ইউক্রেনের সেভেরোদোনেৎস্ক শহরে কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ আটকে পড়ার পর জাতিসংঘ সতর্ক করে বলছে, তাদের প্রয়োজনীয় সরবরাহ শেষ হয়ে আসছে। অনেকেই আজট নামের একটা রাসায়নিক কারখানার নিচে বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছে।
শহরটি থেকে বের হওয়ার সর্বশেষ সেতু এই সপ্তাহের শুরুর দিকে ধ্বংস করে দিলে ১২ হাজারের মতো মানুষ আটকা পরে যায়। এদিকে কয়েক সপ্তাহ ধরেই সেভেরোদোনেৎস্কের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া রাশিয়ার সৈন্যদের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। খবর বিবিসির
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কর্মকর্তা স্যাভিয়ানো আব্রু বিবিসিকে বলেছেন, পানিস্বল্পতা এবং স্যানিটেশন বড় চিন্তার বিষয়। এটা আমাদের জন্য একটা বিরাট উদ্বেগের বিষয়। কারণ মানুষ পানি ছাড়া দীর্ঘক্ষণ টিকে থাকতে পারবে না।
আব্রু আরও বলেছেন ইউক্রেনের পূর্বের লুহানস্ক অঞ্চলে অবস্থিত এই সেভেরোদোনেৎস্ক শহরে খাদ্য এবং স্বাস্থ্যসেবা সামগ্রীর সরবরাহ শেষ হয়ে আসছে।
জাতিসংঘ আশা করছে, যারা আটকে আছে, তাদের কাছে সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার, কিন্তু যেভাবে লড়াই চলছে, তাতে ধরে নেওয়া হচ্ছে তাদের এজেন্সিগুলো সেখানে প্রবেশ করতে পারছে না অথবা এমন কোনো নিরাপদ নিশ্চয়তা পাচ্ছে না যে সেখানে যেসব বেসামরিক নারী, শিশু এবং বয়স্করা রয়েছেন, তাদের কাছে পৌঁছানো যাবে।
রাশিয়া প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল স্থানীয় সময় বুধবার একটি মানবিক করিডর খুলবে, যাতে করে আজট প্ল্যান্টের নিচে যারা আটকা পড়েছে, তারা বের হয়ে আসতে পারে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এমন কোনো নিশ্চিত খবর পাওয়া যায়নি যে কোনো পরিকল্পিত নিরাপদ রাস্তা দিয়ে বেসামরিক লোকদের রাশিয়ার নিয়ন্ত্রিত এলাকায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বুধবার একজন রাশিয়াপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, রাসায়নিকের ওই কারখানা থেকে মানুষজনকে সরিয়ে নিয়ে আসার ব্যাপারে ইউক্রেনিয়ার বাহিনী ‘সম্পূর্ণভাবে বাধা দিচ্ছে’।
‘আজটে জঙ্গিরা উদ্ধার প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করার চেষ্টা করছে। কারখানার এলাকা থেকে জঙ্গিরা একটা মর্টার এবং একটা ট্যাঙ্ক থেকে গুলি করা শুরু করেছে’- টেলিগ্রামকে এ কথা বলেছেন রোডিওন মিরোশনিক, যিনি নিজেকে লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিক মস্কোর রাষ্ট্রদূত হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।
তবে বিবিসি এই অভিযোগ নিরপেক্ষভাবে যাচাই করতে পারেনি।
রাশিয়ার মিডিয়ার খবরে বলা হচ্ছে, ইউক্রেনীয় বাহিনী আজট কারখানায় বেসামরিক লোকজনকে মানব-ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে।
রাশিয়ার কয়েকটি টিভি চ্যানেল ইউক্রেনীয় সৈন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে যে তারা বেসামরিক লোকজনকে আজট কারখানার ভেতরে নিয়ে গেছে।
গ্যাজপ্রম মালিকানাধীন এনটিভি বলছে, কারখানার ভেতরে শিশুসহ ১২০০ এর মতো লোক থাকতে পারে।
যখন বেসামরিক মানুষ আজট কারখানায় আশ্রয় নিয়েছে, তখন রাশিয়া এবং ইউক্রেনের বাহিনী শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য লড়াই করছে।
সেভেরোদোনেৎস্ক শহর দখলের ফলে লুহান্সক অঞ্চলের প্রায় পুরো এলাকার ওপর মস্কোর নিয়ন্ত্রণ এনে দেবে। এই এলাকার বেশিরভাগ অংশ রাশিয়ার সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।