গুজরাট দাঙ্গার ঘটনায় নরেন্দ্র মোদির দায়মুক্তিকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে করা আবেদন খারিজ হয়ে গেল। সাবেক কংগ্রেস সাংসদ এহসান জাফরির স্ত্রী জাকিয়ার আবেদন শুক্রবার খারিজ করে দিয়েছেন ভারতের সর্বোচ্চ আদালত।
২০০২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আহমেদাবাদের গুলবার্গ সোসাইটিতে দাঙ্গাকারীদের হামলায় ৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তাদের মধ্যে ছিলেন সাবেক কংগ্রেস সাংসদ এহসান জাফরি।ঘটনা তদন্তের জন্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করা হয়েছিল। তথ্য-প্রমাণের অভাবে তৎকালীন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ ৬৪ জনকে দায়মুক্তি দেয় সিট। সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেন জাকিয়া।
শীর্ষ আদালত শুক্রবার বলেছেন, এ চ্যালেঞ্জের কোনো সারবত্তা নেই। সিটের মন্তব্য উদ্ধৃত করে আদালত বলেছেন, ‘অশুভ উদ্দেশ্যে বিষয়টি জিইয়ে রাখতেই’ এ আবেদন করা হয়েছে। বিচারিক প্রক্রিয়ার এহেন অপব্যবহারের সঙ্গে যুক্ত সবাইকে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
সুপ্রিম কোর্ট তার রায়ে আরো বলেছেন, ‘কারো নির্দেশনায়’ ওই আপিল করা হয়েছিল এবং আবেদনের বেশির ভাগ বিষয়বস্তুর ভিত্তি হচ্ছে অন্যদের বিবরণ। এটি ‘মিথ্যায় পরিপূর্ণ’। আদালতের পর্যবেক্ষণে আরো বলা হয়েছে, আপিল আবেদনকারীর যুক্তি তদন্তদলের সদস্যদের ‘সততা ও আন্তরিকতাকে ক্ষুণ্ন করার শামিল’ এবং তা সুপ্রিম কোর্টের ‘প্রজ্ঞা’ নিয়েও প্রশ্ন তোলে।
গত বছরের ৯ ডিসেম্বর দুই পক্ষের শুনানি শেষে রায়দান সংরক্ষণ করে (রিজার্ভ) রেখেছিলেন বিচারপতি এ এম খানউইলকরের বেঞ্চ।
গুজরাট দাঙ্গার নেপথ্যে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র রয়েছে, এ নিয়ে আলোকপাত করার জন্য আদালতে সওয়াল করেছিলেন জাফরির আইনজীবী কপিল সিব্বাল। তিনি বলেছিলেন, বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের মামলাটি তদন্ত করেনি সিট। জাফরির আবেদনের বিরোধিতা করে সিটের তরফে দাবি করা হয়, গুজরাট দাঙ্গার নেপথ্যে বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের তদন্তের দাবির পেছনে ঘৃণ্য চক্রান্ত রয়েছে। আরো দাবি করা হয়, জাফরির আসল অভিযোগটি করা হয়েছে সমাজকর্মী তিস্তা শেতলওয়াড়ের নির্দেশে, যিনি পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার জন্য অভিযোগ করেছিলেন।২০১৭ সালে সিটের তদন্ত রিপোর্ট আবার খোলার আবেদন নাকচ করে দেন গুজরাট হাইকোর্ট। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেন শেতলওয়াড়। বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অভিযোগ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন হামলায় স্বামীহারা জাকিয়া।