জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত ২০২৩ সালের জন্য জাতিসংঘ শান্তি বিনির্মাণ কমিশনের (পিবিসি) সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। এর আগে ২০২২ সালে কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কমিশনের সদস্যরা ২০২৩ সালের জন্য ক্রোয়েশিয়াকে কমিশনের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ ও জার্মানিকে সহ-সভাপতি নির্বাচিত করেন।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।
এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কমিশনের সদস্যরা ২০২২ সালে অসাধারণ নেতৃত্বদানের জন্য বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা এবং কমিশনের জন্য প্রণীত বিভিন্ন কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নে বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের প্রেস উইং জানায়, বাংলাদেশের সভাপতিত্বের সময় কমিশন তার ম্যান্ডেটের আওতায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে। এ সময়ে কমিশনের কর্মপরিধি ভৌগলিকভাবে বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রথমবাবের মতো পূর্ব তিমুর, দক্ষিণ সুদান ও মধ্য এশিয়াতে কমিশনের কয়েকটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে কমিশনের পরামর্শমূলক কার্যাবলী আরও বেগবান হয়েছে। নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা এজেন্ডা বাস্তবায়নে কমিশনের কাজে যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। আঞ্চলিক উন্নয়ন ব্যাংকগুলোসহ অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কমিশনের অংশীদারিত্ব উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে।
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত মুহিত বাংলাদেশের সভাপতিত্বকালীন বাংলাদেশের প্রতি কমিশনের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতার জন্য তাদের বিশেষ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে ক্রমান্বয়ে বাংলাদেশ জাতিসংঘের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। বিশ্বের সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী দেশ হিসেবে আজ বাংলাদেশ বিশ্ব শান্তি রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলছে।
বাংলাদেশের এই সফলতার প্রসঙ্গ টেনে রাষ্ট্রদূত মুহিত আগামি দিনগুলোতে কমিশনের কাজে বাংলাদেশের পূর্ণ সমর্থন অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, শান্তিবিনির্মাণ কমিশন (পিবিসি) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ও নিরাপত্তা পরিষদের একটি আন্তঃরাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা সংস্থা। এ সংস্থা সংঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোতে শান্তি বিনির্মাণের জন্য কাজ করে, যাতে সংঘাতের পুনরাবৃত্তি রোধ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা যায়। সাধারণ পরিষদ, নিরাপত্তা পরিষদ এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ (ইকোসক) থেকে নির্বাচিত সদস্যসহ ৩১ জন সদস্যের সমন্বয়ে ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় পিসবিল্ডিং কমিশন (পিবিসি)। ২০০৫ সাল থেকে বাংলাদেশ পিবিসির সদস্য হিসেবে কাজ করছে। এর আগে ২০১২ সালে বাংলাদেশ শান্তিবিনির্মাণ কমিশনের সভাপতি এবং ২০১৫ সালে সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে।