প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান বলেছেন, ভারত ও বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য স্থানীয় মুদ্রায় করতে পারে। এতে দুই দেশই সুবিধা পাবে। একই সঙ্গে তিনি ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের পাশাপাশি অন্যান্য প্রদেশেও বিনিয়োগ ও পণ্য রপ্তানিতে মনোযোগী হতে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) ও ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাস আয়োজিত এক সেমিনারে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন মসিউর রহমান।
বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) রাজধানীর একটি হোটেলে ভারত ও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা কাজে লাগাতে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন বিষয়ে এ সেমিনার আয়োজন করা হয়। ডিসিসিআই এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।
সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ফারুক সোবহান, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি মো. সামীর সাত্তার, সাবেক সভাপতি মতিউর রহমান, আসিফ ইব্রাহীম, মো. সবুর খান, শামস মাহমুদ, মেট্রোপলিটন চেম্বারের সাবেক সভাপতি আনিস উদ-দৌলা প্রমুখ।
প্রণয় ভার্মা বলেন, বর্তমানে সাতটি ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশনের অবকাঠামো উন্নয়নকাজ চলছে। এগুলো শেষ হলে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আরও সহজ হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা অন্যান্য দেশে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে কলকাতা ও দিল্লি বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারে। এ ছাড়া ভবিষ্যতে সীমান্তবর্তী বর্ডার হাট কার্যক্রম আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তিনি জানান, গত এক দশকে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে এবং প্রস্তাবিত ‘সেপা’ চুক্তির বাস্তবায়ন হলে বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং সাপ্লাই চেইন ব্যবস্থায় আরও অগ্রগতি পরিলক্ষিত হবে।
মো. সামীর সাত্তার বলেন, ২০২২ অর্থবছরে ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৬০০ কোটি মার্কিন ডলার। যোগাযোগ অবকাঠামোর প্রয়োজনীয় উন্নয়ন করা গেলে এই পরিমাণ ২ হাজার কোটি ডলারে নেওয়া সম্ভব। সেমিনারে ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষ থেকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। এতে বলা হয়, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যকার মোট বাণিজ্যের ৪০ শতাংশ হয়ে থাকে স্থলবন্দরের মাধ্যমে। এ ক্ষেত্রে প্রায় ৭০ ভাগই হয়ে থাকে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর ব্যবহার করে। এতে আরও বলা হয়, গত পাঁচ বছরে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আর গত তিন বছরে ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানি দ্বিগুণ হয়েছে। এ ছাড়া ভারত থেকে সরাসরি ডিজেল আনতে প্রস্তাবিত পাইপলাইন চালু হলে বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন এ জ্বালানি তেল আনা সম্ভব হবে। সেমিনারে মুক্ত আলোচনায় বক্তারা বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের জন্য ভারতের ভিসা দেওয়ার প্রক্রিয়া আরও সহজ করার পরামর্শ দেন।