বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক রিজার্ভ ব্যবস্থাপনা বিভাগ এবং দুটি ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগের তদারকির দায়িত্বে থাকা ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমানকে তার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সব কটি বিভাগের দায়িত্ব পেয়েছেন ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ মো. নাছের। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বৈদেশিক রিজার্ভ ব্যবস্থাপনা বিভাগ বৈদেশিক মুদ্রার মজুত, বিনিয়োগ ও বিক্রির বিষয়টি দেখাশোনা করে। চলমান ডলার সংকটের মধ্যেই গভর্নর এ বিভাগের তদারকির দায়িত্বে পরিবর্তন আনলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সঙ্গে কাজী ছাইদুর রহমানের দীর্ঘদিনের সংশ্লিষ্টতা ছিল। তিনি ২৫ বছর ধরে বিভিন্ন পদে রিজার্ভ ব্যবস্থাপনা বিভাগেই ছিলেন। ফলে ডলারের দাম নির্ধারণ, রিজার্ভ ব্যবস্থাপনা, ডলার বিক্রিসহ নানা ক্ষেত্রে তার কর্তৃত্ব তৈরি হয়েছিল। ডলার সংকটে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়ে নানা সময়ে প্রশ্ন উঠেছে। এমন প্রেক্ষাপটে এ পদক্ষেপ নিয়েছেন গভর্নর। ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমান একই সঙ্গে ব্যাংক পরিদর্শন-৪ ও ব্যাংক পরিদর্শন-৭ বিভাগের তদারকির দায়িত্বে ছিলেন। তাকে সেই দায়িত্ব থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ দায়িত্বও পেয়েছেন ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ মো. নাছের।
ব্যাংক পরিদর্শন-৭ বিভাগের অধীনে আছে সোশ্যাল ইসলামী, আল-আরাফাহ্, এক্সিম, ইউনিয়নসহ কয়েকটি ব্যাংক। এসব ব্যাংকের মধ্যে সোশ্যাল ইসলামী ও ইউনিয়ন ব্যাংকে সম্প্রতি বড় ধরনের অনিয়ম চিহ্নিত হয়েছে, যা নিয়ে এখন ব্যাংক খাতে আলোচনা চলছে। আর এ আলোচনার মধ্যেই বাংলাদেশ ব্যাংকের এক অভ্যন্তরীণ অফিস আদেশে এ পরিবর্তন আনা হয়েছে।
জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৫০টি বিভাগের তদারকির দায়িত্বে আছেন চার জন ডেপুটি গভর্নর। নতুন আদেশের ফলে ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমানের অধীনে থাকছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগ, ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রেটি অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিসেস, ডেট ম্যানেজমেন্ট, আইনসহ ১৪টি বিভাগ। রদবদলের মাধ্যমে তাকে মূলত বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনা, ব্যাংক তদারকি ও নীতি প্রণয়নের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো।
আর আবু ফরাহ মো. নাছেরকে আরো বেশি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ, এসএমই বিভাগের পাশাপাশি বৈদেশিক রিজার্ভ ব্যবস্থাপনা ও ব্যাংক পরিদর্শনে তাকে যুক্ত করা হয়েছে। আর অপর দুই ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল ও এ কে এম সাজেদুর রহমান খানের দায়িত্বে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি।