বাচ্চা প্রসব হওয়ার দিন কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে আব্দুর রহিম নামের ৭৫ বছর বয়সী এক বৃদ্ধেরে সঙ্গে ১৫ বয়সী প্রতিবন্ধী কিশোরীকে জোরপূর্বক বিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এলাকার প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার মৌকরা ইউপি চান্দগড়া-খাটাচৌঁ গ্রামে। ওই বৃদ্ধ চান্দগড়া গ্রামের মৃত আনু মিয়ার ছেলে।
এ ঘটনায় গত ৯ জুন কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেন আব্দুর রহিম। আদালত মামলাটির তদন্তভার দেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে।
মঙ্গলবার এ বিষয়ে উপজেলার ভারপ্রাপ্ত সমাজসেবা অফিসার সাহিদুর রহমান বলেন, মামলাটির তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্তের আলোকে আদালতে প্রতিবেদন পাঠাব।
মামলার সূত্রে জানা যায়, আব্দুর রহিম আগে কৃষিকাজ করে সংসার চালাতেন। এখন আর বয়সের ভারে কাজ করতে পারেন না। গত ২০ জানুয়ারি ৪ মেয়ে ও ২ ছেলে রেখে তার স্ত্রী তৈয়ূবা বেগম মারা যান। অভাবের সংসার। বর্তমানে মানুষের দানে তার সংসার চলে।
গত ২১ মে শনিবার রাতে পার্শ্ববর্তী খাটাচৌঁ গ্রামের আব্দুল করিমের প্রতিবন্ধী কিশোরী মেয়ে আরবের নেছার (আরবি) একটি কন্যাশিশু জন্ম হয়। পরদিন দুপুর ১২টার দিকে খাটাচৌঁ গ্রামের কয়েকজন প্রভাবশালী আব্দুর রহিমকে তাদের বাড়ি থেকে টেনেহিঁচড়ে তুলে নিয়ে যায় আব্দুল করিমের বাড়িতে। তখনো আব্দুর রহিম কিছুই বুঝে উঠতে পারেননি।
এর কিছুক্ষণ পরেই প্রভাবশালী আব্দুল মমিন বলেন- এই বাচ্চার পিতা তুই। এই মেয়েকে এখন তোর বিয়ে করতে হবে। এজন্য তোকে ধরে আনা হয়েছে। পরে ওই গ্রামের প্রভাবশালী আব্দুর রব, আব্দুল হালিম, মেয়ের পিতা আব্দুল করিম, মোতালেব, রাজু, ওসমান, শাহিন ও সবুজসহ ২০-২৫ জন মিলে মৌকরা ইউপির কাজি মিলনের সহকারী কাজি মাঈন উদ্দিনকে দিয়ে এ বিয়ে পড়ান।
বৃদ্ধ আব্দুর রহিম এ সন্তানের পিতা নয় বলে আদালতে একটি মামলা করেন। তাহলে এ সন্তানের পিতা কে?
এ বিষয় ভুক্তভোগী আব্দুর রহিম বলেন, আল্লাহকে হাজির নাজির করে বলতেছি- এ মেয়ের সঙ্গে আমার কোনো অবৈধ সম্পর্ক ছিল না। তিনি এ সন্তানের পিতা নন। তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তাকে ফাঁসানো হয়েছে। এ সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষা করান। আমার সঙ্গে রিপোর্ট মিলে গেলে আমাকে ফাঁসি দেন। কোনো দুঃখ থাকবে না। আমার সংসারটা শেষ করিয়েন না। আমার ৬ সন্তান রয়েছে। এ ঘটনার সুস্থ বিচারের দাবি জানান তিনি।
এ বিষয় অভিযুক্ত প্রভাবশালী আব্দুল মমিন বলেন, আমরা তাকে কেন জোর করে বিয়ে পড়াতে যাব। সে ওই মেয়েকে ধর্ষণ করে। আর সে নিজেই রাজি ছিল, তাই তাকে বিয়ে করানো হয়েছে।
এ ঘটনায় মেয়ের বাবা আব্দুল করিম বলেন, সে আমার মেয়েকে ধর্ষণ করে। তাই এলাকার লোকজন নিয়ে তার সঙ্গে বিয়ে দিয়েছি।