সিলেট ও সুনামগঞ্জে জুন মাসে বন্যা হবে বলে ধারণা করা হলেও তার মাত্রা যে এত ভয়াবহ হবে, সেটা ভাবতেও পারেননি বাংলাদেশের কর্মকর্তারা।
ফলে এত ভয়াবহ বন্যার জন্য প্রস্তুতি নেওয়াও সম্ভব হয়নি। সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলায় বহু বছরের মধ্যে এবার সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে অন্তত ৪৫ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
সিলেটের বন্যার্তদের পাশে যে কজন আলোচিত ব্যক্তি দাঁড়িয়েছেন তাদের মধ্যে তরুণ গায়ক তাশরীফ খান একজন। ব্যান্ড দল ‘কুঁড়েঘর’ এর প্রধান তিনি। এরই মধ্যে ১৬ লাখ টাকার তহবিল গঠন করে বন্যাকবলিত মানুষদের সাহায্য করেছেন তারা। প্রথমদিন ফেসবুক লাইভ করে এই টাকা যোগাড় করেন তাশরীফ।
পরে গতকাল আবারও মানুষের কাছে সহায়তা চেয়ে ফেসবুক লাইভ করেন এবং মোবাইলে লেনদেনের জন্য নম্বর দিয়ে দেন। মোবাইল গত ২৪ ঘণ্টায় জমা হয়েছে এক কোটি টাকার বেশি।
তাশরীফ বলেন, ‘প্রথমে আমরা ১৬ লাখ টাকা অনুদান পেয়েছি। এই টাকা দিয়ে আমরা ৩ হাজার পরিবারের পাশে দাঁড়াতে পেরেছি। কিন্তু মানুষকে সাহায্য করতে গিয়ে আমরা বকুল দরিয়ায় পড়ে যাই। কেননা সর্বত্র সাহায্য দরকার। ভেতরে সেই তাগিদফ। কিভাবে টাকা যোগাড় হবে- এসব চিন্তা। কিন্তু দেশের মানুষ আমাদের নিরাশ করেন নি। এবার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এক কোটি টাকার বেশি অনুদান পেয়েছি। এটা বিস্ময়কর। ’
তাশরীফ বলেন, এবার আমরা আরো বড় পরিসরে সহায়তা করতে পারবো। অন্তত ১০ হাজার পরিবারকে সহায়তা করতে পারবো। যা লাগে, প্রয়োজনীয় যা কিছু- সব দিয়ে আমরা একটা পরিকল্পনা করছি। আগামী চার দিন ধরে চলবে আমাদের এই সহায়তা। প্রতিদিন আড়াই হাজার পরিবারের পাশে থাকব।
এর আগে রবিবার তাশরীফ বলেন, ‘সিঙ্গাপুরে একটি শো করে ১২ জুন আমি দেশে ফিরি। পরদিন ১৩ জুন সিলেটে ছুটে যাই। সেখানে গিয়েছিলাম মূলত এর আগে হয়ে যাওয়া বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কিছু মানুষকে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে। কিন্তু ১৪ জুন থেকে টানা বৃষ্টি আর বন্যায় ঘটনা বদলে যায়। সিলেট-সুনামগঞ্জসহ আশপাশের এলাকা ভয়াবহ বন্যায় ভেসে যায়। অসহায় হয়ে পড়ে লাখ লাখ মানুষ। এ অবস্থায় সিলেটে থেকেই আমি ফেসবুকের মাধ্যমে তবহিল সংগ্রহ করি। যতটুকু পারছি আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করছি মানুষের পাশে দাঁড়াতে। ’
তরুণ সংগীতশিল্পী তাশরীফ খান। নিজের গড়া ব্যান্ড ‘কুঁড়েঘর’সহ এরইমধ্যে নতুন প্রজন্মের কাছে বেশ পরিচিতি পেয়েছেন। তার প্রতিটি গানই প্রকাশের পর দ্রুত সাড়া ফেলে সামাজিক মাধ্যমে। পাশাপাশি অসহায় মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।