প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যারা বাধা দিয়েছে, তাদের পদ্মা সেতুর মাধ্যমে জবাব দিয়েছি, বাংলাদেশ পারে। আমাদের দাবায়ে রাখতে পারেনি, পারবে না। ’
গতকাল শনিবার পদ্মা সেতু উদ্বোধন শেষে মাদারীপুরের শিবচরে বাংলাবাজার ফেরিঘাট এলাকায় আওয়ামী লীগের জনসভায় দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। জনসভায় যোগ দেয় লাখো মানুষ।
বিজ্ঞাপন
পদ্মা সেতু নির্মিত হওয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে যে ষড়যন্ত্র হয়েছে, এর জবাব দেওয়ার পাশাপাশি দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধান হয়েছে।
এই জনসভার আগে সেতুর মাওয়া প্রান্তে নামফলক উন্মোচন ও সুধী সমাবেশে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর প্রথম সেতু পার হওয়া গাড়ির টোল দেন তিনি। পরে প্রধানমন্ত্রী গাড়িতে করে সেতু পার হয়ে জাজিরা প্রান্তে পৌঁছে সেতুর নামফলক উন্মোচনের পাশাপাশি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর (প্রধানমন্ত্রী) ম্যুরাল উদ্বোধন করেন। পরে দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী বাংলাবাজারে জনসভা মঞ্চে ওঠেন।
প্রধানমন্ত্রী জনসভা মঞ্চে উঠলে করতালি ও স্লোগানে তাঁকে স্বাগত জানায় লাখো জনতা। তিনি হাত নেড়ে অভ্যর্থনার জবাব দেন। জনসভায় ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে আমরা সেই পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি। আর আপনাদের কষ্ট করতে হবে না। বর্ষাকালে খরস্রোতা পদ্মা নদী পার হতে গিয়ে আর কাউকে সন্তান হারাতে হবে না, মা-বাবাকে হারাতে হবে না, ভাই-বোনকে হারাতে হবে না। পদ্মা সেতুতে আপনারা নির্দ্বিধায় চলতে পারবেন। আর যারা বাধা দিয়েছে, তাদের উপযুক্ত জবাব দিয়েছি। পদ্মা সেতুর মাধ্যমে জবাব দিয়েছি যে বাংলাদেশ পারে। ’
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেক জ্ঞানীগুণী লোক ছিলেন, যাঁরা বলেছেন নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু সম্ভব নয়। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ সমর্থন দিয়েছে, পাশে দাঁড়িয়েছে। জনগণের শক্তি সবচেয়ে বড় শক্তি। ’ তিনি বলেন, ‘ড. ইউনূসকে যখন গ্রামীণ ব্যাংকের এমডির পদ থেকে চলে যেতে হবে, তখন বিশ্বব্যাংক, আমেরিকায় তদবির করে পদ্মা সেতুর টাকা বন্ধ করে দিলেন। কে দুর্নীতি করেছে? যে সেতু প্রাণের সেতু, যে সেতুর সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ভাগ্য জড়িত; দুর্নীতি-ষড়যন্ত্রের কথা বলে টাকা বন্ধ করে দিল। টাকাটা বন্ধে করেছে, ঠিক আছে। বাংলাদেশ বসে থাকেনি। ’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিজের টাকায় এই পদ্মা সেতু তৈরির ঘোষণা দিয়েছিলাম। অনেকে বলেছে, নিজের টাকায় সেতু করতে পারব না। আমার একমাত্র শক্তি বাংলার জনগণ। মা-বাবা, ভাই-বোন সব হারিয়ে, নিঃস্ব, রিক্ত হয়ে ফিরে এসেছিলাম এই বাংলাদেশে। ’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে আমাদের দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষের জন্য একটি বিশেষ দিন। পদ্মা সেতু বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করবে। বিশেষ করে ২১টি জেলার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হবে। ’
নিজের ছোট বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এবং ভাগ্নে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববিকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণের বিপক্ষে থাকা একটি অংশের লজ্জাজনক আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছিলেন তাঁরা। প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘তাদের মানহানি করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হয়েছে। ’
‘পদ্মা সেতু হয়েছে কি না দেখে যান’
