যুব গেমস হলেও মনে হলো এ যেন আন্তর্জাতিক গেমসের উদ্বোধন। গতকাল সন্ধ্যায় বনানী আর্মি স্টেডিয়ামে বর্ণিল আলোর বন্যায় শেখ কামাল দ্বিতীয় বাংলাদেশ যুব গেমসের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অনূর্ধ্ব-১৭ বছর বয়সের ক্রীড়াবিদদের জন্য এই গেমস। বাছাই করা হয়েছে আগামী দিনের খেলোয়াড়দের। ছোট ছোট মুখের দিকে তাকিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবেগ আপ্লুত হন। কিশোর কিশোরীর মুখে নিজের ভাই শেখ কামাল, শেখ জামালকে দেখতে পান তিনি।
বঙ্গবন্ধু নিজে ফুটবলার ছিলেন। শেখ কামাল এবং শেখ জামাল দুইজনই ক্রীড়াবিদ ছিলেন। তাদের খেলোয়াড়ী জীবনের কথা উঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর কণ্ঠে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘শেখ কামাল আমার ছোট ভাই। খেলার সাথী। আমি যখন পুতুল খেলতাম, সেও আমার সাথী হতো। শেখ জামাল খেলোয়াড় ছিল। আমি সবাইকে হারিয়েছি। একমাত্র ছোট বোনকে নিয়ে বেঁচে আছি। কামাল বেঁচে থাকলে সে দেশের জন্য আরো কিছু করতে পারত। এই খেলোয়াড়দের মধ্যে আমার ছোট ভাইদের প্রতিচ্ছবি দেখতে পাই। তোমরা এই খেলাধুলার মধ্য দিয়ে দেশকে আরো ওপরে নিয়ে যাবে। বিদেশে খেলতে যাবে।’ প্রধানমন্ত্রীর উপদেশমূলক বক্তব্যে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ক্রীড়াবিদরাও দারুণ খুশি।
আগামী ৪ মার্চ পর্যন্ত আগামী দিনের ক্রীড়াবিদরা পদকের জন্যই নয়, নিজেদের সেরা ক্রীড়াবিদ হিসেবে তুলে ধরতে এই লড়াই শুরু করে দিয়েছেন।
যুব গেমসে আন্তর্জাতিক গেমসের আমেজ দেখা গেল। অনেকটা এসএ গেমসের আদলে পর্দা উঠল। আট বিভাগের ক্রীড়াবিদরা মার্চ পাস্ট করেন। শত শত শিল্পী অংশগ্রহণ করেন। মার্চ পাস্টের পর ডিসপ্লেতে সবার নজর কেড়ে নেয় একজন নারী শিল্পী হুবহু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো করে সেজে আসেন। মশাল নিয়ে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেন, মশাল প্রজ্জ্বলন করেন কাজাখস্তানে এশিয়ান ইনডোর চ্যাম্পিয়নশিপের ৬০ মিটার স্প্রিন্টে স্বর্ণ জয়ী ইমরানুর রহমান এবং ২০১৯ এসএ গেমস কারাতে ইভেন্টে স্বর্ণ জয়ী মারজান আক্তার। শপথ বাক্য পাঠ করান দেশের দ্রুততম মানবী শিরিন আক্তার এবং বিচারকদের শপথ বাক্য পাঠ করান জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত সাবেক ফিফা এলিট রেফারি তৈয়ব হাসান বাবু।
দেশ থেকে বাছাইকৃত ৪ হাজার ক্রীড়াবিদ ঢাকায় এসেছেন। ২৪টি খেলায় তারা লড়াই করবেন। এই ক্রীড়াবিদরা চোখে স্বপ্ন নিয়ে এসেছেন আগামীতে জাতীয় দল গড়বে, সেখানে তাদের জায়গা হবে। দেশের পদকা নিয়ে দেশে ও বিদেশে পদক জয় করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে শত শত বেলুন উড়ে যায় আকাশে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে বিওএর পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা উপহার তুলে দেন বিওএর সভাপতি এবং সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ। পরে এএসপিটিএস এবং ভারতীয় হোমসের ডিসপ্লে দেখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আতশবাজির মধ্য দিয়ে শেষ হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান পর্ব।