়েছিল কেন? ছোটন বললেন, ‘কোথায় খেলতে দেখেছেন, একাদশে খেলেনি। সাফে তারা স্ট্যান্ডবাই ছিল। সিনিয়র ফুটবলার হিসেবে রাখা হয়েছিল, সুযোগ হয়েছিল। আপনি সাজেদার কথা বলছেন। সাজেদার পেছনে কোচিং স্টাফের আট জন লেগে ছিল। সারা দিন তাকে পুশ করা হয়েছে উন্নতি করতে, উন্নতি করতে হবে। এই ক্যাম্পে ফুটবল নিয়ে সাধনা করা হয়। ফুটবল নিয়ে গবেষণা করা হয়। লড়াই করে টিকে থাকতে হয়।’
আক্রমণভাগের ফুটবলার সাজেদাকে টিকিয়ে রাখতে ২০১৯ সালে সাজেদার হাঁটুতে অপারেশন করানো হয়েছিল অ্যাপোলো হাসপাতালে। তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়নি।
ছোটন বললেন, ‘৪-৫ লাখ টাকা খরচ করে সাজেদাকে খেলার মাঠে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়েছিল। অপারেশনের পর রিহ্যাব করাতে গিয়ে সুইমিংপুল রিজার্ভ করতে হয়েছিল। জিম করাতে হয়েছিল। অথচ সাজেদা অপারেশন করাবেই না। পল স্মলি এবং আমি দেড় ঘণ্টা বুঝিয়ে সাজেদাকে অপারেশন করানোর ব্যবস্থা করি।’
আনুচিং মগিনি এবং সাজেদা ফুটবল খেলাই ছেড়ে দেবেন এমন আবেগঘন কথা শুনে ছোটন বলেন, ‘ওরা দেশকে দিয়েছে। দেশও ওদের অনেক কিছু দিয়েছে। ক্যাম্প থেকে বাদ পড়লে ফুটবলই খেলব না-এমন সিদ্ধান্ত ঠিক না। আবারও তারা ক্যাম্পে ফিরতে পারে।’