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই পদ্মা সেতু উদ্বোধনের জন্য ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলাম। খালেদা জিয়া এসে তা বন্ধ করে দিয়েছিল। ২০০৯ সালে আমরা ক্ষমতায় এসে আবার কাজ শুরু করেছিলাম। তখন তারা কী বলেছিল? বলেছিল, আওয়ামী লীগ কখনো পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে পারবে না। খালেদা জিয়াকে জিজ্ঞাসা করি—আসুন, দেখে যান পদ্মা সেতু নির্মাণ হয়েছে কি না। ’
প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তা-কর্মচারী, দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ, পরামর্শক, ঠিকাদার, প্রকৌশলী, প্রযুক্তিবিদ, শ্রমিক, নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত সেনাবাহিনীর সদস্যসহ সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
বক্তব্যের শেষ ভাগে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিঃস্ব আমি রিক্ত আমি, দেবার কিছু নাই। আছে শুধু ভালোবাসা, দিয়ে গেলাম তাই। ’
‘আমরা বিজয়ী হয়েছি’
সেতুর মাওয়া প্রান্তে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ দাবায়ে রাখতে পারেনি, আমরা বিজয়ী হয়েছি। ’ কবির ভাষায় তিনি বলেন, ‘যতবারই হত্যা করো, জন্মাবো আবার; দারুণ সূর্য হবো, লিখবো নতুন ইতিহাস। ’
দেশের মানুষকে ‘স্যালুট’ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণের সমর্থন আর সাহসেই নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের কঠিন কাজটি করা সম্ভব হয়েছে। বাঙালি বীরের জাতি। বাঙালির ইতিহাসের প্রতিটি বাঁক রঞ্জিত হয়েছে ত্যাগ-তিতিক্ষা আর রক্তধারায়। কিন্তু বাঙালি আবার সদর্পে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। ’ তিনি বলেন, ‘আমরা মাথা নোয়াইনি। আমরা কখনো মাথা নোয়াব না। জাতির পিতা শেখ মুজিব কখনো মাথা নোয়াননি, মাথা নোয়াতে শেখান নাই। ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি জীবনের জয়গান গেয়েছেন। অনেক ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করেই যে পদ্মা সেতুর নির্মাণ সম্ভব হয়েছে। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। কেউ দাবায়ে রাখতে পারেনি, আমরা বিজয়ী হয়েছি। ’
দেশের মানুষের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আসুন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের এই ঐতিহাসিক দিনে যে যার অবস্থান থেকে দেশ এবং দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করার শপথ নিই। ’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই সেতু বাংলাদেশের জনগণের। এর সাথে জড়িয়ে আছে আমাদের আবেগ, আমাদের সৃজনশীলতা, সাহসিকতা, সহনশীলতা এবং আমাদের প্রত্যয় যে আমরা এই সেতু তৈরি করবই। সেই জেদ, সেই প্রত্যয়। এই সেতু শুধু একটি সেতু নয়, এই সেতু আমাদের অহংকার, এই সেতু আমাদের গর্ব। এই সেতু আমাদের সক্ষমতা, আমাদের মর্যাদার শক্তি। ’
এর আগে সুধী সমাবেশের শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন মন্ত্রিপরিষদসচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। এতে সভাপতিত্ব করেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে শিল্পকলা একাডেমি ও পদ্মা বহুমুখী সেতু কর্তৃপক্ষের যৌথ প্রযোজনায় একটি থিম সং পরিবেশন করা হয়। চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর এবং পদ্মা বহুমুখী সেতু কর্তৃপক্ষ নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্রও প্রদর্শন করা হয়। সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী একটি স্মারক ডাকটিকিট, একটি স্মারকপত্র ও উদ্বোধনী খাম অবমুক্ত করেন।
সমাবেশ শেষে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে সকাল ১১টা ৫৮ মিনিটে পদ্মা সেতুর ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই ফলক উন্মোচনের সময় প্রধানমন্ত্রীর পাশে সাবেক যোগাযোগসচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াও উপস্থিত ছিলেন।
২০১২ সালে পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিল বিশ্বব্যাংক। সে দুর্নীতির অভিযোগে পদ ছাড়তে হয় আবুল হোসেন ও মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াকে। পরবর্তী সময়ে এই অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী ফলক উন্মোচনের সঙ্গে সঙ্গেই বাতাসে রঙিন আবির উড়িয়ে বর্ণিল পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়। এর মধ্য দিয়েই উদ্বোধন হয় বহুল আলোচিত পদ্মা সেতুর। উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর দুপুর ১২টা ৭ মিনিটে মূল সেতুতে ওঠে।
মাওয়া প্রান্তের সুধী সমাবেশে আমন্ত্রিত অতিথিরা অংশ নেন। জাতীয় সংসদের স্পিকার, কয়েকজন মন্ত্রী, রাজনীতিবিদ, সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা, কূটনীতিক, শিক্ষক, সাংবাদিক, লেখক, বুদ্ধিজীবীরা সমাবেশে যোগ দেন।
রঙিন ব্যানার-ফেস্টুনে বর্ণিল জনসভা
বাংলাবাজার ফেরিঘাট এলাকায় জনসভা ঘিরে গতকাল ভোর থেকেই দক্ষিণাঞ্চলের লাখো মানুষ জড়ো হতে থাকে। বর্ণিল সাজে রংবেরঙের ব্যানার, ফ্যাস্টুন ও পোশাকে সমাবেশে অংশ নেন বিভিন্ন জেলার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। সকাল থেকেই উৎসবের জনপদে পরিণত হয় মাদারীপুর ও শরীয়তপুরের প্রতিটি সড়ক। দলীয় নেতাকর্মীরা স্লোগানে স্লোগানে জড়ো হতে থাকেন। কয়েকটি জেলা থেকে আসা মানুষ মহাসড়কে বাস থেকে নেমে হেঁটে জনসভাস্থলে পৌঁছে। নদীপথে শতাধিক ছোট-বড় লঞ্চ ও কয়েক শ ট্রলারে বিভিন্ন জেলার মানুষ এসে যোগ দেয় জনসভায়।
চলাচলের জন্য সেতু উন্মুক্ত আজ
সভা শেষে দুপুর ২টার দিকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর বাধা উপেক্ষা করে অনেকে সেতু দেখতে ভিড় করে। তারা জাজিরা অংশে সেতুর এক জায়গায় উঠে পড়ে। অনেকে সেতুতে উঠে ছবি তুলতে থাকে। পরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা তাদের বুঝিয়ে নামিয়ে দেন। আজ রবিবার সকাল ৬টা থেকে সাধারণ জনগণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে পদ্মা সেতু।
ফলক উন্মোচন
মাওয়া প্রান্তে কর্মসূচি শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহর পদ্মা সেতুতে ওঠে। প্রথম যাত্রী হিসেবে গাড়ির টোল দেন তিনি। পরে তাঁর গাড়িবহর ফলক উন্মোচনের স্থানে যায়। সেখানে ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় আকাশে আবির ছড়ানো হয়।
ফলক উন্মোচন শেষে মন্ত্রিপরিষদসচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম মোনাজাত পরিচালনা করেন। এ সময় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মসিউর রহমান, সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, সাবেক সেতুসচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল উপস্থিত ছিলেন। পরে শরীয়তপুরের জাজিরা পয়েন্টের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী।
মনোমুগ্ধকর ফ্লাইপাস্ট
সেতুর জাজিরা প্রান্তের দিকে যাওয়ার সময় দুপুর ১২টা ১২ মিনিটের দিকে গাড়ি থামিয়ে নেমে যান প্রধানমন্ত্রী। এ সময় বিমানবাহিনীর ছয়টি হেলিকপ্টার তাঁকে অভিবাদন জানায়। পদ্মা সেতুতে দাঁড়িয়ে তিনি বিমানবাহিনীর মনোমুগ্ধকর ফ্লাইপাস্ট দেখেন। আইএসপিআর জানায়, বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান, পরিবহন বিমান, হেলিকপ্টারসহ মোট ২৮টি বিমান এই ফ্লাইপাস্টে অংশ নেয়। মিগ-২৯ ও এফ-৭ সিরিজের যুদ্ধবিমান, সি-১৩০জে ও এল-৪১০ পরিবহন বিমান এবং গ্রোব-১২০ টিপি প্রশিক্ষণ বিমান বিভিন্ন ধরনের ফরমেশন উড্ডয়নের পাশাপাশি বর্ণিল ধোঁয়া ছেড়ে অনুষ্ঠানস্থল অতিক্রম করে। জাতীয় পতাকা সামনে রেখে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিকৃতি, পদ্মা সেতু ও ‘জয় বাংলা’ ব্যানার নিয়ে এগিয়ে যায় পাঁচটি হেলিকপ্টার।
সেতুতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ছিলেন। সায়মা ওয়াজেদ পুতুল তাঁর ক্যামেরায় ছবি তোলেন। প্রধানমন্ত্রীও তাঁর মোবাইল ফোনে ছবি তুলেছেন। সেতুতে নেমে প্রধানমন্ত্রীর অবস্থান এবং ফলক উন্মোচনের পুরো কার্যক্রম সরাসরি সম্প্রচার করে বাংলাদেশ টেলিভিশন। দুপুর ১২টা ২৬ মিনিটের দিকে তিনি আবার গাড়িতে ওঠেন। সেখান থেকে তিনি জাজিরা প্রান্তে পৌঁছেন। জাজিরা প্রান্তে দুপুর ১২টা ৩৮ মিনিটের দিকে ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী।